পুরীতে গিয়ে ফেরি দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিলেন স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায়। ঠিক কী ঘটেছিল, কলকাতায় ফিরে জানিয়েছেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের দাদা এবং সিএবি-র বর্তমান সভাপতি।
স্নেহাশিস বলেন, “আমি প্রতি বছর পুরী যাই। এটা গত ৩১ বছর ধরে চলছে। জগন্নাথের মন্দিরে পুজো দিই।” স্নেহাশিসের সঙ্গে ছিলেন তাঁর স্ত্রী অর্পিতাও। সিএবি সভাপতি বলেন, “শনিবার আমরা হঠাৎ ঠিক করি সমুদ্রে যাব। কেন এরকম সিদ্ধান্ত নিলাম জানি না। একেবারে শেষ মুহূর্তে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম আমরা।”
কী হয়েছিল জানিয়ে স্নেহাশিস বলেন, “বিকাল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ আমরা একটা বোটে উঠি। আমাদের সঙ্গে আরও এক দম্পতি ছিলেন। বোটে আমাদের সঙ্গে লাইফগার্ড ছিল। হঠাৎ একটা বড় ঢেউ বোটের উপর আছড়ে পড়ে। বোটটা সঙ্গে সঙ্গে পুরো উল্টে যায়। আমরা সমুদ্রে পড়ে যাই। জলের তলায় বোটের নীচে চাপা পড়ে যাই। তখনও বুঝতে পারিনি কী হয়েছে। এই সময় আর একটা ঢেউ আসে। তার ফলে বোটটা আমাদের উপর থেকে সরে যায়। এটাই আমাদের বাঁচার সুযোগ করে দেয়। ততক্ষণে আরও কয়েক জন লাইফগার্ড চলে আসেন। তাঁরাই আমাদের উদ্ধার করেন। জগন্নাথকে ধন্যবাদ। মনে হচ্ছে আমাদের পুনর্জন্ম হল।”

উদ্ধার করা হচ্ছে স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায়ের স্ত্রী অর্পিতাকে। ছবি: পিটিআই।
দুর্ঘটনার জন্য ফেরি পরিষেবাকেই দায়ী করেছেন অর্পিতা। তিনি সংবাদমাধ্যমে বলেন, “সমুদ্র উত্তাল ছিল। ফেরিতে ১০ জন লোক বসতে পারে। কিন্তু টাকার লোভে ওরা তিন-চার জনের বেশি চাপাচ্ছিল না। আমাদের ফেরিই শেষ ফেরি ছিল। আগেই আমরা ওদের প্রশ্ন করেছিলাম, এই পরিস্থিতিতে সমুদ্র যাওয়া নিরাপদ হবে কি না। ওরা বলেছিল, কোনও সমস্যা হবে না।”
আরও পড়ুন:
অর্পিতা জানিয়েছেন, সমুদ্রে যাওয়ার পরেই ঢেউয়ের ধাক্কায় ফেরি উল্টে যায়। তিনি বলেন, “যদি লাইফগার্ডেরা না আসত তা হলে আমরা বাঁচতাম না। এখনও আতঙ্ক কাটছে না। আমার জীবনে এই ধরনের অভিজ্ঞতা হয়নি। ফেরিতে আরও বেশি লোক থাকলে এই দুর্ঘটনা হত না।”
পুরীর সমুদ্রে এই ধরনের জলক্রীড়া বন্ধ করার দাবি তুলেছেন অর্পিতা। তদন্তের দাবিও তুলেছেন স্নেহাশিসের স্ত্রী। তিনি বলেন, “পুরীর সমুদ্র খুব উত্তাল। এখানে এই ধরনের জলক্রীড়া বন্ধ করে দেওয়া উচিত। কলকাতায় গিয়ে পুলিশ সুপার ও মুখ্যমন্ত্রীকে আমি চিঠি লিখব। ওঁদের অনুরোধ করব, পুরীর সমুদ্রে জলক্রীড়া বন্ধ করে দেওয়ার জন্য।”