Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
Ashes 2023

অ্যাশেজে দ্বিতীয় টেস্ট জিততে অস্ট্রেলিয়ার দরকার ছয় উইকেট, ইংল্যান্ডের চাই ২৫৭ রান

অ্যাশেজের দ্বিতীয় টেস্টেও দাপট অস্ট্রেলিয়ার। দ্বিতীয় টেস্ট জিততে শেষ দিনে ছয় উইকেট দরকার অস্ট্রেলিয়ার। অন্য দিকে ইংল্যান্ডকে এখনও ২৫৭ রান করতে হবে।

Australian cricketers celebration

ইংল্যান্ডের জো রুটকে (ছবিতে নেই) আউট করে উল্লাস অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটারদের। ছবি: পিটিআই

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০২৩ ২৩:৪৬
Share: Save:

চতুর্থ দিনই টেস্ট জেতার পথে এক কদম বাড়িয়ে রাখল অস্ট্রেলিয়া। লর্ডসে দ্বিতীয় টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে মিচেল স্টার্ক ও প্যাট কামিংসের দাপটে সমস্যায় ইংল্যান্ড। চতুর্থ দিনের শেষে ইংল্যান্ডের রান ৪ উইকেটে ১১৪। অ্যাশেজে চতুর্থ টেস্ট জিততে অস্ট্রেলিয়ার দরকার আর ৬ উইকেট। অন্য দিকে ইংল্যান্ডের দরকার এখনও ২৫৭ রান। এই পরিস্থিতিতে জেতার সম্ভাবনা অনেক বেশি অস্ট্রেলিয়ার।

দ্বিতীয় ইনিংসে ইংল্যান্ডের সামনে ৩৭১ রানের লক্ষ্য রেখেছিল অস্ট্রেলিয়া। ব্যাট করতে নেমে স্টার্কের সামনে সমস্যায় পড়েন বেন স্টোকসেরা। তিন রানের মাথায় জ্যাক ক্রলি ওকে আউট করেন স্টার্ক। তিন রান করে ব্যাট-প্যাডের ফাঁক দিয়ে বোল্ড হন ওলি পোপ। বেন ডাকেটের সঙ্গে জো রুট জুটি বাঁধার চেষ্টা করলেও সফল হননি। ১৮ রানের মাথায় রুটকে আউট করে ইংল্যান্ডকে বড় ধাক্কা দেন কামিন্স। সেই ওভারেই হ্যারি ব্রুককে বোল্ড করেন অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক। ৪৫ রানে ৪ উইকেট পড়ে যায় ইংল্যান্ডের।

পঞ্চম উইকেটের জন্য ডাকেটের সঙ্গে জুটি বাঁধেন স্টোকস। ধীরে ধীরে দলের রানকে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন তাঁরা। এই টেস্টে ইংল্যান্ডের ভাগ্য নির্ভর করছে এই জুটির উপরেই। প্রথম ইনিংসের পরে দ্বিতীয় ইনিংসেও ভাল খেলছেন ডাকেট। অর্ধশতরান করেছেন তিনি। যদিও ৫০ রানের মাথায় ডাকেটের ক্যাচ ধরেন স্টার্ক। আম্পায়ারের মনে হয় ক্যাচ ধরার পরে বল মাটিতে লেগেছে। তাই নট আউট দেন তিনি। স্টোকসকেও মাঝে মধ্যে আক্রমণাত্মক শট খেলতে দেখা গিয়েছে। দিনের বাকি সময়ে ইংল্যান্ডের আর উইকেট পড়েনি। দিনের শেষে ডাকেট ৫০ ও স্টোকস ২৯ রান করে অপরাজিত রয়েছেন।

তৃতীয় দিনের শেষে অস্ট্রেলিয়ার রান ছিল ২ উইকেটে ১৩০। ক্রিজে ছিলেন উসমান খোয়াজা ও স্টিভ স্মিথ। চতুর্থ দিন সকাল থেকে ভাল খেলছিলেন খোয়াজা। তাঁকে সঙ্গ দিচ্ছিলেন স্মিথ। দু’জনে মিলে দলের রানকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন। তৃতীয় দিনের খেলা শেষ হওয়ার আগেই অর্ধশতরান করেছিলেন খোয়াজা। তাঁর কাছে সুযোগ ছিল আর একটি শতরান করার। কিন্তু ৭৭ রানের মাথায় স্টুয়ার্ট ব্রড আউট করেন তাঁকে। তার পরেই জশ টাংয়ের বলে আউট হয়ে যান স্মিথ। তিনি করেন ৩৪ রান। পাঁচ নম্বরে নেমে ট্রাভিস হেড আবার চেষ্ট করেন আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলার। কিন্তু দ্বিতীয় ইনিংসে রান পাননি তিনি। মাত্র সাত রান করে ফেরেন তিনি।

মধ্যাহ্নভোজের বিরতিতে অস্ট্রেলিয়া এগিয়ে ছিল ৩১৩ রানে। তখনও হাতে ৫ উইকেট ছিল কামিন্সদের। কিন্তু দ্বিতীয় সেশনে মাত্র রানে অস্ট্রেলিয়ার শেষ পাঁচ উইকেট পড়ে যায়। তার কৃতিত্ব মূলত ওলি রবিনসনের। ক্যামেরন গ্রিনকে ১৮ ও অ্যালেক্স ক্যারেকে ২১ রানের মাথায় আউট করেন তিনি। চতুর্থ দিনের শুরু থেকেই অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটারদের শরীর লক্ষ্য করে বাউন্সার করার পরিকল্পনা করেছিলেন ইংরেজ বোলাররা। সেই পরিকল্পনা কাজে লাগে। বাউন্সার সামলাতে না পেরে আউট হলেন অস্ট্রেলিয়ার একের পর এক ব্যাটার।

দ্বিতীয় ইনিংসে অস্ট্রেলিয়ার নীচের সারির ব্যাটাররা বিশেষ রান করতে পারেননি। প্যাট কামিংসকে আউট করেন স্টুয়ার্ট ব্রড। জশ হ্যাজ়লউডের উইকেট নেন বেন স্টোকস। শেষ পর্যন্ত ২৭৯ রানে শেষ হয়ে যায় অস্ট্রেলিয়ার দ্বিতীয় ইনিংস। ইংল্যান্ডের সামনে জয়ের লক্ষ্য দাঁড়ায় ৩৭১ রান।

অ্যাশেজ সিরিজ়ে ১-০ এগিয়ে রয়েছে অস্ট্রেলিয়া। প্রথম টেস্ট জিতেছে তারা। কিন্তু কেন এই সিরিজ়কে অ্যাশেজ বলা হয়? তার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে এক ইতিহাস। যা কিছুটা ব্যাঙ্গাত্মক। খানিকটা শোকেরও। ১৮৮২ সালে ওভালে আয়োজিত টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার কাছে প্রথম হেরেছিল ইংল্যান্ড। অস্ট্রেলিয়ার ফ্রেড স্পফোর্থের অনবদ্য বোলিংয়ের কাছে হারতে হয়েছিল ইংরেজদের। চতুর্থ ইনিংসে ৮৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করে জিততে পারেনি তারা। স্পফোর্থ ৪৪ রানে ৭ উইকেট নিয়েছিলেন। ০-১ ব্যবধানে সিরিজ় হেরে গিয়েছিল। পরের দিন ইংল্যান্ডের সংবাদ পত্র ‘দ্য স্পোর্টিং টাইমস্‌’ তাদের প্রতিবেদনে ক্রিকেট দলের তীব্র সমালোচনা করেছিল। লেখা হয়েছিল, ইংরেজ ক্রিকেটকে চিরস্মরণীয় করে রাখল ওভালের ২৯ আগস্ট, ১৮৮২ তারিখটি। গভীর দুঃখের সাথে বন্ধুরা তা মেনে নিয়েছে। ইংরেজ ক্রিকেটকে ভস্মীভূত করা হয়েছে এবং ছাইগুলো অস্ট্রেলিয়াকে দেওয়া হয়েছে। এর পরের বছর সিরিজ় পুনরুদ্ধার করতে অস্ট্রেলিয়ায় যায় ইংল্যান্ড। সংবাদমাধ্যমের ব্যঙ্গ মনে রেখে ইংল্যান্ডের অধিনায়ক আইভো ব্লাই বলেছিলেন, তাঁরা অ্যাশেজ পুনরুদ্ধার করতে অস্ট্রেলিয়ায় এসেছেন।

সেই সময় কয়েকজন অস্ট্রেলীয় মহিলা ব্লাইকে আগের সিরিজ়ে পরাজয় নিয়ে পাল্টা ব্যঙ্গ করে ছাই ভর্তি একটি পাত্র দিয়েছিলেন। যাতে ছিল উইকেটের উপরে থাকা বেলের ছাই। তার পর থেকে দু’দেশের টেস্ট সিরিজ় ‘অ্যাশেজ’ বলে পরিচিত হয়। ব্লাই অবশ্য ছাইয়ের সেই আধারটি ব্যক্তিগত উপহার হিসাবে নিজের কাছে রেখে দিয়েছিলেন। বিজয়ী দলকে ট্রফি হিসাবে তা দেওয়া হত না তখন। ব্লাইয়ের মৃত্যুর পর তাঁর স্ত্রী লর্ডসে এমসিসি জাদুঘরে সেই পাত্রটি দান করে দিয়েছিলেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Ashes 2023 england cricket australia cricket
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE