ওয়াসিম আক্রম অভিযোগ তুললেন নিজের প্রয়াত স্ত্রীর বিরুদ্ধেই। —ফাইল চিত্র
ক্রিকেট ছাড়ার পর মাদকাসক্ত হয়ে পড়েছিলেন ওয়াসিম আক্রম। নিজের বইয়ে সেটা জানিয়েছিলেন পাকিস্তানের প্রাক্তন অধিনায়ক। এ বার তিনি বললেন যে, তাঁকে জোর করে নেশামুক্তি কেন্দ্রে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছিল। অভিযোগ তুললেন নিজের প্রয়াত স্ত্রীর বিরুদ্ধেই।
ক্রিকেট জীবনে ভদ্র ক্রিকেটার বলেই পরিচিত ছিলেন আক্রম। কিন্তু ক্রিকেট ছাড়ার পর তাঁর মাদকসেবনের খবর অবাক করে করে দিয়েছিল সকলকে। সেই সময় তিনি জানিয়েছিলেন যে, তাঁর স্ত্রী হুমার সাহায্যে বেরিয়ে আসতে পেরেছিলেন। এ বার আক্রম বলেন, “আমি এক মাসের জন্য যেতে চেয়েছিলাম নেশামুক্তি কেন্দ্রে। কিন্তু আমাকে আড়াই মাসের জন্য রেখে দেওয়া হয়। আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে রাখা হয়েছিল আমাকে। সারা বিশ্বে কোথাও এটা হয় না, পাকিস্তানেই এটা সম্ভব। আমাকে কোনও সাহায্য করেনি সেটা। বাইরে এসে আমি খুব প্রতিবাদী হয়ে গিয়েছিলাম। ওই জঘন্য জায়গায় আমাকে ইচ্ছার বিরুদ্ধে রেখে দেওয়া হয়েছিল।”
আক্রমকে নেশামুক্তি কেন্দ্রে পাঠিয়েছিলেন তাঁর প্রয়াত স্ত্রী হুমা। আক্রম বলেছিলেন, “হুমা এক দিন আমাকে ধরে ফেলে। আমার ওয়ালেটে কোকেনের প্যাকেট দেখে বলে, ‘তোমার সাহায্য দরকার।’ আমি রাজি হয়ে যাই। কারণ, পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাচ্ছিল। নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছিলাম না। একটা থেকে দুটো, দুটো থেকে চারটে, আমার কোকেন নেওয়ার পরিমাণ বেড়েই যাচ্ছিল। রাতে ঘুমোতে পারতাম না। খেতে পারতাম না। ডায়াবিটিস বেড়ে যাচ্ছিল। সেটা খেয়ালই ছিল না। যে কারণে মাথাব্যথা এবং মুড পরিবর্তন হতে থাকে।”
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার পর মাদকাসক্ত হয়েছিলেন আক্রম। প্রায় ছ’বছর ধরে নিয়মিত মাদকসেবন করেছেন। আক্রম বলেছেন, “ক্রিকেট ছাড়ার পর কোনও কিছুতে নিজেকে ডুবিয়ে দিতে চেয়েছিলাম। দক্ষিণ এশিয়ার মানুষরা কোনও নেশা এবং দুর্নীতিতে ডুবে থাকতে ভালবাসে। এক রাতে তারা দশটা পার্টিতে যায়। আমারও সেই কাজ করতে গিয়ে অবস্থা খারাপ হয়ে গিয়েছিল।”
হুমার মৃত্যুর পর পাল্টে যান আক্রম। তিনি বলেন, “আমরা স্ত্রী মারা যায়। বুঝতে পারছিলাম খারাপ দিকে চলে যাচ্ছি। বেরোতে চাইছিলাম। দুটো বাচ্চা ছিল আমার। পশ্চিমে সন্তানের দায়িত্ব মা-বাবা ভাগাভাগি করে নেয়। সকালে ঘুম থেকে উঠে ছেলেকে স্কুলে নিয়ে যাওয়া। স্কুল থেকে নিয়ে আসা। জামাকাপড় পাল্টানো। আমাদের এখানে সেটা হয় না। সে সব মায়েরা করে। আমাদের কাজ শুধু টাকা উপার্জন। দু’বছরের জন্য আমি হারিয়ে গিয়েছিলাম। ছেলেদের জামাকাপড় কিনতে কোথায় যেতে হয় তা-ই জানতাম না। আমি জানতাম না ওরা কী খায়। কিন্তু হুমার মৃত্যুর পর আমাকে সব করতে হয়। স্কুলে সব মিটিংয়ে যেতে হত। ওদের বন্ধুর মা-বাবার সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে হয়। তবে সকলে খুব ভাল ছিল। পরে আমি করাচি চলে যাই। সেখানে আমার শ্বশুরবাড়ি। একটা ঘরে থাকতাম। তিন-চার বছর পর আমার বর্তমান স্ত্রীর সঙ্গে আলাপ হয়। বিয়ে হয়। ও দায়িত্ব নেয়। কিন্তু মাঝের দু’তিন বছর খুব কঠিন ছিল।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy