Advertisement
E-Paper

এশিয়া কাপের ফাইনালে ভারত, ৪১ রানে বাংলাদেশকে হারিয়ে রবির বিপক্ষের অপেক্ষায় সূর্যেরা, চিন্তা ব্যাটিং অর্ডার নিয়ে

অভিষেক শর্মা ও শুভমন গিল বাদে ভারতের টপ অর্ডারের কেউ রান পেলেন না। ব্যাটিং অর্ডার বদলে সমস্যা আরও বাড়ালেন দলের কোচ গৌতম গম্ভীর। যদিও শেষ পর্যন্ত জিতলেন সূর্যকুমার যাদবেরা।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ২৩:৩২
cricket

বাংলাদেশকে হারিয়ে উল্লাস ভারতীয় ক্রিকেটারদের। ছবি: পিটিআই।

অভিষেক শর্মা না থাকলে কী হত ভারতের? পর পর দু’ম্যাচে অভিষেকের ইনিংস ভারতকে জেতাল। অভিষেককে সঙ্গ দিলেন শুভমন গিল। কিন্তু বাকিরা? ভারতের মিডল ও লোয়ার অর্ডারের ব্যাটিং চিন্তা বাড়াবে গৌতম গম্ভীরের। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যেখানে ২০০-র বেশি রান হওয়া উচিত সেখানে ১৬৮ রানে থামতে হল ভারতকে। তাতে অবশ্য জিততে কোনও সমস্যা হল না। বোলারদের দাপটে বাংলাদেশকে ৪১ রানে হারিয়ে এশিয়া কাপের ফাইনালে উঠে গেলেন সূর্যকুমার যাদবেরা। শুক্রবার শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে নিয়মরক্ষার ম্যাচ খেলতে নামবে ভারত। বৃহস্পতিবারের পাকিস্তান-বাংলাদেশ ম্যাচ সেমিফাইনাল হয়ে দাঁড়াল। সেই ম্যাচ যারা জিতবে তারা রবিবার এশিয়া কাপের ফাইনালে ভারতের বিরুদ্ধে খেলবে।

অভিষেক নিজের ছন্দে রয়েছেন। পাকিস্তান ম্যাচে যেখানে শেষ করেছিলেন বাংলাদেশের বিরুদ্ধে সেখান থেকেই শুরু করলেন। তবে প্রথম তিন ওভার দেখে খেললেন ভারতীয় ওপেনারেরা। তাড়াহুড়ো করেননি। চতুর্থ ওভার থেকে হাত খুলতে শুরু করলেন তাঁরা। প্রথম তিন ওভারে রান ছিল ১৭। পরের তিন ওভারে উঠল ৫৫ রান। পাওয়ার প্লে-তে ৭২ রান করল ভারত। আরও একটি অর্ধশতরান করলেন অভিষেক। আগের ম্যাচে ২৩ বলে করেছিলেন। এই ম্যাচে করলেন ২৫ বলে।

পেসার, স্পিনার সকলের বিরুদ্ধেই হাত খুলে খেলেন অভিষেক। মাঠের চার দিকে বড় শট খেলতে পারেন। বাংলাদেশের বিরুদ্ধেও সেটাই দেখা যাচ্ছিল। শুভমন ভাল খেললেও পাকিস্তান ম্যাচের তুলনায় ধীরে খেলছিলেন। স্পিনারেরা বল করতে এসে খেলায় ফেরালেন বাংলাদেশকে। ২৯ রানের মাথায় শুভমনকে আউট করলেন রিশাদ হোসেন।

তিন নম্বরে তিলক বর্মা বা সূর্যকুমার যাদবের বদলে শিবম দুবেকে নামিয়ে দিলেন কোচ গম্ভীর। কেন নামালেন, কেউ জানেন না। কোনও ব্যাখ্যা নেই তার। এশিয়া কাপে ব্যাট করার খুব একটা সুযোগ পাননি শিবম। সেই কারণেই হয়তো তাঁকে নামিয়েছিলেন। সেটা করতে গিয়ে ব্যাটিং অর্ডার ঘেঁটে দিলেন গম্ভীর। শিবম রান পেলেন না। সূর্য, তিলকেরা নিজের স্বাভাবিক জায়গায় ব্যাট করতে পারলেন না। ফলে তাঁরাও তাড়়াতাড়ি ফিরলেন।

ভারতকে বড় ধাক্কা দিলেন রিশাদ। বল হাতে নয়, ফিল্ডিংয়ে। পয়েন্ট অঞ্চলে হালকা হাতে খেলে সিঙ্গল নেওয়ার চেষ্টা করেন সূর্যকুমার। তাঁর ডাকে সাড়া দিয়ে ক্রিজ় ছেড়ে অনেকটা এগিয়ে যান অভিষেক। কিন্তু পয়েন্টে দুর্দান্ত ফিল্ডিংয়ে বল ধরে নেন রিশাদ। সেটা দেখে সূর্য আর এগোননি। অভিষেক ক্রিজ়ে ফেরার চেষ্টা করেন। কিন্তু তত ক্ষণে বল ধরে উইকেটে লাগিয়ে দিয়েছেন বোলার। ৩৭ বলে ৭৫ রান করে রান আউট হন অভিষেক। ৬ চার ও ৫ ছক্কা মারেন তিনি।

যত ক্ষণ অভিষেক ছিলেন, দেখে মনে হচ্ছিল ভারত আরাম করে ২০০ রানের বেশি করবে। কিন্তু তিনি ফিরতেই ছবিটা বদলে গেল। পর পর আউট হলেন সূর্য ও তিলক। রান তোলার গতিও অনেকটা কমে গেল। শেষ দিকে হার্দিক ২৯ বলে ৩৮ রান না করলে ১৬০ রানও পার হত না। শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৬৮ রান করল ভারত।

ভারতীয় ম্যানেজমেন্টের সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন উঠতে বাধ্য। সঞ্জু স্যামসন ডাগ আউটে বসে থেকে গেলেন। সাত ব্যাটার নামলেও তাঁর জায়গা হল না। এশিয়া কাপের আগে ওপেন করতেন তিনি। এখন আট নম্বরে থাকছেন। ব্যাটিং অর্ডারে এই ধরনের বদল করে নিজেদেরই চাপে ফেলছে ভারত। ফাইনালে এই ভুল করলে কিন্তু সমস্যায় পড়তে হতে পারে সূর্যদের।

আগের ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ১৬৯ রান তাড়া করেছিল বাংলাদেশ। ভারতের বিরুদ্ধেও সেটাই লক্ষ্য ছিল। কিন্তু ভারত ও শ্রীলঙ্কা এক নয়। সেটা কয়েক ওভারেই বুঝে গেল বাংলাদেশ। লিটন দাস না থাকায় বাংলাদেশের ব্যাটিং অর্ডারে বড় দায়িত্ব ছিল সইফ হাসানের। তিনি শুরুটা মন্দ করেননি। তবে বাংলাদেশের বাকি ব্যাটারেরা দলকে সমস্যায় ফেললেন।

পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ছন্দে ছিলেন না জসপ্রীত বুমরাহ। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে পুরনো বুমরাহকে দেখা গেল। সেই গতির হেরফের। সেই বৈচিত্র। তানজিদ হাসান তামিমকে নিজের দ্বিতীয় বলেই আউট করলেন তিনি। তিন নম্বরে নামা পারভেজ হোসেন ইমন কিছুটা সঙ্গ দিয়েছিলেন সইফকে। দু’জনের মধ্যে ৪২ রানের জুটি হয়। সেই জুটি ভাঙার পর একাই লড়লেন সইফ।

সইফ ও ইমন ছাড়া বাংলাদেশের আর কোনও ব্যাটার দুই অঙ্কের রান করতে পারেনি। এই পরিসংখ্যান দেখেই বোঝা যাচ্ছে, ভারতীয় বোলারদের সামনে কতটাই অসহায় দেখিয়েছে বাংলাদেশের ব্যাটারদের। তৌহিদ হৃদয়, জাকের আলিরা এলেন আর গেলেন। সূর্যের দুরন্ত খ্রোয়ে রান আউট হলেন জাকের।

সইফ ৫১ বলে ৬৯ রান করলেন। তবে তাঁকে সাহায্য করলেন ভারতীয় ফিল্ডারেরা। তিন বার তাঁর ক্যাচ পড়ল। সব মিলিয়ে পাঁচটি ক্যাচ ছাড়লেন ভারতীয় ফিল্ডারেরা। চলতি এশিয়া কাপে মোট ১২টি ক্যাচ পড়ল ভারতের। প্রতিযোগিতার আট দলের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। তার মধ্যে বেশ কয়েকটি ক্যাচ বেশ সহজ ছিল। ফিল্ডিং কোচ টি দিলীপের চিন্তা এখনও কমল না। রবিবারের ফাইনালের আগে ব্যাটিং অর্ডারের পাশাপাশি ভারতের যদি আর একটি ক্ষেত্রে চিন্তা থাকে তা হল ফিল্ডিং।

ভারতীয় বোলারেরা দাপট দেখালেন। বুমরাহের পর দলের তিন স্পিনারের সামনে খেই হারাল বাংলাদেশের ব্যাটিং। কুলদীপ আবার উইকেটের মধ্যে ফিরলেন। ৪ ওভারে ১৮ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিলেন তিনি। বুমরাহ ও বরুণ চক্রবর্তী ২ করে উইকেট নিলেন। অক্ষর পটেল ও তিলক বর্মা ১ করে উইকেট নিলেন। পুরো ২০ ওভার খেলতে পারল না বাংলাদেশ। ১৯.৩ ওভারে ১২৭ রানে অল আউট হয়ে গেল তারা।

India Cricket Asia Cup 2025 India Vs Bangladesh
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy