Advertisement
E-Paper

ব্যর্থ অভিষেকের লড়াই, জেমাইমারা অস্ট্রেলিয়াকে হারানোর পরদিনই মেলবোর্নে হার সূর্যকুমারদের, সিরিজ়ে পিছিয়ে পড়ল ভারত

শুক্রবার নবী মুম্বইয়ে জেমাইমা রদ্রিগেসরা হারিয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়াকে। সেই লড়াই অনুপ্রাণিত করতে পারল না সূর্যকুমার যাদবদের। পরদিন সেই একই প্রতিপক্ষের হাতে টি-টোয়েন্টি ম্যাচে পর্যুদস্ত ভারত।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০২৫ ১৭:০৪
cricket

আউট হয়ে ফিরছেন হতাশ সূর্যকুমার যাদব। ছবি: পিটিআই।

বৃহস্পতিবার নবী মুম্বই দেখেছিল জেমাইমা রদ্রিগেস-হরমনপ্রীত কৌরের হাতে শক্তিশালী অস্ট্রেলিয়ার হার। আর শুক্রবার ১০,৭৫০ কিলোমিটার দূরে মেলবোর্ন দেখল অস্ট্রেলিয়ার হাতে শক্তিশালী ভারতের আত্মসমর্পণ। দু’দিনে দু’বার অস্ট্রেলিয়াকে হারানোর স্বপ্ন অধরাই থেকে গেল। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে শুক্রবারের ম্যাচ ভারতকে শিক্ষা দিয়ে গেল, এখনও অনেক কাজ বাকি।

ক্যানবেরায় টি-টোয়েন্টি সিরিজ়‌ের প্রথম ম্যাচ বৃষ্টিতে ভেস্তে যাওয়ার পর শুক্রবার মেলবোর্নে ভারতের কাছে পরীক্ষা ছিল নিজেদের প্রমাণ করার। সেই পরীক্ষায় ডাহা ফেল সূর্যকুমার যাদবেরা। আগে ব্যাট করে ভারতের তোলা ১২৫ রান ছয় উইকেট বাকি থাকতেই তুলে দিল অস্ট্রেলিয়া। জয় এল প্রায় আট ওভার বাকি থাকতে। সিরিজ়েও এগিয়ে গেল ১-০ ব্যবধানে। সিরিজ়‌ জিততে গেলে বাকি তিনটি ম্যাচেই ভারতকে জিততে হবে।

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ইদানীং ভারতকে ধরা হয় অপরাজেয় হিসাবে। আইসিসি র‌্যাঙ্কিংয়ে সবার উপরে থাকা দলকে কেউ হারাতে পারবে না, এমনটাই মনে করা হয়। অস্ট্রেলিয়া দেখিয়ে দিল, অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস থাকা ভাল নয়। বাস্তবের মাটিতে পা রেখে চলাই শ্রেয়। মেলবোর্নে ভারতের ব্যাটিং, বোলিং সব বিভাগই ব্যর্থ। ১২৫ রান নিয়ে এমনিতেই টি-টোয়েন্টিতে লড়াই করা কঠিন। তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে অস্ট্রেলিয়া ছ’টি উইকেট হারাল বটে। তবে শুরুতেই এমন আগ্রাসী খেলল, দেখে মনে হল অন্য পিচে ব্যাট করছে।

টসে এ দিনও হারলেন সূর্যকুমার। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে তৃতীয় ওভার থেকে ভারতের সেই যে উইকেট পতন শুরু হল, তা শেষ হল অলআউট হওয়ার পর। মাঝে এক বার অভিষেক শর্মা এবং হর্ষিত রানার জুটি বাদে বাকি সময়ে আসা-যাওয়া লেগেই ছিল। শুভমন গিলের (৫) ফেরা থেকে শুরু। এর পর থেকে প্রায় প্রতিটি ওভারেই নিয়ম করে উইকেট পড়েছে। সঞ্জু স্যামসন (২), সূর্যকুমার (১), তিলক বর্মা (০), অক্ষর পটেল (৭) কেউ টিকতে পারেননি। ভারতের ইনিংসে দু’অঙ্কের রানে পৌঁছেছেন মাত্র দু’জন। অভিষেক (৬৮) এবং হর্ষিত (৩৫)।

টি-টোয়েন্টি সিরিজ়‌ শুরুর আগে গৌতম গম্ভীর এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, তাঁর দলকে ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলার নির্দেশ দিয়েছেন। তার জন্য হারতেও ভয় পাবেন না। তাই বলে বিপদের সময়েও আনতাবড়ি শট চালিয়ে আউট হয়ে ফেরার অনুমতি দেওয়া হয়েছে? উত্তর নেই স্বাভাবিক ভাবেই। এ দিন ভারতের খেলা দেখে সেটাই মনে হল। কারণ ৩২ রানে ৪ উইকেট পড়ে যাওয়ার পরেও কাউকে কিছু ক্ষণ ধরে খেলার মানসিকতা নিয়ে নামতে দেখা গেল না। বিপদের সময় ঘর বাঁচিয়ে খেলার দরকার, এটা কি এই হার থেকে গম্ভীর বুঝবেন?

অভিষেক অবশ্য বাকিদের থেকে একেবারেই আলাদা ভঙ্গিতে খেললেন। তিনিও আগ্রাসী ভঙ্গিতে খেলেছেন। কিন্তু সেই খেলায় ঝুঁকি ছিল অনেক কম। ভুল শট খেলতে দেখাই যায়নি। মনে হল তিনি যেন আলাদা পিচে ব্যাট করছেন। দুর্ভাগ্যজনক ভাবে, ১৯তম ওভারে আউট হলেও অভিষেক মাত্র ৩৭ বল খেলার সুযোগ পেয়েছেন। বাকিরা এতটাই বল খেলেছেন যে অভিষেক সুযোগই পাননি। শুভমন যেমন ১০ বলে ৫ রান করেছেন। অক্ষর ৭ রান করতে ১২ বল নিয়েছেন। কুলদীপ ৬ বলে এক রানও করতে পারেননি। অভিষেক আরও কয়েকটি বল খেলার সুযোগ পেলে রান আরও বাড়তে পারত।

ষষ্ঠ উইকেটে হর্ষিত যদি এসে কিছুটা লড়াই না করতেন তা হলে ভারতের রান একশোও পেরোয় না। সেই জুটিতে ৫৬ রান উঠল। হর্ষিত ৩টি চার এবং ১টি ছয়ের সাহায্যে ৩৫ রান করলেন ঠিকই। কিন্তু খেললেন ৩৩টি বল। বোলিংয়ে এমনিই দু’-একটি ম্যাচ বাদে আহামরি কিছু করতে পারেন না। প্রিয় ক্রিকেটারকে দলে রাখতে কি তাঁকে এ বার ব্যাটিংটাও শিখিয়ে দিচ্ছেন গম্ভীর? বল হাতে হর্ষিত অবশ্য নিজের কাজটাই করেছেন। ২ ওভারে দিয়েছেন ২৭ রান। ওভারপ্রতি ১৩.৫০। অর্থাৎ ব্যাট হাতে যে রানটা করেছিলেন, বল হাতে প্রায় সেটাই খরচ করে এসেছেন।

২০২২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সেই সময়ের এক নম্বর বোলার যুজবেন্দ্র চহলকে দলেই নেয়নি ভারত। আর এখন দিনের পরদিন বসিয়ে রাখা হচ্ছে টি-টোয়েন্টির এক নম্বর বোলার অর্শদীপ সিংহকে। এই ম্যাচে এক দিক থেকে জসপ্রীত বুমরাহ, আর এক দিক থেকে অর্শদীপ অসি ব্যাটারদের চাপে রাখলে একটু হলেও লড়াই হত। কিন্তু হর্ষিত এতটাই খারাপ বল করলেন যে, অপর প্রান্তে বুমরাহও মার খেয়ে গেলেন। তবে ১৩তম ওভারে যে ইয়র্কারে ম্যাট শর্টকে আউট করলেন তা অনেক দিন মনে থাকবে।

ম্যাচ থেকে প্রাপ্তি তিলকের ক্যাচও। ট্রেভিস হেডের শট হাতে ধরার পর বাউন্ডারির বাইরে চলে যাওয়ার আগে বল আকাশে ছুড়ে দিয়েছিলেন। মাঠে ঢুকে আবার ক্যাচ ধরেন। বোলারেরা সে ভাবে ছাপ ফেলতেই পারলেন না। ২টি চার এবং ৪টি ছয়ের সাহায্যে ২৬ বলে ৪৬ রান করে ম্যাচ একাই নিয়ে গেলেন মিচেল মার্শ। ট্রেভিস করলেন ১৫ বলে ২৮।

India vs Australia 2025 Suryakumar Yadav Abhishek Sharma
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy