এক দিনের অধিনায়কত্বের শুরুটা যে এ রকম হবে তা ভাবেননি শুভমন গিল। অস্ট্রেলিয়ায় প্রথম ম্যাচেই ভেঙে পড়ল ভারতের ব্যাটিং। ২২৪ দিন পর দেশের জার্সিতে ফিরে রান পেলেন না বিরাট কোহলি ও রোহিত শর্মা। রান পেলেন না শুভমন নিজেও। চার বার বৃষ্টিতে থামল খেলা। ফলে ৫০ ওভারের খেলা কমে দাঁড়াল ২৬ ওভারে। প্রথমে ব্যাট করে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৩৬ রান করে ভারত। কিন্তু ডাকওয়ার্থ-লুইস নিয়মে লক্ষ্য কমে দাঁড়ায় ১৩১। বোলারেরাও খুব একটা দাগ কাটতে পারেননি। ফলে ২১.১ ওভারে রান তুলে নেয় অস্ট্রেলিয়া। ৭ উইকেটে জিতে সিরিজ়ে এগিয়ে যান মিচেল মার্শেরা।
রবিবার সকাল থেকেই পার্থের আবহাওয়া ছিল মেঘলা। ফলে টস ছিল গুরুত্বপূর্ণ। আরও এক বার টস হারলেন শুভমন। ফলে কঠিন পরিস্থিতিতে শুরুতে ব্যাট করতে হল ভারতকে। রোহিতকে দেখে বোঝা যাচ্ছিল, টাইমিংয়ে সমস্যা হচ্ছে। আত্মবিশ্বাসের অভাব দেখা যাচ্ছিল। ৮ রানের মাথায় জশ হেজ়লউডের বলে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন রোহিত। কোহলি খাতাও খুলতে পারেননি। নামার পর থেকে উশখুশ করছিলেন। বার বার অফ স্টাম্পের বাইরের বল খেলতে যাচ্ছিলেন। সেই পুরনো রোগ। তারই খেসারত দিতে হল। মিচেল স্টার্কের বলে একটি শট মারতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারলেন না। হাওয়ায় খেললেন। পয়েন্টে ক্যাচ ধরলেন কুপার কোনোলি। শূন্য রানে ফিরলেন কোহলি।
দুই উইকেট পড়ার পর এক বার খেলা বন্ধ হয়। খেলা শুরু হওয়ার পর আউট হন শুভমন। লেগ স্টাম্পের বাইরের বল খেলতে গিয়ে উইকেটরক্ষককে ক্যাচ দেন তিনি। একই অবস্থা শ্রেয়স আয়ারের। তিনিও লেগ স্টাম্পের বাইরের বলে ফেরেন। শুভমন ১০ ও শ্রেয়স ১১ রান করেন। চার উইকেট পড়ার পর আবার বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ হয়। এ বার অনেকটা সময় নষ্ট হয়। ফলে খেলা কমে দাঁড়ায় ৩২ ওভার। শেষ পর্যন্ত তা আরও কমে হয় ২৬ ওভার।
হঠাৎ করে ওভার কমে যাওয়ায় চাপে পড়ে যান ভারতীয় ব্যাটারেরা। রানের গতি বাড়ানোর চেষ্টা করেন অক্ষর পটেল ও লোকেশ রাহুল। তাঁদের ব্যাটে ১০০ পার হয় ভারতের। অক্ষর ৩১ ও রাহুল ৩৮ রান করেন। শেষ দিকে নীতীশ রেড্ডি ১৯ রান করে ভারতকে ১৩৬ রানে নিয়ে যান। কিন্তু ডাকওয়ার্থ-লুইস নিয়মে ভারতের রান হয় ১৩০। অস্ট্রেলিয়ার হেজ়লউড, মিচেল ওয়েন ও ম্যাথু কুহনেমান ২ করে উইকেট নেন। স্টার্ক ও নেথান এলিস নেন ১ করে উইকেট।
আরও পড়ুন:
১৩১ রানের লক্ষ্য খুব একটা বেশি ছিল না। অস্ট্রেলিয়া জানত, বেশি ঝুঁকি নেওয়ার দরকার নেই। দুই ওপেনার ট্রেভিস হেড ও অধিনায়ক মার্শের উপর দায়িত্ব ছিল। হেড শুরুটা ভাল করেন। প্রথম ওভারেই দু’টি চার মারেন। কিন্তু পরের ওভারের অর্শদীপ সিংহের বলে বড় শট মারতে গিয়ে আউট হন তিনি। তিন নম্বরে নেমে ম্যাথু শর্টও বেশি রান পাননি। তাঁকে আউট করেন অক্ষর।
হেড আউট হওয়ায় মার্শের দায়িত্ব বেড়ে যায়। অধিনায়কের ইনিংস খেললেন তিনি। পার্থ তাঁর ঘরের মাঠ। এই মাঠের বাউন্স তিনি ভাল ভাবে জানেন। তাই প্রতি ওভারে একটি করে বড় শট মারতে সমস্যা হচ্ছিল না মার্শের। জশ ফিলিপ তাঁকে সঙ্গ দেন। তিনিও মাঝে মাঝে বড় শট মারছিলেন। ৩৭ রান করে আউট হন ফিলিপ।
ভারতীয় বোলারেরাও হতাশ করলেন। অস্ট্রেলিয়ার বোলারদের দেখে শিখতে হবে তাদের। পরিবেশ খুব একটা বদলায়নি। কিন্তু অর্শদীপ, সিরাজ, হর্ষিতদের বিরুদ্ধে বড় শট খেলতে সমস্যা হল না অসি ব্যাটারদের। ধীরে ধীরে অস্ট্রেলিয়া যত লক্ষ্যের কাছে পৌঁছোচ্ছিল, চাপ বাড়ছিল ভারতের। শুভমন তাঁর হাতের সব তাস খেলে ফেলেন। প্রত্যেক বোলারের হাতে বল তুলে দেন। তার পরেও ম্যাচ জিততে পারেননি তিনি। মার্শ ৪৬ রানে অপরাজিত থেকে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন।