রোহিত শর্মা এবং বিরাট কোহলি। —ফাইল চিত্র।
ভারতীয় দলের ব্যাটারদের কেউই প্রায় বল করতে পারেন না। বিরাট কোহলি এক সময় বল করতেন, এখন দেখাই যায় না। রোহিত শর্মা আইপিএলে হ্যাটট্রিক করেছিলেন। কিন্তু এখন আর তিনি বল করেন না। শ্রেয়স আয়ার, সূর্যকুমার যাদব, শুভমন গিলদেরও বল করতে দেখা যায় না। আগে ভারতীয় দলে একাধিক ব্যাটার বলটাও করতে পারতেন। যা দলকে অনেক সময় সুবিধা করে দিত। কিন্তু এখন আর তাযহয় না। এই পরিবর্তনের পিছনে ক্রিকেটের নিয়ম দায়ী বলে মনে করেন রাহুল দ্রাবিড়।
সূর্যকুমার যাদব এক সময় বল করতেন। কিন্তু মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে বল করার সময় তাঁর বোলিং অ্যাকশন নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। তার পর থেকে আর কখনও বল করেননি তিনি। একই জিনিস ঘটে শিখর ধাওয়ানের সঙ্গেও। ঘরোয়া ক্রিকেটে অফ স্পিন বল করতে গিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েছিলেন। তিনি বল ছুড়ছেন বলে অভিযোগ ওঠে। তার পর থেকে আর বল করেননি ধাওয়ান।
এখনকার ব্যাটারদের বল না করার পিছনে দ্রাবিড় মনে করেন ক্রিকেটের নিয়মে পরিবর্তনই দায়ী। তিনি বলেন, “ক্রিকেটে নিয়ম বদলে গিয়েছে। আগে ৩০ গজের ভিতরে চার জন ফিল্ডার থাকত। এখন পাঁচ জনকে রাখতে হয়। এই নিয়মের ফলে অনিয়মিত বোলারেরা মিডল ওভারে বল করতে চায় না।”
ভারতের অন্যতম সেরা ব্যাটার সচিন তেন্ডুলকর। তিনি শুধু এক দিনের ক্রিকেটেই ১৫৪টি উইকেট নিয়েছিলেন। বাঁহাতি ব্যাটার সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় ডান হাতে মিডিয়াম পেস করতেন। ১০০টি এক দিনের উইকেট রয়েছে তাঁর। ভারতের ২০১১ সালে বিশ্বকাপ জয়ের অন্যতম কারিগর ছিলেন যুবরাজ সিংহ। ব্যাট হাতে যিনি শাসন করতেন বোলারদের। সেই বাঁহাতি ব্যাটারের এক দিনের ক্রিকেটে শিকার ১১১টি উইকেট। এঁরা সকলেই ভারতীয় দলে উপরের দিকে ব্যাট করতেন। বল করতে পারতেন বীরেন্দ্র সহবাগও। এক দিনের ক্রিকেটে ৯৬টি উইকেট আছে তাঁর। মহেন্দ্র সিংহ ধোনির সঙ্গে অবসর নেওয়া সুরেশ রায়না এক দিনের ক্রিকেটে ৩৬টি উইকেট নিয়েছিলেন। কিন্তু এখন ভারতীয় দলের ব্যাটারদের বল করতে দেখাই যায় না।
সচিন, সৌরভদের কথা উল্লেখ করে দ্রাবিড় বলেন, “ওরা যে সময় বল করা শুরু করেছিল, তখন চার জন ফিল্ডার থাকত ৩০ গজের মধ্যে। কিন্তু এখন পাঁচ জন থাকে। সেই কারণেই অনিয়মিত বোলারদের বল করতে দেখা যায় না। শুধু ভারত নয়, অনেক দলেই এখন এই ধরনের বোলার নেই।” যদিও ইংল্যান্ড দলে জো রুট, হ্যারি ব্রুকদের মতো ব্যাটারেরা বল করেন। অস্ট্রেলিয়া দলে স্টিভ স্মিথ, মার্নাস লাবুশেনদের বল করতে দেখা যায়। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে অধিনায়কেরা তাঁদের হাতে বল তুলে দিয়েছেন।
শুধু ৩০ গজের মধ্যে এক জন ফিল্ডার বেশি থাকা নয়, দ্রাবিড় নতুন বলের নিয়মের কথাও উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “দুই প্রান্ত থেকে নতুন বলে বল করা হয়। সেটাও একটা কারণ এই ধরনের অনিয়মিত বোলারদের হারিয়ে ফেলার। অনেকেই নেটে বল করে। চেষ্টা করে বল করতে। কিন্তু ম্যাচের মাঝে যদি বল করার সুযোগ না আসে, তা হলে আর কী লাভ।”
কোচ এবং অধিনায়কের রক্ষণাত্মক মানসিকতাই এর জন্য দায়ী বলে মনে করেন দ্রাবিড়। তিনি বলেন, “কোচ এবং অধিনায়কেরাও দু’প্রান্ত থেকে নতুন বল দলের ভাল বোলারদের হাতেই তুলে দেয়। ৩০ গজের মধ্যে পাঁচ জন ফিল্ডার থাকায় তারা সাহস পায় না। দলে এমন অলরাউন্ডার খেলানোর চেষ্টা করে, যারা ভাল বল করতে পারে। তবে আমরা এই বিষয়টা মাথায় রাখছি। সেটা নিয়ে কাজও করছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy