একটু বেশি বয়সেই ভারতীয় দলে সুযোগ পেয়েছিলেন। তার পর থেকে প্রতিটি মুহূর্তই কাজে লাগাচ্ছেন প্রতিকা রাওয়াল। স্মৃতি মন্ধানার সঙ্গে ওপেনিং জুটিতে একাধিক রেকর্ড তো ছিলই। এ বার বিশ্বকাপে প্রথম শতরানটিও করে ফেললেন, যার জেরে ভারত উঠে গিয়েছে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে। সেই প্রতিকা ম্যাচের পর সাফল্যের রহস্য ব্যাখ্যা করেছেন। মেয়ের থেকে আরও শতরান চেয়েছেন বাবা প্রদীপ।
বৃহস্পতিবার নিউ জ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে ১৩৪ বলে ১২২ রান করেন প্রতিকা। প্রথমে স্মৃতির সঙ্গে ২১২, পরে জেমাইমা রদ্রিগেসের সঙ্গে ৭৬ রানের জুটি গড়েন। ঠান্ডা মাথা, ধৈর্য এবং পরিস্থিতি বিবেচনা করে খেলার ক্ষমতা থাকার জন্যই সফল হয়েছেন বলে জানিয়েছেন প্রতিকা।
তিনি বলেন, “নিজের উপর বিশ্বাস রাখো, এই বিষয়টা নিয়ে গত কয়েক দিন ধরেই আলোচনা করেছি আমরা। যে কোনও ম্যাচ জিততে পারি এবং যে কোনও পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে পারি, এই বিশ্বাসটাও ছিল। আমাদের দলে ম্যাচ জেতানোর মতো ক্রিকেটারেরা রয়েছে। আজ সব কিছু কাজে লেগেছে, এটা ভেবেই খুশি। আশা করি পরের ম্যাচেও এ ভাবেই খেলতে পারব।”
প্রতিকার সংযোজন, “এই শতরানের জন্য প্রচুর পরিশ্রম করতে হয়েছে। কত যে অনুশীলন করেছি তা গুণে বলতে পারব না। কোচেদের সঙ্গে বহু বার কথা বলেছি। বাইরে থেকে দেখলে সব সহজ মনে হতে পারে। কিন্তু ক্রিজ়ে গেলে অনেক বাধার সামনে পড়তে হয়। যে ভাবে এগিয়ে যাচ্ছি তাতে আমি খুশি।”
তিন বছর বয়সে তাঁর হাতে ক্রিকেট ব্যাট তুলে দিয়েছিলেন বাবা। তখন থেকেই ক্রিকেট খেলা শুরু। মাঝে বাস্কেটবল খেলেছেন। আরও কিছু খেলাধুলোও চেষ্টা করে দেখেছেন। শেষমেশ থিতু হন ক্রিকেটে। বাবা ছোটবেলায় বোলার ছিলেন। পরে আম্পায়ারিংয়ের কোর্সে পাশ করেন। মেয়ের শতরান দেখার জন্য এতটাই মুখিয়ে ছিলেন যে আলাদা করে ব্যানার বানিয়ে মাঠে যেতেন। বৃহস্পতিবার প্রতিকা শতরান করার পর সেই ব্যানার দেখানোও হয় টিভিতে।
প্রতিকার বাবা প্রদীপ বলেছেন, “অনেক দিন ধরে এই শতরানের অপেক্ষা করছিলাম। তিন বছর বয়সে ওর হাতে ব্যাট তুলে দিই। আমি আম্পায়ারিং করার সময় ম্যাচ দেখতে যেত। আমি বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে খেলেছি। পরে আম্পায়ার হই। বরাবরই ইচ্ছা ছিল প্রথম সন্তানকে ক্রিকেটার বানাব।”
আরও পড়ুন:
প্রদীপ আরও বলেন, “আমি পরিবার থেকে সমর্থন পাইনি। নিজেও কিছু ভুল করেছি। তাই কখনও চাইনি মেয়েকেও সেটার মুখোমুখি হতে হোক। পরের ম্যাচগুলো আরও গুরুত্বপূর্ণ। অস্ট্রেলিয়াকে হারাতে পারে একমাত্র ভারতই। আমি মেয়েকে বলেছি, আরও শতরান চাই।”
জয়ের পিছনে প্রতিকা-সহ সকল সতীর্থদেরই কৃতিত্ব দিয়েছেন হরমনপ্রীত। বলেছেন, “যে ভাবে লড়াই করেছি তার জন্য সকলের প্রশংসা প্রাপ্য। সকলেই জানত এই ম্যাচের গুরুত্ব। গোটা দল চাঙ্গা হয়ে ছিল। যে ভাবে দায়িত্ব নিয়ে খেলেছে তার জন্য স্মৃতি আর প্রতিকার কৃতিত্ব প্রাপ্য। শুরুতেই ২০০ রান স্কোরবোর্ডে তুলে দিয়েছিল ওরা।”