আট বছর আগে, বিশ্বকাপ খেলে যখন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা করতে এসেছিল ভারতীয় দল, তখন হরমনপ্রীত কৌরদের হাতে ট্রফি ছিল না। বিশ্বকাপ ফাইনালে হারতে হয়েছিল ভারতকে। কিন্তু ছবিটা এ বার বদলে গিয়েছে। বিশ্বকাপ জয় করেই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে এসেছেন হরমনপ্রীতরা।
বুধবার নয়াদিল্লিতে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন হরমনপ্রীত এবং তাঁর পুরো দল। সেখানেই ভারত অধিনায়ক অতীতের ঘটনার কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘‘২০১৭ সালে আমরা ট্রফি ছাড়া এসেছিলাম আপনার সঙ্গে দেখা করতে। আশা করব, ভবিষ্যতে আরও সাফল্য পাব এবং আপনার সঙ্গে দেখা করার সুযোগও হবে।’’
সংবাদ সংস্থা পিটিআইয়ের খবর অনুযায়ী, ভারতীয় ক্রিকেটারদের মানসিকতার প্রশংসা করেছেন মোদী। যে ভাবে ভারতীয় দল যাবতীয় বাধা কাটিয়ে বাজিমাত করেছে, তা দেখে মুগ্ধ প্রধানমন্ত্রী। বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্যায়ে পরপর তিনটে ম্যাচ হারার পরে সমাজমাধ্যমে কটাক্ষের শিকার হয়েছিলেন ভারতীয় ক্রিকেটাররা। কিন্তু সেই কটাক্ষের প্রভাব নিজেদের খেলায় পড়তে দেননি হরমনপ্রীত, স্মৃতি মন্ধানা, জেমিমা রডরিগ্স, রিচা ঘোষরা। তাঁরা পাল্টা লড়াই করেছেন, ঘুরে দাঁড়িয়েছেন এবং শেষ পর্যন্ত ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন। মেয়েদের এই লড়াকু মানসিকতা মুগ্ধ করেছে প্রধানমন্ত্রীকে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নয়াদিল্লিতে এসে পৌঁছেছিল ভারতীয় দল। বুধবার তাঁরা দেখা করতে যান প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে। সেখানে স্মৃতি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য প্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে। বিশ্বকাপের সেরা ক্রিকেটার দীপ্তি শর্মা জানান, সেই ২০১৭ সাল থেকে তিনি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার জন্য মুখিয়ে আছেন। সেই সময় প্রধানমন্ত্রী তাঁদের বলেছিলেন, স্বপ্নকে সফল করতে হলে পরিশ্রম করে যেতে হবে। সে কথাই এ দিন মোদীকে মনে করিয়ে দেন দীপ্তি।
ক্রিকেটারদের মতোই ফুরফুরে মেজাজে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি হরমনপ্রীতকে মনে করিয়ে দেন যে, ভারত অধিনায়ক ম্যাচ শেষ হতেই কী ভাবে বলটা পকেটে ঢুকিয়ে ফেলেন। হরমন জানান, সৌভাগ্য যে শেষ ক্যাচটা তাঁর কাছেই এসেছিল। অমনজ্যোত কৌর ফাইনালে যে ভাবে তিন-চার বারের চেষ্টায় ক্যাচ ধরেছিলেন, তারও উল্লেখ করেন মোদী। মজা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘তুমি যখন ক্যাচটা নিতে যাচ্ছিলে, তখন বলটা দেখছিলে। ক্যাচটা নেওয়ার পরে নিশ্চয়ই বিশ্বকাপটা দেখেছ।’’
ফুরফুরে: চ্যাম্পিয়নদের সঙ্গে আড্ডা প্রধানমন্ত্রীর। ছবি: পিটিআই।
ভারতীয় পেসার ক্রান্তি গৌড় মোদীকে জানান যে, তাঁর ভাই প্রধানমন্ত্রীর বড় ভক্ত। যা শুনে ক্রান্তির ভাইকে আমন্ত্রণ জানান প্রধানমন্ত্রী। এর পরে ভারতীয় ক্রিকেটারদের কাছে মোদী আবেদন জানান যেন তাঁরা ‘ফিট ইন্ডিয়া’ বার্তা ছড়িয়ে দেন সর্বত্র। বিশেষ করে মেয়েদের মধ্যে। যাতে স্বাস্থ্য এবং ফিটনেসের উপরে নজর দেওয়া হয় ছোট থেকেই। একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী চান যেন নিজেদের স্কুলে গিয়ে বিশ্বজয়ীরা খুদেদের উদ্বুদ্ধ করেন খেলধুলোকে ভালবাসতে। বিশ্বজয়ী ক্রিকেটারেরা এ বার ফিরে যাবেন নিজের নিজের শহরে।
মঙ্গলবার সন্ধেয় দিল্লির হোটেলে পা রাখা মাত্রই ক্রিকেটার ও সাপোর্ট স্টাফকে গোলাপের পাপড়ি দিয়ে অভ্যর্থনা জানানো হয়। সঙ্গে ছিল ঢাক-ঢোল। সেই তালে নাচেন ক্রিকেটাররা।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)