অধিনায়কের ইনিংস খেললেন লরা উলভার্ট। একার কাঁধে দলকে টানলেন তিনি। গুয়াহাটিতে মহিলাদের এক দিনের বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ১৪৩ বলে ১৬৯ রানের ইনিংস খেলেছেন উলভার্ট। নজির গড়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক।
ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে শুরু থেকেই ভাল দেখাচ্ছিল উলভার্টকে। অপর ওপেনার তাজ়মিন ব্রিটসের সঙ্গে শতরানের জুটি গড়েন তিনি। কিন্তু মাঝের ওভারে এক সময় পর পর উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা। দলের রান তোলার গতি ৫-এর আশপাশে ছিল। দেখে মনে হচ্ছিল, ২৫০ রান করতেও সমস্যা হবে। কিন্তু উলভার্ট খেলার ছবিটা বদলে দিলেন। শুধু শতরান করলেন না, শেষ দিকে ঝড় তুললেন এই ডান হাতি ব্যাটার।
একটি পরিসংখ্যানেই বিষয়টি স্পষ্ট। ১১৫ বলে ১০১ রান ছিল উলভার্টের। তিনি শেষ করেন ১৪৩ বলে ১৬৯ রানে। অর্থাৎ, শেষ ২৮ বলে ৬৮ রান করেন তিনি। ইনিংসে মোট ২০টি চার ও চারটি ছক্কা মারেন উলভার্ট। অর্থাৎ, তাঁর ১৬৯ রানের মধ্যে ১০৪ রান এসেছে বাউন্ডারিতে। তার একটা বড় অংশ শতরানের পর।
উলভার্টের ব্যাটে ভর করে ৭ উইকেটে ৩১৯ রান করে দক্ষিণ আফ্রিকা। মহিলাদের বিশ্বকাপে এটি তাদের সর্বোচ্চ রান। বিশ্বকাপের নক আউটে এটি তৃতীয় সর্বোচ্চ রান। ২০১৭ সালের বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে অপরাজিত ১৭১ রান করেছিলেন ভারতের হরমনপ্রীত কৌর। সেটিই রেকর্ড। ২০২২ সালের বিশ্বকাপের ফাইনালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ১৭০ রান করেছিলেন অ্যালিসা হিলি। তিন নম্বরে উলভার্ট। অধিনায়ক হিসাবে বিশ্বকাপে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান করলেন উলভার্ট। সর্বোচ্চ রান করেছেন নিউ জ়িল্যান্ডের বেলিন্ডা ক্লার্ক। ১৯৯৭ সালের বিশ্বকাপে ডেনমার্কের বিরুদ্ধে রেকর্ড করেছিলেন তিনি।
আরও পড়ুন:
তবে একটি রেকর্ড গড়েছেন উলভার্ট। অধিনায়ক হিসাবে বিশ্বকাপের নক আউটে সর্বাধিক রান করেছেন তিনি। হরমনপ্রীত বা হিলি অধিনায়ক ছিলেন না। ক্লার্ক আবার বিশ্বকাপের নক আউটে রান করেননি।
ইংল্যান্ডের লরেন বেলের বলে ৪৮তম ওভারের শেষ বলে আউট হয়ে যখন উলভার্ট ফিরছেন, তখন দেখা যায়, ইংল্যান্ডের ক্রিকেটারেরা এসে হাত মেলাচ্ছেন তাঁর সঙ্গে। প্রতিপক্ষ হলেও উলভার্টের ইনিংসের প্রশংসা করেন তাঁরা। দক্ষিণ আফ্রিকার গোটা সাজঘর উঠে দাঁড়িয়ে হাততালি দেয়। এই ইংল্যান্ডের কাছেই বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে ১০ উইকেটে হেরেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। তাদের হারিয়ে যদি দক্ষিণ আফ্রিকা ফাইনালে ওঠে তা হলে তার পুরো কৃতিত্ব উলভার্টের। বিশ্বকাপে নিজের প্রথম শতরান করলেন তিনি। আর সেটি এল তাঁদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে। এর থেকে আনন্দের এক অধিনায়কের কাছে আর কী হতে পারে।