Advertisement
E-Paper

চার-ছক্কার ঝলকানি নয়, বদলে যাওয়া কোহলির এক-দুই-তিন জেতাচ্ছে ভারতকে! দাঁড়িয়ে দেখছেন স্মিথ, রিজ়ওয়ানেরা

৩৬ বছর বয়সের বিরাট কোহলি ইনিংস গড়ছেন মূলত খুচরো রানের উপর নির্ভর করে। চার-ছয় অনেক ছেঁটে ফেলেছেন নিজের ব্যাটিং থেকে। ফিটনেসে ভর করে বদলে ফেলেছেন রণকৌশল।

picture of virat kohli

বিরাট কোহলি। ছবি: গেটি ইমেজ।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০২৫ ০৮:৩০
Share
Save

দৌড়, দৌড় আর দৌড়!

বিপক্ষ দলকে স্রেফ দৌড়ে হারিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন তিনি। চার, ছক্কার সাদা বলের ক্রিকেটে ব্যতিক্রমী পথ দেখাচ্ছেন ৩৬-এর বিরাট কোহলি। বয়স এবং ফিটনেস বাড়ছে সমানুপাতে। কী করে সম্ভব? সংযম, অভ্যাস এবং অধ্যবসায়।

ফুটবল বিশ্বে ফিটনেসের অপর নাম ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। তাঁর মেদহীন ৪০ বছরের শরীরের কাছে এখনও ২২-২৩ বছরের ফুটবলারেরা লজ্জা পাবেন। বেশির ভাগ তরুণ ফুটবলার দৌড়ে হেরে যাবেন তাঁর কাছে। ক্রিকেটবিশ্বে তেমনই কোহলি। উইকেটের মাঝে দৌড়ে তাঁর সঙ্গে পাল্লা দেওয়া কঠিন। বেশ কঠিন। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ৮৪ রান করেছিলেন কোহলি। তার মধ্যে ৬৪ রান দৌড়ে (সিঙ্গলস) নিয়েছিলেন। ম্যাচের শেষে যখন সেরার পুরস্কার নিতে এসেছিলেন, তখন বোঝা যায়নি দীর্ঘ ক্ষণ ধরে নিরন্তর স্ট্রাইক রোটেট করে অস্ট্রেলিয়ার বোলারদের কালঘাম ছুটিয়ে দিয়েছেন। এটাই বদলে যাওয়া কোহলি।

‘‘আমি তো মারছিলামই। তুই আবার কেন...।’’ মঙ্গলবার অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনালে কোহলি আউট হতে তাঁকে খানিকটা ধমকই দিয়েছিলেন লোকেশ রাহুল। সঠিক কারণেই। ঝুঁকি না নিলে এক দিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৫২তম শতরানটা করে ফেলতে পারতেন কোহলি। ক্রিজ়ের উল্টো দিকে থাকা রাহুল ভাল করেই জানতেন ওই শট এখনকার কোহলির স্বভাববিরুদ্ধ। কারণ, নিজেকে বদলে ফেলেছেন তিনি। ব্যতিক্রমী ক্রিকেট দর্শনে তিনি সমর্থকদের সাময়িক বিনোদন দিতে চান না, জয়ের আনন্দে ভাসাতে চান। তাঁর সাম্প্রতিক ইনিংসগুলিই প্রমাণ। কোহলি চার-ছক্কা মারতে পারেন না, এ কথা কেউ বিশ্বাস করবে না। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এখনও পর্যন্ত কোহলির ব্যাট থেকে এসেছে ২,৭২১টি চার এবং ৩০৬টি ছয়। কোহলি চাইলেই পারেন। আসলে চাইছেন না! ৩৬ বছরের কোহলি ফিটনেস এবং অভিজ্ঞতার উপর নির্ভর করে খেলছেন। খুচরো রানে ইনিংস সাজাচ্ছেন। যতটা সম্ভব ঝুঁকি ছেঁটে ব্যাট করার চেষ্টা করছেন। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে রণকৌশল বদলে ফেলেছেন। নিজেকে বদলে ফেলা কোহলিকে আগের বেশি সংযত এবং বিপজ্জনক দেখাচ্ছে। ফিটনেসের শীর্ষে না থাকলে এই বয়সের একজন ব্যাটারের পক্ষে এ ভাবে খেলা সম্ভব নয়।

খুচরো রান নেওয়ার সুযোগ হাতছাড়া করেন না বিরাট কোহলি।

খুচরো রান নেওয়ার সুযোগ হাতছাড়া করেন না বিরাট কোহলি। ছবি: এএফপি।

নিন্দকেরা বলতে পারেন, কোহলি সেরা ফর্মে নেই। আত্মবিশ্বাসের অভাব। তাই বড় শট ছেঁটে ইনিংস গড়ছেন। সাবধানে খেলছেন। সত্যিই তো! গত সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজ় থেকে চেনা কোহলিকে দেখা যাচ্ছিল না। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে পার‌্থে প্রথম টেস্টে অপরাজিত ১০০ ছাড়া বলার মতো ইনিংস নেই। দেশে ফিরে অহমদাবাদে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে এক দিনের ম্যাচে ৫২ রান করতে নিয়েছিলেন ৫৫ বল। ৭টি চার, ১টি ছয় মারেন। সেই ইনিংসেই ছিল ফর্মে ফেরার ইঙ্গিত। এখন নির্দ্বিধায় বলে দেওয়া যায়, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে কোহলি ফর্মে আছেন। অভিজ্ঞ, পরিণত কোহলি শুধু নতুন কৌশলে নিজেকে প্রতিপক্ষের নজর থেকে লুকিয়ে রাখছেন ২২ গজে।

গ্রুপ পর্বে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অপরাজিত ১০০ রানের পর সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ৮৪ রানের ইনিংস। ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ বা অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে নকআউট ম্যাচে একজন ক্রিকেটারের উপর কতটা চাপ থাকে, তা সাধারণ ক্রিকেটপ্রেমীদের পক্ষে আন্দাজ করা অসম্ভব। ১৪০ কোটি মানুষের প্রত্যাশার চাপ নিয়ে দু’টি ম্যাচে এমন ইনিংস ফর্মে না থাকলে খেলা কঠিন। ২২ গজে টিকে থাকার আত্মবিশ্বাস না থাকলে দীর্ঘ সময় ধরে ঝুঁকিহীন ব্যাটিং করা যায় না। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ১১১ বলের ইনিংসে ৭টি চার মেরেছিলেন। ছক্কা একটিও ছিল না। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ৯৮ বলের ইনিংসে মাত্র ৫টি চার মেরেছেন। ছক্কা মারেননি একটিও। কোহলি বাকি রান করছেন ২২ গজে দৌড়ে। পাকিস্তান ম্যাচে খুচরো রান ৭২। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ৬৪। তাঁর ইনিংসের সিংহভাগ রানই আসছে দৌড়ে। পরিশ্রম করে।

ফিল্ডারের দিকে বল ঠেলেও বিরাট কোহলি দ্রুত পৌঁছে যেতে পারেন ২২ গজের অপর প্রান্তে।

ফিল্ডারের দিকে বল ঠেলেও বিরাট কোহলি দ্রুত পৌঁছে যেতে পারেন ২২ গজের অপর প্রান্তে। ছবি: এএফপি।

এক, দুই, তিন রান নিচ্ছেন। নতুন ভাবে ইনিংস সাজাচ্ছেন কোহলি। প্রায় ৫০ ওভার ফিল্ডিং করার পর ব্যাট হাতে দৌড়চ্ছেন। কখনও বা ব্যাট করার পর ৫০ ওভার ফিল্ডিং করছেন। ক্রিজ়ে থাকার চেষ্টা করছেন যতটা বেশি সময় সম্ভব। দলকে নিরাপদ জায়গায় পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। ঠান্ডা মাথায় নিজের এবং দলের ইনিংসকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। নিঃশব্দে বড় রানের ইনিংস খেলছেন। বিন্দু বিন্দুতে সিন্ধু করছেন। কোহলির ব্যাটিংয়ে পরিবর্তন সাদা চোখেই বোঝা যাচ্ছে।

এক দিনের ক্রিকেটে এখনও পর্যন্ত কোহলির করা ১৪,১৮০ রানের মধ্যে ৫,৭৮০ রানই খুচরো। বিশ্বের আর কোনও ক্রিকেটারের এত খুচরো রান নেওয়ার নজির নেই। ২০০০ সাল থেকে যে পরিসংখ্যান রয়েছে, তাতে সিঙ্গলস নেওয়ায় কোহলিই শীর্ষে। দ্বিতীয় স্থানে শ্রীলঙ্কার প্রাক্তন অধিনায়ক কুমার সাঙ্গাকারা। তাঁর সিঙ্গলস রান ৫,৫০৩। তৃতীয় শ্রীলঙ্কার আর এক প্রাক্তন অধিনায়ক মাহেলা জয়বর্ধনে। এক দিনের ক্রিকেটে তাঁর খুচরো রান ৪,৭৮৯।

কোহলির এই পরিশ্রমী ব্যাটিংয়ের নেপথ্যে তাঁর ফিটনেস। অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জেতা ‘গুবলু’ বিরাটের ছবি দেখলে এখন নিজেই হেসে ফেলেন কোহলি। পরিণত ব্যাটার ফিটনেসের ব্যাপারে আপসহীন। প্রিয় বাটার চিকেন, ছোলে-ভাটুরে মুখে দেননি এক দশকের বেশি। নির্দিষ্ট খাবার ছাড়া কিছুই পাতে নেন না। খাদ্যাভ্যাস নিয়ে কোহলি এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘‘তেল এবং নুনহীন একই খাবার দিনে তিন বেলা টানা ছ’মাস খেতে পারি। মশলাও থাকে না। খাবারের স্বাদ আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ নয়। শরীরের ক্যালোরির চাহিদা পূরণ করাই লক্ষ্য। খুব বেশি হলে সামান্য অলিভ অয়েলে স্যতে করা থাকে।’’ ফিটনেসের স্বার্থে স্বেচ্ছায় ভিগান (যাঁরা মাংস এবং প্রাণীজ খাবার খান না) হয়েছেন। খান না দুধ বা দুগ্ধজাতীয় কোনও খাবারও। ২০১২ সালের পর থেকে ট্রেনিংহীন একটিও দিন কাটাননি। যত ব্যস্ততাই থাকুক, জিমে গিয়েছেন। কোহলি যে ধরনের ওয়েট ট্রেনিং করেন, তা সাধারণত ক্রিকেটারেরা করেন না। অ্যাথলিট, ফুটবলারেরা করেন। পায়ের শক্তিবৃদ্ধির জন্যও বিশেষ ধরনের ট্রেনিং করেন। কাঁধের শক্তি বজায় রাখতেও সমান যত্নশীল কোহলি। দমবৃদ্ধির জন্যও আলাদা ট্রেনিং করেন। তাঁর ভাতের চাল নির্দিষ্ট, কার্বোহাইড্রেটহীন। এমনকি, খাওয়ার জলও আসে একটি নির্দিষ্ট জায়গা থেকে! ক্রিকেটের প্রতি চূড়ান্ত ভালবাসা, আবেগ, দায়বদ্ধতা না থাকলে হাজার কোটির মালিক হয়েও এমন সংযম-শৃঙ্খলে নিজেকে বেঁধে রাখা যায় না।

ফিটনেস ফ্রিক বিরাট কোহলি ট্রেনিংয়ে কখনও সমঝোতা করেন না।

ফিটনেস ফ্রিক বিরাট কোহলি ট্রেনিংয়ে কখনও সমঝোতা করেন না। ছবি: এএফপি।

কোহলি পেরেছেন। তিনিই সম্ভবত বিশ্বের সবচেয়ে ফিট ক্রিকেটার।ভারতীয় দলের তো বটেই। তাঁর অভিধানে ‘ক্লান্তি’ শব্দের অস্তিত্ব নেই। অসম্ভব কিছু নেই। মাঠ, নেট, জিম— সর্বত্র তিনি ক্লান্তিহীন, প্রাণশক্তিতে ভরপুর। নিজেকে উদাহরণ তৈরি করেছেন। সতীর্থেরাও তাঁকে অনুসরণ করতে বাধ্য হন। কারণ, কোহলি অননুকরণীয়। খুচরো রান নেওয়ার ক্ষেত্রেও। প্রতিপক্ষ দলের ফিল্ডারের দিকে বল ঠেলে দিয়ে অনায়াসে চলে যেতে পারেন ২২ গজের অন্য প্রান্তে। তাঁর চোখের ইশারা বুঝে নিতে হয় সঙ্গীকে। এককে দুই বা দুইকে তিনে পরিণত করতে কোহলির জুড়ি মেলা ভার। পলকে তাঁর এবং দলের ইনিংসে যোগ হয়ে যায় রান।

অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ম্যাচ জেতানো ইনিংস খেলার পর কোহলি বলেছেন, ‘‘মরিয়া হয়ে রান তাড়া করার চেষ্টা করিনি। মাঠের এ দিক-ও দিক খুচরো রান নিতে পেরে ভাল লাগছিল। যখন আপনি ফিল্ডিংয়ের ফাঁক খুঁজে খুচরো রান নিতে পারবেন, তখন বুঝবেন ভাল খেলছেন। পাকিস্তান এবং অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে আমার কাছে সবচেয়ে তৃপ্তির জায়গা এটাই।” তিনি আরও বলেছেন, ‘‘সেমিফাইনাল বা ফাইনালে চাপ থাকেই। সময় নিয়ে খেললে এবং হাতে উইকেট থাকলে বিপক্ষ দল চাপে পড়তে বাধ্য। তখন ম্যাচটা সহজ হয়ে যায়। ম্যাচের উপর এই নিয়ন্ত্রণ রাখাটা খুব দরকার। তাই সব সময় মাথায় রাখি, কত রান দরকার এবং কত ওভার বাকি। যদি হাতে ছ’-সাতটা উইকেট থাকে এবং রানের থেকে ২৫-৩০ বল কম থাকে, তা হলেও চাপে পড়ি না।”

কোহলির ইনিংস মুগ্ধ করেছে অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক স্টিভ স্মিথকেও। সেমিফাইনালের পর তিনি বলেছেন, ‘‘কোনও সংশয় নেই, রান তাড়া করার ক্ষেত্রে কোহলিই বিশ্বসেরা। আমাদের বিরুদ্ধেই অনেক বার সফল ভাবে রান তাড়া করেছে। খেলার গতি দারুণ ভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। নিজের শক্তি অনুযায়ী খেলে। পরিস্থিতি বুঝে খেলে। সেমিফাইনালের ইনিংসটা সত্যিই অসাধারণ।’’ উল্লেখ্য, অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সফল রান তাড়া করার ক্ষেত্রে ১৫টি ইনিংসে কোহলি করেছেন ৯০৬ রান।

পাকিস্তান ম্যাচের পর কোহলি বলেছিলেন, ‘‘এখন আমি ৩৬। এক সপ্তাহ বিশ্রাম পেয়ে ভালই হয়েছে। এই ম্যাচে প্রচুর পরিশ্রম হয়েছে। সুবিধাই হবে।’’ কথাগুলি বলার সময় কোহলিকে একটুও ক্লান্ত দেখায়নি। ফুরফুরে মেজাজে ছিলেন। বয়স বাড়ছে মেনে নিয়েও দৌড়চ্ছেন কোহলি। ভরসা ফিটনেস। কোহলি হাতে ধরে বদলে দিচ্ছেন এক দিনের ক্রিকেটে ব্যাটিংয়ের সংজ্ঞা। ম্যাচ জেতার জন্য চার-ছয়ের থেকে বেশি প্রয়োজন স্কোর বোর্ডকে সচল রাখা। নিয়মিত রান তুলে যাওয়া। যতটা সম্ভব কম ডট বল (যে বলে কোনও রান হয় না) খেলা। কোহলি সেটাই করছেন। বোলারদের মাথায় না চড়লেও স্বস্তিতে থাকতে দিচ্ছেন না। প্রতিপক্ষ অধিনায়ক বুঝতে পারছেন না, মাঠের কোথায় কোথায় ফিল্ডার রাখলে কোহলির খুচরো রান আটকানো যাবে। বোলারেরা বুঝতে পারছেন না তাঁকে আটকে রাখার সঠিক লাইন-লেংথ। কোহলি মাঠের প্রতিটি কোণে শট মারতে পারেন। ফিল্ডিংয়ের ফাঁক খুঁজে পাওয়া তাঁর কাছে কঠিন নয়।

বিরাট কোহলির ফিটনেসের ঝলক দেখা যায় ফিল্ডিংয়ের সময়ও।

বিরাট কোহলির ফিটনেসের ঝলক দেখা যায় ফিল্ডিংয়ের সময়ও। ছবি: এএফপি।

কোহলি জানেন, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে টিকে থাকতে হলে প্রতিনিয়ত নিজের ব্যাটিং কৌশল বদলাতে হবে। প্রতিপক্ষের কাছে ধরা পড়ে গেলে চলবে না। কোহলিও নিজেকে ভাঙছেন। নতুন ভাবে গড়ছেন। নতুন সংস্করণে চার-ছক্কার ব্যাটিং ছেড়ে খুচরো রান নেওয়ার দিকে ঝুঁকেছেন। সুযোগ দিতে চাইছেন না প্রতিপক্ষকে। কোহলির ক্রিকেটজীবন এখন ‘পায়ে পায়ে’ এগোচ্ছে। শরীরের উপর অতিরিক্ত চাপ দিচ্ছেন না। মানসিক চাপও নিচ্ছেন না। উপভোগ করছেন মাঠের প্রতিটি মুহূর্ত। সতীর্থদের সাফল্যে শিশুর মতো উচ্ছ্বসিত হয়ে পড়ছেন। অথচ নিজের মাইলফলকে তুলনায় অনেক সংযত।

ক্রিকেট মাঠের সাফল্যকে ধারাবাহিক করতে হলে সাধনা প্রয়োজন। কোহলি নিঃসন্দেহে ক্রিকেট-সাধক। প্রায় সাড়ে পাঁচশো আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলে ফেলা ব্যাটার নিজের ইনিংস সাজান দলের স্বার্থকে গুরুত্ব দিয়ে। ফিটনেস, ক্রিকেটীয় দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতাকে হাতিয়ার করে নিরাপদ ক্রিকেট খেলছেন। খুচরো রানেই দলকে পৌঁছে দিচ্ছেন জয়ের কাছে। দেশের জন্য দৌড়চ্ছেন। তাঁর দৌড় থামাতে পারছে না কোনও দল।এক দিনের ক্রিকেটে বদলে যাওয়া এই কোহলি আরও বিপজ্জনক। ব্লেডের মতো কাটছেন। কাটার সময় বোঝা যাচ্ছে না। নিঃশব্দে রক্তাক্ত হচ্ছে প্রতিপক্ষের জয়ের স্বপ্ন। বোঝার আগেই বদলে যাচ্ছে খেলার গতিপ্রকৃতি। তত ক্ষণে সব কিছু চলে যাচ্ছে কোহলির নিয়ন্ত্রণে। এক-দুই-তিন করে রানের বিরাট স্থাপত্য গড়ছেন। স্মিথ, মহম্মদ রিজ়ওয়ানদের দেখা ছাড়া কিছু করার থাকছে না।

Virat Kohli Batting Fitness ODI

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}