সোনাজয়ী পলক গুলিয়া (ডান দিকে) এবং রুপোজয়ী এষা সিংহ। ছবি: পিটিআই।
শুক্রবার আবারও এশিয়ান গেমসে ভারতের মুখ উজ্জ্বল করল শুটিং। এই ইভেন্ট থেকে এ দিন পাঁচটি পদক এল ভারতের ক্যাবিনেটে। সব মিলিয়ে ১৮টি পদক উপহার দিলেন শুটারেরা। পদক তালিকায় চারে উঠে এল ভারত। আটটি সোনা, ১২টি রুপো এবং ১৩টি ব্রোঞ্জ পেয়েছে তারা। শুক্রবার আরও কিছু পদক নিশ্চিত করা গিয়েছে বিভিন্ন খেলায়।
গত কয়েক দিনের মতো শুক্রবারের শুরুটাও হয়েছে শুটিংয়ের পদক থেকে। প্রথমে ১০ মিটার এয়ার পিস্তলে মহিলাদের দলগত ইভেন্টে রুপো পান পলক গুলিয়া এবং এষা সিংহ। এর পর ব্যক্তিগত বিভাগেও এঁরা দু’জন পদক জেতেন। সোনা পলক এবং রুপো এষার। এর পর ৫০ মিটার রাইফেল থ্রি পজিশনে সোনা জেতেন ঐশ্বর্য প্রতাপ সিংহ তোমর, কুশল স্বপ্নিল এবং অখিল শিয়োরান। সোনার আশা ছিল টেনিসেও। সেখানে হতাশ হতে হয়। এ দিন অ্যাথলেটিক্স থেকে এ বারের প্রথম পদক এসেছে। অলিম্পিক্স কোটা পেয়েছেন নিখাত জ়ারিন। দেখে নেওয়া যাক ভারতের ষষ্ঠ দিন কেমন গেল।
শুটিং
শুক্রবার একই ইভেন্টে সোনা এবং রুপো জেতে ভারত। ১০ মিটার এয়ার পিস্তলে দলগত ভাবে পদক জয়ের পর ব্যক্তিগত বিভাগেও সোনা জয়। পলক গুলিয়া সোনা জিতলেন। রুপো পেলেন এষা সিংহ। এশিয়ান গেমসে রেকর্ড গড়ে সোনা জিতলেন পলক। শুক্রবার সকালে দলগত বিভাগে রুপো জিতেছিলেন পলক এবং এষা। ব্যক্তিগত বিভাগেও তাঁদের থেকে পদকের আশা ছিল ভারতের। সেই আশা পূরণ করেন ভারতের দুই শুটারই। পলক সোনা জেতেন ২৪২.১ পয়েন্ট স্কোর করে। গেমসের রেকর্ড (২৪০.৩) ভেঙে দেন তিনি। এষা পান ২৩৯.৭ পয়েন্ট। এই ইভেন্টে ব্রোঞ্জ জেতেন পাকিস্তানের কিশমালা তলত (২১৮.২)। চিন, হংকংয়ের শুটারেরা শুরু থেকেই পিছিয়ে পড়েন। পলক এবং এষা ফাইনালের শুরু থেকেই প্রথম তিনের মধ্যে ছিলেন। শেষ তিনের লড়াইয়ে পাকিস্তানের কিশমালা হেরে যেতেই ভারতের সোনা এবং রুপো নিশ্চিত হয়ে যায়। কিন্তু কে কোন পদক পাবেন তা তখন নিশ্চিত ছিল না। শেষ পর্যন্ত ১৭ বছরের পলকই সোনা জিতে নেন। রুপো নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয় তাঁর থেকে এক বছরের বড় এষাকে। দিনের প্রথম পদক পলকেরাই এনে দিয়েছিলেন। ১০ মিটার এয়ার পিস্তলে দলগত ইভেন্টে রুপো জিতেছিলেন তাঁরা। কিছু ক্ষণের মধ্যেই ভারতের পুরুষ শুটারদের হাত ধরে সোনা পায় ভারত। ৫০ মিটার রাইফেল থ্রি পজিশনে সোনা জেতেন ঐশ্বর্য প্রতাপ সিংহ তোমর, কুশল স্বপ্নিল এবং অখিল শিয়োরান।
টেনিস
টেনিসে ছেলেদের ডাবলসে রুপো পেল ভারত। ফাইনালে চাইনিজ তাইপেইয়ের কাছে হেরে গেলেন রামকুমার রমানাথন এবং সাকেথ মাইনেনি। ৪-৬, ৪-৬ গেমে হেরে গেলেন তাঁরা। গত বার টেনিসে ছেলেদের ডবলসে সোনা জিতেছিল ভারত। সে বার পদক এনে দিয়েছিলেন রোহন বোপান্না এবং দ্বিবীজ শরণ। এ বারে রুপো পেল ভারত। শুরু থেকেই চাপে ছিলেন রমানাথনেরা। চিনের টেনিস খেলোয়াড়েরা অনেক বেশি চনমনে ছিলেন ম্যাচে। তাঁদের আগ্রাসন চাপ বাড়িয়ে দিচ্ছিল ভারতীয়দের। প্রথম সেটে হেরে যাওয়ার পর রমানাথনেরা চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু সফল হতে পারেননি। চিনের দর্শকদের চিৎকারও ভারতের বিপক্ষে ছিল। স্ট্রেট সেটে হেরে যায় ভারত। টেনিসে মিক্সড ডাবলসে রোহন বোপান্না-রুতুজা ভোসালে জুটি সেমিফাইনালে উঠে পদক নিশ্চিত করেছেন। তাই টেনিস থেকে আরও পদক জিতবে ভারত।
স্কোয়াশ
মালয়েশিয়াকে ২-০ হারিয়ে পুরুষদের দলগত বিভাগে ফাইনালে উঠল ভারত। শনিবার সোনা জিততে লড়তে হবে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। তবে সেমিফাইনাল থেকে বিদায় মহিলা দলের। তারা ব্রোঞ্জ পেল।
অ্যাথলেটিক্স
প্রথম পদক এল শটপাটার কিরণ বালিয়ানের হাত ধরে। ৭২ বছর পর এই ইভেন্টে কোনও ভারতীয় পদক জিতলেন। ফাইনালে তৃতীয় প্রচেষ্টায় ১৭.৩৬ মিটার ছোড়েন কিরণ। সেটিই তাঁকে পদক এনে দেয়।
বক্সিং
পদক নিশ্চিত করলেন নিখাত জ়ারিন। সেই সঙ্গে অলিম্পিক্সের কোটাও আদায় করে নিলেন। ৫০ কেজি বিভাগে তিনি হারালেন জর্ডনের নাসার হানানকে। সেমিফাইনালে উঠেছেন নিখাত।
ব্যাডমিন্টন
পুরুষদের দলগত বিভাগে পদক নিশ্চিত ভারতের। শুক্রবার তারা নেপালকে ৩-০ হারিয়ে সেমিফাইনালে উঠেছে। ৩৭ বছর পর পুরুষদের বিভাগে পদক পাচ্ছে ভারত। তবে মেয়েরা বিদায় নিলেন।
হকি
মেয়েদের হকিতেও দাপট দেখাচ্ছে ভারত। মালয়েশিয়াকে তারা হারাল ৬-০ গোলে। মণিকা, দীপ গ্রেস এক্কা, নবনীত কৌর, বৈষ্ণবী ফালকে, সঙ্গীতা কুমারী এবং লালরেমসিয়ামি গোল করেছেন। রবিবার তারা খেলবে কোরিয়ার বিরুদ্ধে।
টেবিল টেনিস
মেয়েদের সিঙ্গলসের কোয়ার্টারে মণিকা বাত্রা। চিনা তাইপেইয়ের চিহ-উয়ান চুয়াংকে হারালেন ৪-৩ সেটে। তবে পুরুষ সিঙ্গলসের প্রি-কোয়ার্টার থেকে বিদায় নিলেন অচন্তা শরথ কমল এবং জি সাথিয়ান।
বাস্কেটবল
গ্রুপ পর্বে ৩X৩ ইভেন্টে ভারত ১৫-১৮ হেরে গেল চিনের কাছে। মেয়েরা ৫X৫ ইভেন্টে জিতেছে মঙ্গোলিয়ার বিরুদ্ধে।
দাবা
পুরুষ এবং মহিলাদের দলগত বিভাগে জিতে শুরু করল ভারত। পুরুষরা ৩.৫-০.৫ ব্যবধানে জেতেন মঙ্গোলিয়ার বিরুদ্ধে। মহিলারা একই ব্যবধানে হারান ফিলিপিন্সকে।
সাঁতার
এই খেলায় কোনও ইভেন্ট থেকেই পদক জিততে পারল না ভারত। ফিরতে হচ্ছে খালি হাতেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy