Advertisement
E-Paper

ডার্বি জিতেই মোহনবাগানকে খোঁচা ইস্টবেঙ্গল কোচের, ‘ওরা তো পুরো ফিটই নয়’

দীর্ঘ সাড়ে চার বছর পর কলকাতা ডার্বি জিতেছে ইস্টবেঙ্গল। তার পরেই মোহনবাগানকে খোঁচা দিলেন ইস্টবেঙ্গলের কোচ। জানালেন, সবুজ-মেরুন ফুটবলারদের দেখে পুরোপুরি ফিট মনে হয়নি তাঁর।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০২৩ ২১:৪৫
picture of Carles Cuadrat

কার্লেস কুয়াদ্রাত। ছবি: টুইটার।

টানা দশটি ডার্বি পরে আবার জয়ের মুখ দেখল ইস্টবেঙ্গল। সাড়ে চার বছর লাগল আবার মোহনবাগানকে হারাতে। এক সময় একপেশে হয়ে এই লড়াই আবার প্রাণ ফিরে পেল কার্লেস কুয়াদ্রাতের মস্তিষ্কের দৌলতে। স্পেনের কোচ দায়িত্ব নিয়ে দ্বিতীয় ম্যাচেই ইস্টবেঙ্গলের ভাগ্য বদলে দিলেন। তবে ম্যাচের পর হালকা করে মোহনবাগানকে খোঁচা দিতেও ছাড়লেন না। জানালেন, সবুজ-মেরুন দলকে দেখে মোটেই ফিট মনে হয়নি তাঁর।

ইস্টবেঙ্গলের থেকে বেশ কিছু দিন আগে অনুশীলন শুরু করেছিল মোহনবাগান। বিশ্বকাপার জেসন কামিংস-সহ তাদের বিদেশি ফুটবলারেরাও চলে এসেছেন অনেকটাই আগে। কলকাতা লিগ এবং ডুরান্ড, সব ম্যাচেই মোহনবাগানকে দেখে মনে হচ্ছিল আত্মবিশ্বাসে পরিপূর্ণ। সেই দলকেই হারিয়ে দিল ইস্টবেঙ্গল, যাঁরা এখনও পুরো দলকে অনুশীলনে নামাতে পারেননি।

কী ভাবে সম্ভব হল এত কম সময়ে মোহনবাগানের মতো দলকে হারানোর? ম্যাচের পর কুয়াদ্রাত বললেন, “মোহনবাগানের হাতে অনেক তারকা রয়েছে। ওরা অনেক বিনিয়োগ করেছে। আন্তর্জাতিক মঞ্চে সফল ফুটবলার এনেছে। কিন্তু ওরা এখনও পুরোপুরি ফিট নয়। কামিংস, সাদিকু, পেত্রাতোসের মতো ফুটবলারকে ওরা সামান্য সময়ের জন্যে ব্যবহার করতে পেরেছে। তবে এটাও ঠিক যে প্রাক মরসুম প্রতিযোগিতায় সবাইকে সমান ভাবে খেলানো সম্ভব নয়। কিন্তু শারীরিক ভাবে ওদের সবাইকে পুরোপুরি ফিট মনে হয়নি।”

এ টুকু ছাড়া বাকি সময়টা কাটল ইস্টবেঙ্গলকে নিয়ে কথা বলেই। কুয়াদ্রাত বার বারই ধন্যবাদ দিলেন দলের ফুটবলারদের। সাফ জানালেন, তিনি কোনও কৃতিত্বের অধিকারী নন। এত কম সময়ে প্রস্তুতি সেরেও দলকে এ রকম কঠিন ম্যাচে জেতানোর কারিগর ফুটবলারেরাই। বলেছেন, “কয়েক দিন আগেই আমরা দুটো পয়েন্ট হারিয়েছিলাম একটা ম্যাচে। কিন্তু সেই স্মৃতি ভুলে ঘুরে দাঁড়াতে চেয়েছিলাম। দলের মধ্যে লড়াকু মানসিকতা তৈরি করতে চাই। ফুটবলে কেউ এক দিন নায়ক হয়, একদিন খলনায়ক হয়। অনুশীলনে প্রত্যেকে কঠোর পরিশ্রম করছে। আপাতত পরের ম্যাচে আমরা পঞ্জাবের বিরুদ্ধে ভাল খেলতে চাই। ওরা পরের বার আইএসএল খেলছে। আমরা ম্যাচটা জিতে কোয়ার্টারের যোগ্যতা অর্জন করতে চাই।”

আলাদা করে প্রশংসা করলেন গোলদাতা নন্দকুমারকে নিয়ে। কুয়াদ্রাত বলেছেন, “নন্দ প্রচুর পরিশ্রম করেছে অনুশীলনে। ভারতীয় ফুটবলের অনেক ভাল গোল করেছে ও। আমি খাবরার কথাও আলাদা করে বলব। আগের ম্যাচে ওর ভুলে গোল খাওয়ার পর খুব বিমর্ষ হয়ে পড়েছিল। আজ নিজের পারফরম্যান্সের সাহায্যে সব ঢেকে দিয়েছে। নিশু পরের ম্যাচে খেলতে পারবে। তাই আমাদের হাতে বিকল্প রয়েছে। বিদেশিরা শারীরিক ভাবে পুরোপুরি সুস্থ নয়। কিন্তু সেটাও হয়ে যাবে। প্রতিটা ম্যাচে যে পরিকল্পনা করছি সেটা কাজে লাগছে, এটা ভেবেই আমরা খুশি।”

কুয়াদ্রাতের সংযোজন, “এখনও অনেক পরিশ্রম করতে হবে আমাদের। আমি খুব খুশি। তবে আরও বেশি খুশি সমর্থকদের জন্যে। ম্যাচের পর যখন ওরা মাঠে নেমে এসেছিলেন তখন ওদের চোখে আনন্দাশ্রু দেখতে পেয়েছিলাম। সেটাই আমার কাছে বড় প্রাপ্তি।”

শনিবারের ম্যাচে ছিলেন না গত মরসুমের সেরা ফুটবলার ক্লেটন সিলভা, যিনি আবার ক্লাবের অধিনায়ক। আর এক বিদেশি পারদোকেও পাওয়া যায়নি। তা সত্ত্বেও জিতেছে ইস্টবেঙ্গল। না খেললেও ক্লেটনের অবদানের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন কুয়াদ্রাত। বলেছেন, “ক্লেটন সকালেই চলে এসেছে। ৩০ ঘণ্টার যাত্রা করে আসায় ওর পক্ষে খেলা সম্ভব হয়নি। কিন্তু সাজঘরে যে কথাবার্তা হয়েছে তার সবেতেই অংশ নিয়েছে ও। একজন অধিনায়কের এ ধরনের ম্যাচে যে ভূমিকা নেওয়া দরকার সেটাই নিয়েছে। ওকে এবং পারদোকে (ডিফেন্ডার) ছাড়াই আমরা জিতেছি। এটা অবশ্যই খুশি করার মতো বিষয়।”

দিনের শেষে ধন্যবাদ দিয়ে গেলেন সমর্থকদের, যাঁরা আটটি ডার্বিতে হারার হতাশা থাকা সত্ত্বেও মাঠ ভরিয়েছিলেন। কুয়াদ্রাত বলেছেন, “প্রথম ম্যাচের পর আমরা নিজেদের নিয়ে হতাশ হয়ে পড়েছিলাম। আজকের ম্যাচে কোনও দলকেই সেরা বাছতে চাই না। ডার্বি জয়ের আসল হিরো গোটা ইস্টবেঙ্গল দলটাই। সমর্থকেরা এতগুলো হারের পরেও মাঠে এসেছেন। প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত ওরা আমাদের সমর্থন করেছে। ছেলেদের সাজঘরে বলেছিলাম, কোনও মতেই হাল ছাড়বে না। ওরা সেটাই করেছে। ঝুঁকির মুহূর্তেও পিছু হটেনি।”

Durand Cup Carles Cuadrat East Bengal Mohun Bagan
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy