Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
FIFA World Cup 2022

নগ্ন করে তল্লাশি! পুলিশের ‘অত্যাচারে’ আতঙ্কে ফুটবলপ্রেমীরা

ফিফার নির্দেশিকা মানছে না কাতার পুলিশ। তাদের কাছে কাতারের আইনই শেষ কথা। বিদেশি ফুটবলপ্রেমীদের উপর মানসিক এবং শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠছে কাতার পুলিশের বিরুদ্ধে।

রামধনু বাহুবন্ধনী পরার জন্য এক ফুটবলপ্রেমীকে আটক করছে কাতার পুলিশ।

রামধনু বাহুবন্ধনী পরার জন্য এক ফুটবলপ্রেমীকে আটক করছে কাতার পুলিশ। ছবি: টুইটার।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০২২ ১৭:৪৫
Share: Save:

কাতার পুলিশের সঙ্গে ফুটবলপ্রেমীদের একাংশের লুকোচুরি খেলা চলছে। কেউ ধরা পড়ছেন না। কেউ আবার ধরা পড়ছেন। ‘ওয়ান লাভ’ টিশার্ট পরায় দুই ব্যক্তিকে নগ্ন করে তল্লাশির অভিযোগ উঠল কাতার পুলিশের বিরুদ্ধে।

মঙ্গলবার নেদারল্যান্ডস-কাতার ম্যাচ দেখতে গিয়েছিলেন লন্ডনের বাসিন্দা অ্যান্থনি জনসন এবং তাঁর বন্ধু। তাঁদের টিশার্টে ‘ওয়ান লাভ’ প্রতীকের সঙ্গে ছিল ইংল্যান্ড দলের প্রতীক। রামধনু রঙের টুপি পরে ছিলেন তাঁরা। অভিযোগ, তাঁদের স্টেডিয়ামের ঢোকার আগে আটক করে কাতার পুলিশ। তাঁদের সঙ্গে কাতার পুলিশ অভব্য আচরণ করেছে বলেও অভিযোগ। জনসন বলেছেন, ‘‘আমাদের স্টেডিয়ামের প্রধান নিরাপত্তা আধিকারিকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। ঘড়ি এবং বেল্ট খুলে ফেলতে বলা হয়। আরও আটটা খেলা দেখেছি। কখনও এমন করা হয়নি। সেখান থেকে বেরিয়ে আসার সময় এক দীর্ঘদেহী নিরাপত্তাকর্মী আমার পথ আটকান। তিনি আমাকে বলেন, ‘তুমি আমাদের সংস্কৃতিকে সম্মান করছ না।’ বলার পরই আমাকে মেরে মাটিতে ফেলে দেওয়া হয়।’’ জনসনের এর পরের অভিজ্ঞতা আরও ভয়াবহ। তিনি বলেছেন, ‘‘আমাকে একটা নির্জন স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রথমে আমাকে জামা খুলতে বলা হয়। তার পর জুতো, প্যান্ট এবং অন্তর্বাসও খুলতে বলা হয়। ওঁরা আমাকে নগ্ন করতে চেয়েছিলেন। আমার শরীর এবং জামাকাপড় ভাল করে পরীক্ষা করা হয়। কিন্তু ওঁরা কিছুই পাননি। পরে দুঃখপ্রকাশ করেন। তার আগে আমাদের প্রায় ১০ মিনিট ধরে হেনস্থা করা হয়।’’

জনসন জানিয়েছেন, কাতারের পুলিশ ফিফার নিয়মের কোনও তোয়াক্কা করছে না। তিনি বলেছেন, ‘‘আমাকে টুপি খুলে ফেলতে বলা হয়। আমি ফিফার শেষ নির্দেশিকার কথা বলি। যাতে বলা হয়েছে, স্টেডিয়ামে রামধনু পতাকা ব্যবহার করা যাবে। জামা বা টুপিও পরা যাবে। এই কথা শুনে রেগে যান নিরাপত্তাকর্মীরা। এক জন বলেন, ‘ফিফাকে আমরা পরোয়া করি না। ওদের নিয়মে আমাদের কিছু যায়-আসে না। আমাদের কাছে আমাদের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।’’’ এর পর অবশ্য জনসনকে নেদারল্যান্ডস-কাতার ম্যাচ দেখার জন্য স্টেডিয়ামের ভিতর যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়। এই ঘটনায় আতঙ্কিত জনসন। কাতার পুলিশের আচরণকে মানসিক এবং শারীরিক অত্যাচারের সঙ্গে তুলনা করেছেন তিনি।

কাতারের আইন অনুযায়ী সমকাম, উভকাম, রূপান্তরকাম নিষিদ্ধ। যা নিয়ে বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনগুলো প্রথম থেকেই সোচ্চার। কাতার প্রশাসনের চাপে সুর নরম করেছে ফিফা। ‘ওয়ান লাভ’ বাহুবন্ধনী নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কিন্তু ফুটবলপ্রেমীদের একাংশকে রোখা যাচ্ছে না। উরুগুয়ে-পর্তুগাল ম্যাচ চলাকালীন মারিয়ো নামে এক সমর্থক রামধনু পতাকা নিয়ে মাঠে ঢুকে পড়েন। তাঁর টিশার্টের এক দিকে লেখা ছিল ইউক্রেনের পাশে থাকার বার্তা। আর এক দিকে ছিল ইরানের হিজাব-বিরোধী আন্দোলনের সমর্থন। সেই ঘটনার পর আরও সতর্ক কাতার পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

FIFA World Cup 2022 Qatar Football Fans police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE