Advertisement
০৬ অক্টোবর ২০২৪
Mohun Bagan

যুবভারতীতে ওড়িশার কাছে পাঁচ গোল খেল মোহনবাগান, এএফসি কাপ শেষ সবুজ-মেরুনের

এএফসি কাপে আশা কার্যত শেষ হয়ে গেল মোহনবাগানের। সোমবার ঘরের মাঠে ওড়িশা এফসি-র কাছে পাঁচ গোল খেল মোহনবাগান। হারল ২-৫ ব্যবধানে।

football

হেরে গেলেন কামিংসেরা। ছবি: টুইটার।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০২৩ ২১:২৭
Share: Save:

এএফসি কাপে আশা শেষ হয়ে গেল মোহনবাগানের। সোমবার ঘরের মাঠে ওড়িশা এফসি-র কাছে পাঁচ গোল খেল মোহনবাগান। হারল ২-৫ ব্যবধানে। পরের ম্যাচে জিতলেও পরের রাউন্ডে যাওয়ার আর কোনও সম্ভাবনা নেই মোহনবাগানের। বসুন্ধরা কিংস বা ওড়িশা এফসি-র মধ্যে শেষ ম্যাচ। যে দল জিতবে তারাই পরের রাউন্ডে যাবে। বসুন্ধরার ক্ষেত্রে অবশ্য ড্র করলেও চলবে।

এএফসি কাপের দক্ষিণ এশীয় গ্রুপ পর্বে গ্রুপের শীর্ষ স্থানাধিকারী দল আন্তঃআঞ্চলিক সেমিফাইনালের যোগ্যতা অর্জন করে। মোহনবাগান গত বারও আন্তঃআঞ্চলিক সেমিফাইনাল খেলেছিল। এ বার তাদের দৌড় শেষ হয়ে গেল গ্রুপ পর্বেই। এ দিন মোহনবাগানের ম্যাচের আগেই বসুন্ধরা কিংস ২-১ হারিয়েছে মাজিয়াকে। ৫ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপের শীর্ষে তারা। মোহনবাগানকে হারিয়ে ৫ ম্যাচে ৯ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে ওড়িশা। তিন নম্বরে মোহনবাগান। ৫ ম্যাচে তাদের পয়েন্ট ৭। এই গ্রুপের শেষ রাউন্ডে বসুন্ধরা বনাম ওড়িশার খেলা। মোহনবাগান খেলবে মাজিয়ার বিরুদ্ধে। তবে সেই ম্যাচ এখন গুরুত্বহীন।

মরসুমের শুরু থেকেই মোহনবাগানের কোচ জুয়ান ফেরান্দো বার বার বলেছিলেন, তাঁর আসল লক্ষ্য এএফসি কাপে ভাল ফল করা। মোহনবাগান শুরুটাও করেছিল ভাল ভাবেই। ওড়িশাকে তাদের মাঠে ৪-০ হারিয়েছে। পরে মাজিয়াকেও উড়িয়ে দিয়েছে। কিন্তু ঘরের মাঠে বসুন্ধরার বিরুদ্ধে ড্র এবং অ্যাওয়ে ম্যাচ হারই পার্থক্য গড়ে দিল। ঘরের মাঠে লজ্জার হারের প্রতিশোধ কলকাতায় এসে নিয়ে গেল ওড়িশাও। গত বার আইএসএল ট্রফি এবং এ বছর ডুরান্ড কাপ জিতলেও ফেরান্দো চাকরিতে থাকেন কি না, সেটাই এখন বড় প্রশ্ন। কারণ, ফেরান্দোর মতো মোহনবাগানের দল পরিচালন সমিতিরও লক্ষ্য ছিল এএফসি কাপ।

চোটের কারণে সোমবারের ম্যাচে ছিলেন না দিমিত্রি পেত্রাতোস, আশিক কুরুনিয়ন, মনবীর সিংহরা। তাঁদের ছাড়াই শুরু করে মোহনবাগান। ম্যাচের শুরুতেই পেনাল্টির আবেদন করে মোহনবাগান। বক্সের মধ্যে ফেলে দেওয়া হয় জেসন কামিংসকে। তবে রেফারি কর্ণপাত করেননি। মোহনবাগান কিছুটা পিছন থেকে খেলা তৈরি করতে থাকে। লিস্টন কোলাসো বাঁ দিক থেকে একাধিক বার উঠে যান। কিন্তু কাজে লাগাতে পারেননি। সাহালের একটি শট বাঁচিয়ে দেন ওড়িশা গোলকিপার অমরিন্দর সিংহ। কিন্তু আক্রমণ বজায় রাখার কারণেই ১৭ মিনিটে গোল পায় মোহনবাগান।

মাঝমাঠ থেকে বল নিয়ে উঠে এসেছিলেন কোলাসো। তিনি আশিস রাইকে পাস দেন। আশিসের থেকে বল পান হুগো বুমোস। তিনি এক ধাপ ভেতরে ঢুকে শট নেন। প্রথম পোস্ট দিয়ে গোল হজম করেন অমরিন্দর। এর পরেই ওড়িশার খেলা পাল্টে যায়। একের পর এক আক্রমণ করতে থাকে তারা। পুইতিয়ার একটি শট অল্পের জন্যে বাইরে যায়। ৩০ মিনিটেই গোল শোধ করে দেয় ওড়িশা।

সবুজ-মেরুনের প্রাক্তন ফুটবলার রয় কৃষ্ণ বল পেয়েছিলেন। তিনি বুমোসের কায়দায় ভেতরে ঢুকে শট নেন, যা বাঁচাতে পারেননি মোহন গোলকিপার বিশাল কাউথ। দু’মিনিট পরে এগিয়ে যায় ওড়িশা। আহমেদ জাহুর ফ্রিকিক পান কৃষ্ণ। তিনি বক্সে দিয়েগো মৌরিসিয়োকে লক্ষ্য করে বল ভাসান। মোহনবাগানের শুভাশিস বসু সামনে থাকলেও আটকাতে পারেননি। মৌরিসিয়ো অনায়াসে বল জালে জড়ান।

৩৯ মিনিটের মাথায় লিস্টন বল ধরে একাই অনেকটা এগিয়ে গিয়েছিলেন। শেষ মুহূর্তে জাহু এসে ট্যাকল না করলে সমতা ফেরাতে পারত মোহনবাগান। সমতা তো ফেরেইনি। উল্টে ৪২ মিনিটে তৃতীয় গোল হজম করে সবুজ-মেরুন। মার্কার গ্লেন মার্টিন্সকে এড়িয়ে বল নিয়ে মোহনবাগানের বক্সে ঢুকে পড়েন ক্রিস গডার্ডের। একক দক্ষতায় বিশালকে পরাস্ত করে বল জালে জড়িয়ে দেন।

দ্বিতীয়ার্ধে মোহনবাগানের খেলায় অনেকটাই ঝাঁজ লক্ষ করা যায়। লিস্টন দু’-এক বার ভালই আক্রমণ করেছিলেন। এই সময়ে বেশ কয়েকটি কর্নার এবং ফ্রিকিক পায় মোহনবাগান। সেগুলি কাজে লাগাতে পারেনি তারা। তবে দ্বিতীয় গোল চলে আসে ৬৩ মিনিটে। বাঁ দিক থেকে বল নিয়ে উঠেছিলেন বুমোস। তাঁর ভাসানো বলে বিপক্ষ ডিফেন্ডারদের টপকে নিখুঁত হেডে গোল করেন কিয়ান নাসিরি। ৬৭ মিনিটে সমতা ফেরাতে পারত মোহনবাগান। সাহালের শট বারে লেগে বেরিয়ে যায়।

এর পরেও বেশ কয়েক বার গোলের কাছাকাছি চলে আসে মোহনবাগান। কিন্তু সমতা ফেরাতে পারেনি। উল্টে খেলা ঘুরে গেল ৯০ মিনিটের পরেই। অতিরিক্ত সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে চতুর্থ গোল করে ওড়িশা। দ্রুত ফ্রিকিক নেন কৃষ্ণ। অনিকেত যাদব আচমকা গোলমুখে দৌড়ে এসে বল জালে জড়ান। ম্যাচের ভবিষ্যৎ ওখানে ঠিক হয়ে গেলেও মোহনবাগানের লজ্জার আরও বাকি ছিল। ৯৫ মিনিটের মাথার পঞ্চম গোল হয়। মাঝমাঠ থেকে বল নিয়ে উঠে এসেছিলেন ইসাক। আগেই দেখেছিলেন বিশাল অনেকটা এগিয়ে রয়েছেন। তাঁর লব বিশালের মাথার উপর দিয়ে জালে জড়ায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mohun Bagan afc cup
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE