Advertisement
০২ মে ২০২৪
Nikhat Zareen

Nikhat Zareen: শর্টস পরায় নাক সিঁটকেছিলেন প্রতিবেশীরা, বিশ্বসেরা হয়ে মুখের উপর জবাব দিলেন জারিন

বক্সার হয়ে ওঠার পিছনে অনেক বাধা পেরোতে হয়েছে তাঁকে। সব পিছনে ফেলে বিশ্বমঞ্চে সোনা পেয়েছেন জারিন। রইল তাঁর কাহিনি।

জারিনের বক্সার হওয়ার নেপথ্য কথা

জারিনের বক্সার হওয়ার নেপথ্য কথা ছবি টুইটার

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ মে ২০২২ ১৭:২২
Share: Save:

এমন একটি জায়গায় থাকতেন তিনি, যেখানে মেয়েদের ছোট জামাকাপড় পরাকে ভাল চোখে দেখা হত না। কিন্তু বক্সিং লড়তে গেলে শর্টস তো পরতে হবেই। ফলে নিখাত জারিন যখন বক্সিং শুরু করেছিলেন, তখন নাক সিঁটকেছিলেন অনেকেই। কিন্তু বিশ্বসেরা হয়ে সবার মুখ বন্ধ করে দিয়েছেন জারিন। প্রমাণ করে দিয়েছেন, সমাজের বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতাকে পার করেও বিশ্বমঞ্চে সফল হওয়া যায়।

এক সংবাদপত্রে সাক্ষাৎকারে দিতে গিয়ে তাঁর বাবা তথা প্রাক্তন ফুটবলার ও ক্রিকেটার মহম্মদ জামিল বলেছেন, “সৌদি আরবে প্রায় ১৫ বছর সেলস বিভাগে যুক্ত থাকার পর আমি নিজামাবাদে ফিরেছিলাম। মেয়েদের পড়াশুনো এবং খেলাধুলোর দিকে নজর দেওয়াই ছিল মূল উদ্দেশ্য। জারিনের দুই দিদি ডাক্তার। তাই নিখাত এবং ওর বোন, যে ব্যাডমিন্টন খেলে, দু’জনের দিকেই নজর দিতে চেয়েছিলাম। নিখাত যখন বলেছিল ও বক্সার হতে চায়, তখন আমাদের তরফে কোনও বাধা ছিল না। কিন্তু অনেক আত্মীয় এবং বন্ধুরাই বলেছিল যে বক্সিং খেলা উচিত নয়। কারণ সেখানে ওকে শর্টস পরতে হবে। কিন্তু আমরা জানতাম নিখাত যেটা চায় আমরা সেটাকেই সমর্থন করব।”

নিজে খেলোয়াড় হওয়ার সুবাদে জামিল চেয়েছিলেন তাঁর চার মেয়েই কোনও না কোনও খেলাকে বেছে নিক। কিন্তু প্রথম দুই মেয়ে ডাক্তারির দিকে মন দিয়েছিল। নিখাত প্রথমে বেছে নিয়েছিলেন অ্যাথলেটিক্স। স্প্রিন্টে রাজ্য চ্যাম্পিয়নও হয়েছেন। তবে কাকার পরামর্শে বক্সিংয়ে আসেন। কাকা সামসামুদ্দিনের দুই ছেলেই ছিলেন বক্সার। ফলে অনুপ্রাণিত হওয়ার জন্য পরিবারের বাইরে অন্য কাউকে দেখার দরকার কোনও দিন পড়েনি। ১৪ বছরেই যুব বিশ্ব বক্সিংয়ে জেতেন তিনি। বড় মঞ্চে সফল হওয়ার বীজ প্রোথিত হয়েছিল তখনই।

তবে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে সোনা জেতার আগে পর্যন্ত তাঁকে থাকতে হয়েছে মেরি কমের ছায়ায়। ২০১১-য় যুব বক্সিংয়ে বিশ্বসেরা হওয়ার পর ২০১৬-য় সিনিয়র পর্যায়ে খেলা শুরু করেন তিনি। ফ্লাইওয়েট বিভাগে জাতীয় খেতাব জেতেন। ২০১৭-য় একটি বছর নষ্ট হয় চোটের কারণে। ২০১৮-য় জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে ব্রোঞ্জ জেতেন। ২০১৯-এ এশীয় চ্যাম্পিয়নশিপ এবং তাইল্যান্ড ওপেনেও পদক পান। ২০১৮-য় কমনওয়েলথ এবং এশিয়ান গেমসে সুযোগ না পেলেও ভেঙে পড়েননি।

বাবা জামিল বলেছেন, “আমি ওকে বার বার বলতাম, কত যুবতী ওকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে খেলতে আসছে। ওর এটা দেখেই খুশি হওয়া উচিত। নিজের খেলায় উন্নতি করার কথাও বলতাম।” টোকিয়ো অলিম্পিক্সে মেরির বিরুদ্ধে ট্রায়ালে হেরে গিয়েছিলেন। কিন্তু এক বছরের মধ্যে বিশ্বসেরা হয়ে নিখাত বুঝিয়ে দিলেন, বক্সিংয়ে তিনি থাকতেই এসেছেন।

কমনওয়েলথ এবং এশিয়ান গেমসের পরেই নিজের বিভাগ বদলাবেন জারিন। ৫৪ কেজি বিভাগে লড়বেন তিনি। তার জন্য শারীরিক শক্তি যেমন বাড়াতে হবে, তেমনই টেকনিকেও বদল আনতে হবে। জারিনের লড়াই তাই শেষ হয়ে যায়নি। বরং নতুন করে শুরু হল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE