Advertisement
E-Paper

গফকে হারিয়ে ১৬৫৮ দিন পর গ্র্যান্ড স্ল্যামের শেষ আটে ওসাকা, সহজ জয় সিনার, শিয়নটেকের, জিতেও মন খারাপ জোকোভিচের

ইউএস ওপেনে অঘটন ঘটালেন নাওমি ওসাকা। ২০২৩ সালের চ্যাম্পিয়ন কোকো গফকে হারালেন তিনি। অবশ্য সহজ জয় পেয়েছেন ইয়ানিক সিনার ও ইগা শিয়নটেক।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১০:৪৪
sports

এ বারের ইউএস ওপেনে (বাঁ দিক থেকে) ইয়ানিক সিনার, ইগা শিয়নটেক, নাওমি ওসাকা ও নোভাক জোকোভিচ। ছবি: রয়টার্স।

কোকো গফের সামনে নাওমি ওসাকা লড়াই দেবেন, তা নিশ্চিত ছিল। কিন্তু তিনি গফকে হারিয়ে দেবেন, তা-ও আবার স্ট্রেট সেটে, তা ভাবা একটু কঠিন ছিল। সেটাই করে দেখালেন ওসাকা। ১৬৫৮ দিন, অর্থাৎ সাড়ে চার বছর পর আবার কোনও গ্র্যান্ড স্ল্যামের কোয়ার্টার ফাইনালে উঠলেন জাপানের তারকা। অন্য ম্যাচে সহজ জয় পেয়েছেন ইয়ানিক সিনার ও ইগা শিয়নটেক। ইউএস ওপেনের কোয়ার্টার ফাইনালে নামার আগে মন খারাপ ২৪ গ্র্যান্ড স্ল্যামের মালিক নোভাক জোকোভিচের।

আর্থার অ্যাশ স্টেডিয়ামে গফকে স্ট্রেট সেটে (৬-৩, ৬-২) হারিয়েছেন ওসাকা। এই জয়ের ফলে র‌্যাঙ্কিংয়ে প্রথম ২০ জনের মধ্যে ঢুকেছেন ওসাকা। শেষ ষোলোর ম্যাচে গফকে ভুগিয়েছে তাঁর সার্ভিস ও ফোরহ্যান্ড। অন্য দিকে যত সময় গড়িয়েছে তত ভয়ঙ্কর দেখিয়েছে ওসাকাকে। তাঁর চারটি গ্র্যান্ড স্ল্যামের মধ্যে দু’টি ইউএস ওপেন ও দু’টি অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে। অর্থাৎ, হার্ড কোর্টে ভাল খেলেন তিনি। সেটাই আরও এক বার দেখা গিয়েছে।

এর আগে এক বারই গফ ও ওসাকা মুখোমুখি হয়েছিলেন। ২০১৯ সালে ইউএস ওপেনে। তখন গফের বয়স মাত্র ১৫। সে বারও জিতেছিলেন ওসাকা। এ বারও জিতলেন ২৭ বছর বয়সি খেলোয়াড়। ২০২৩ সালে যখন গফ ইউএস ওপেন জিতেছিলেন তখন গ্যালারিতে বসে তা দেখেছিলেন ওসাকা। তার দু’মাস আগেই কন্যাসন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন তিনি। সেই কোর্টেই কোয়ার্টার ফাইনালে উঠলেন ওসাকা।

খেলা শেষে ওসাকা বলেন, “আমি খুব বেশি আবেগপ্রবণ হতে চাইছি না। মেয়ের জন্মের দু’মাস পর গ্যালারিতে বসে গফকে খেলতে দেখেছিলাম। তখনই চাইতাম, এক বার হলেও আবার এই কোর্টে নামতে হবে। এটা আমার সবচেয়ে প্রিয় কোর্ট। সেখানেই আবার কোয়ার্টার ফাইনালে উঠলাম। এই অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না।” কোয়ার্টার ফাইনালে একাদশ বাছাই চেকিয়ার ক্যারোলিনা মুচোভার বিরুদ্ধে খেলবেন ওসাকা।

যে মুচোভার বিরুদ্ধে ওসাকা নামবেন, তিনি প্রথম রাউন্ডে হারিয়েছেন প্রত্যাবর্তনের লক্ষ্যে নামা আর এক তারকা ভিনাস উইলিয়ামসকে। দ্বিতীয় রাউন্ডের ম্যাচে প্রথম সেটে ১-৪ পিছিয়ে থাকার সময় গ্যালারির দিকে তাকিয়ে কেঁদে ফেলেন মুচোভা। কাউকে কিছু একটা বলেন। তার পর চেয়ার আম্পায়ারের কাছে ক্ষমা চেয়ে আবার খেলা শুরু করেন। তিন সেটের লড়াই জেতেন তিনি।

কেন কেঁদেছেন সেই ব্যাখ্যাও সাংবাদিক বৈঠকে জানান তিনি। মুচোভা বলেন, “আমার উল্টো দিকে প্রাক্তন প্রেমিক বসেছিল। ও মাঝে মাঝে এমন জায়গায় চলে আসে যেখানে ওর আসা উচিত নয়। ওকে দেখে একটু ঘাবড়ে গিয়েছিলাম। ওকে চলে যেতে বলি। প্রথমে ও শোনেনি। পরে অবশ্য চলে যায়। ওই সময় মনঃসংযোগ রাখা কঠিন হচ্ছিল।” ব্যক্তিগত ওই কঠিন পরিস্থিতি সামলেও জিতেছেন মুচোভা। ফলে শেষ আটে ওসাকার সামনে কঠিন চ্যালেঞ্জ।

শেষ ষোলোর আর একটি ম্যাচে ত্রয়োদশ বাছাই ইকাটেরিনা আলেকজ়ান্দ্রোভাকে স্ট্রেট সেটে (৬-৩, ৬-১) হারিয়েছেন শিয়নটেক। ম্যাচে প্রতিপক্ষকে দাঁড়াতে দেননি তিনি। প্রতিপক্ষের সার্ভিস আট বার ভাঙার সুযোগ পান শিয়নটেক। পাঁচ বার ভাঙেন তিনি। তাঁর সার্ভিসও এক বার ভাঙেন আলেকজ়ান্দ্রোভা। তাতে অবশ্য ম্যাচ জিততে কোনও সমস্যা হয়নি শিয়নটেকের। কোয়ার্টার ফাইনালে অষ্টম বাছাই আমেরিকার আমান্ডা আনিসিমোভার বিরুদ্ধে খেলবেন দ্বিতীয় বাছাই পোল্যান্ডের শিয়নটেক।

পুরুষদের শেষ ষোলোর ম্যাচে দাপুটে জয় পেয়েছেন সিনার। আনেকজ়ান্ডার বুবলিককে স্ট্রেট সেটে (৬-১, ৬-১, ৬-১) উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। গোটা ম্যাচে মাত্র তিনটি গেম খুইয়েছেন সিনার। বুবলিককে দাঁড়াতে দেননি তিনি। ম্যাচে আটটি ‘এস’ মেরেছেন সিনার। প্রথম সার্ভিস থেকে ৮১ শতাংশ পয়েন্ট তুলেছেন তিনি। সেখানেই পিছিয়ে পড়েছেন বুবলিক। সিনার সার্ভিস ও পাওয়ার টেনিসের কোনও জবাব ছিল না তাঁর কাছে।

ম্যাচে ১৭ বার বুবলিকের সার্ভিস ভাঙার সুযোগ পান সিনার। আট বার ভাঙেন তিনি। বাকি সুযোগ কাজে লাগাতে পারলে হয়তো একটি গেমও জিততে পারতেন না বুবলিক। ১৩টি ডবল ফল্ট করেছেন বুবলিক। সেটাও ভুগিয়েছে তাঁকে। তবে যে ভাবে সিনার এগোচ্ছেন, তাতে প্রতিপক্ষ খেলোয়াড়দের চিন্তা বাড়তে বাধ্য। কোয়ার্টার ফাইনালে লোরেঞ্জো মুসেত্তির বিরুদ্ধে খেলবেন সিনার। অর্থাৎ, ইটালির দুই খেলোয়াড়ের লড়াই দেখা যাবে শেষ আটে।

কোয়ার্টার ফাইনালে আগেই নিজের জায়গা পাকা করে নিয়েছেন জোকোভিচ। তাঁর ম্যাচ চতুর্থ বাছাই টেলর ফ্রিৎজ়ের বিরুদ্ধে। চলতি বছর অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের কোয়ার্টার ফাইনালে এই ফ্রিৎজ়ের কাছে হেরেই বিদায় নিতে হয়েছিল জোকোভিচকে। অর্থাৎ, কঠিন লড়াই ২৪ গ্র্যান্ড স্ল্যামের মালিকের সামনে। কিন্তু আপাতত অন্য একটি কারণে মান খারাপ জোকোভিচের।

২ সেপ্টেম্বর ৮ বছর বয়স হবে জোকোভিচের কন্যা তারার। আগে থেকে জোকোভিচের পরিকল্পনা ছিল, আমেরিকায় কন্যার জন্মদিন পালন করবেন। কিন্তু সেই পরিকল্পনা বাতিল করতে হয়েছে। জোকোভিচ যখন গ্র্যান্ড স্ল্যামে খেলেন, তখন তাঁর পরিবারকে কোর্টেই দেখা যায়। কিন্তু এ বার ইউএস ওপেনে পরিবার সঙ্গে নেই। জন্মদিনে বাবাকে কাছে পাবে না তারা। সে বাবার উপর রেগে আছে। তাই জোকোভিচের আরও খারাপ লাগছে।

কোয়ার্টার ফাইনালে নামার আগে সাংবাদিকদেক জোকোভিচ বলেন, “আমরা ভেবেছিলাম এটা হতে পারে। কিছু করার নেই। মেয়ের জন্মদিনে থাকতে পারব না। ও আমার উপর রেগে আছে। মনটা খারাপ লাগছে।” কন্যার জন্মদিনে থাকতে না পারলেও তাকে জয়ের উপহার দিতে চান জোকোভিচ। তিনি বলেন, “ওর জন্য জেতার চেষ্টা করব। এটাই হবে আমার উপহার। পাশাপাশি ওকে আরও অনেক উপহার পাঠাব। আশা করছি, আমার জয় দেখলে ও খুশিই হবে।” ইউএস ওপেনে প্রতিটি রাউন্ড জেতার পর র‌্যাকেট নিয়ে বেহালা বাজানোর ধরনে উল্লাস করেন জোকোভিচ। তারা বেহালা শিখছে। কন্যার জন্যই ও ভাবে উল্লাস করেন তিনি। সেই কন্যার জন্মদিনেই ফ্রিৎজ়ের বিরুদ্ধে কোয়ার্টার ফাইনালের কঠিন ম্যাচ খেলতে নামতে হবে জোকোভিচকে।

US Open 2025 Naomi Osaka Coco Gauff Iga Swiatek Jannik Sinner
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy