পুল্লেলা গোপীচন্দ।—ফাইল চিত্র।
দেশের সেরা ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড়রা বিদেশে প্রতিযোগিতায় নামলে পুল্লেলা গোপীচন্দকে যে ভাবে কোর্টের পাশে দেখা যেত, এ বছর অতটা দেখা যায়নি। জাতীয় ব্যাডমিন্টন কোচ বলছেন, পি ভি সিন্ধুর মতো নতুন তারকা খুঁজে পাওয়ার জন্যই এখন আর বেশি বিদেশে সফর করছেন না।
সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে গোপীচন্দ বলেছেন, ‘‘আমি যদি শুধু ঘুরতেই থাকি তা হলে জুনিয়র খেলোয়াড়দের কী হবে, আরও একটা সিন্ধু কখনই তখন উঠে আসবে না। আমাদের আরও কোচ চাই। আমি একা সব সামলাতে পারব না। আরও সাহায্য চাই আমার।’’
রিয়ো অলিম্পিক্সে রুপো জয়ী সিন্ধু, লন্ডন অলিম্পিক্সে ব্রোঞ্জ জয়ী সাইনা নেহওয়াল বা কিদম্বি শ্রীকান্ত-সহ দেশের সেরা খেলোয়াড়েরা গোপীচন্দের কোচিংয়েই সাফল্য পেয়েছেন। তবে ভারতীয় ব্যাডমিন্টন যত এগিয়ে চলছে, গোপীচন্দের ব্যস্ততা ততটাই বাড়ছে। তাই সেরা খেলোয়াড়দের ব্যক্তিগত ভাবে বেশি সময় দিতে পারছেন না তিনি। তাতে কোনও কোনও খেলোয়াড়ের ক্ষোভ বাড়ছে বলেও শোনা যাচ্ছে। গত মাসেই শোনা যাচ্ছিল ছাত্রী সিন্ধুর সঙ্গে গুরু গোপীর সম্পর্কে অবনতি হয়েছে। পরে অবশ্য সিন্ধু তা অস্বীকার করেন। ‘‘সবাই চায় ব্যক্তিগত ভাবে আমি তাদের দেখাশোনা করি। কোর্টের পাশে অনেক বেশি থাকি। সেটা সব সময় সম্ভব হয় না। প্রায়ই শুনি, স্যর আপনি তো ওখানে ছিলেন না। যদি আপনি আমার পাশে থাকতেন, ঠিক জিততাম,’’ বলেন ২০০১ অল ইংল্যান্ড চ্যাম্পিয়ন।
ভারতীয় ব্যাডমিন্টন দলের হেড কোচ অবশ্য বলছেন চলতি মরসুমে খেলোয়াড়দের সঙ্গে বিদেশে না গেলেও পরের বছর তিনি থাকবেন। ‘‘২০০৮,’০৯ থেকেই যে বছরে কমনওয়েলথ, এশিয়ান গেমস বা অলিম্পিক্স থাকে, আমি দলের সঙ্গে সফরে থাকি। তার পরের বছর যাই না। তাই এ বছর আমি যাচ্ছি না। পরের বছর যাব,’’ বলেছেন গোপীচন্দ।
অলিম্পিক্স নিয়ে তিনি কোনও পরিকল্পনা করেছেন কি না জানতে চাইলে গোপীচন্দের উত্তর, ‘‘গত অলিম্পিক্সের আগে আমি শেষ কয়েকটা প্রতিযোগিতায় খেলোয়াড়দের সঙ্গে বিদেশ সফরে গিয়েছিলাম, তার পরে অলিম্পিক্সের পরিকল্পনা করেছিলাম। এ বারও অলিম্পিক্সের আগে অর্থাৎ ফেব্রুয়ারি, মার্চ মাসে আমি দলের সঙ্গে সফর করব তার পরে পরিকল্পনা করব।’’
তাঁর কোচিংয়ে ভারত দুটি অলিম্পিক্স পদক পেয়েছে। ২০১২ লন্ডনে এবং ২০১৬ রিয়ো অলিম্পিক্সে। এ বার যে ভাবে ভারতীয় দলে বিদেশি কোচেরা যোগ দিয়েছে ৪৫ বছর বয়সি গোপীচন্দ আশাবাদী, আবার অলিম্পিক্সে পদক জিতবে দেশ। ‘‘আমার সামনে এখন চ্যালেঞ্জ বলতে শুধু কোচ নিয়ে। ভাগ্যক্রমে ফেব্রুয়ারি থেকে আমাদের হাতে এখন কিছু কোচ রয়েছে। তাঁদের হাতে দায়িত্ব তুলে দিয়েছি।’’ তিনি আরও বলেছেন, ‘‘আমাদের কোচিং দল এখন ফ্ল্যান্ডি (লিম্পেলে) ও নামিরি (সুরোতো) রয়েছে ডাবলসের জন্য। পার্ক (তায়ে সাং) ও কিম (জি হিউন) রয়েছে পুরুষ ও মেয়েদের সিঙ্গলসের জন্য। এরা থাকার জন্য এ বার আমি এক জনকে ফোকাস না করে সামগ্রিক ভাবে আমরা কতটা এগোচ্ছি, সে দিকে নজর দিতে পারছি। আশা করি এর ফল আমরা পেতে থাকব।’’
এ দিকে, ইন্দোনেশিয়া ওপেন ব্যাডমিন্টনের দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠলেন পি ভি সিন্ধু এবং কিদাম্বি শ্রীকান্ত। জাকার্তায় বুধবার দু’জনই হারালেন জাপানের প্রতিপক্ষদের। সিন্ধু পরাজিত করেন আয়া ওহোরিকে। শ্রীকান্ত জিতলেন কেন্তা নিশিমোতোর বিরুদ্ধে। সিন্ধু কিন্তু প্রথম গেম হেরে বেশ লড়াই করে ম্যাচ বার করলেন। কঠিন প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে তুলনায় সহজে জিতলেন শ্রীকান্ত। সিন্ধু এই নিয়ে টানা সাত বার ওহোরিকে হারালেন। ম্যাচের ফল ১১-২১, ২১-১৫, ২১-১৫। নিশিমোতোকে শ্রীকান্ত হারালেন ২১-১৪, ২১-১৩ ফলে, মাত্র ৩৮ মিনিটে। পরের রাউন্ডে বিশ্বের পাঁচ নম্বর সিন্ধুকে খেলতে হবে মিয়া বিচফেল্ডট-ইপ পুই ই ম্যাচের বিজয়ীর সঙ্গে। শ্রীকান্তের পরবর্তী প্রতিদ্বন্দ্বী ব্রিস লেভারদেজ-এনজি কা লং অ্যাঙ্গাস ম্যাচের বিজয়ী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy