Advertisement
E-Paper

বডিলাইন লড়াইয়ে অস্ট্রেলিয়া ‘ডন’-হীন

মাত্র চার দিনের মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠতে পারলেন না তিনি।  ​

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০১৯ ০৩:৪৩
বিষণ্ণ: মঙ্গলবার লিডসে অনুশীলনের ফাঁকে হতাশ স্টিভ স্মিথ। তাঁকে খেলানোর ঝুঁকি নিল না দল। রয়টার্স

বিষণ্ণ: মঙ্গলবার লিডসে অনুশীলনের ফাঁকে হতাশ স্টিভ স্মিথ। তাঁকে খেলানোর ঝুঁকি নিল না দল। রয়টার্স

হেডিংলেতে অনুশীলনে আসার পরে তাঁর শরীরী ভাষাই বলে দিচ্ছিল, কী হতে যাচ্ছে। শূন্য দৃষ্টি নিয়ে ঘোরাফেরা করছিলেন। কোচ জাস্টিন ল্যাঙ্গার এসে দু’হাত দিয়ে কাঁধ চেপে ধরে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করলেন।

জোফ্রা আর্চারের ভয়ঙ্কর বাউন্সারে গলায় আঘাত পাওয়ার পরে মাঠ থেকে বেরিয়ে যেতে হলেও ফের ব্যাট করেছিলেন স্টিভ স্মিথ। তখনও অনেকে বুঝতে পারেনি আঘাতের তীব্রতা। পরের দিন সকালে উঠে অসুস্থ বোধ করতে থাকেন তিনি। নতুন করে ডাক্তারি পরীক্ষা হয় এবং অস্বস্তি ধরা পড়ায় তিনি আর লর্ডসে নামতে পারেননি। এ বার লিডসেও অস্ট্রেলিয়া পাচ্ছে না তাদের প্রধান ব্যাটিং স্তম্ভকে।
অস্ট্রেলিয়া দলের ডাক্তার মঙ্গলবার পরীক্ষা করে জানিয়েছেন, আরও বিশ্রাম দরকার স্মিথের। ফিল হিউজ ট্র্যাজেডির পরে নতুন আইন অনুযায়ী, মাথায় লাগার পরে ডাক্তার অনুমতি না দেওয়া পর্যন্ত সেই ক্রিকেটার ফের মাঠে নামতে পারবেন না। স্মিথ হেডিংলেতে খেলার জন্য মরিয়া ছিলেন। গত বারো মাস ক্রিকেট থেকে নির্বাসিত থাকতে হয়েছিল বল-বিকৃতি কেলেঙ্কারির জেরে। সোমবারেও সতীর্থদের বলেছিলেন, অনেক ভাল আছেন। ইয়র্কশায়ারে যাওয়ার পথে বাসের মধ্যে সতীর্থদের সঙ্গে তাসও খেলেন। তাই আশার আলো তৈরি হয়েছিল, হয়তো তিনি পারবেন। কিন্তু মাত্র চার দিনের মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠতে পারলেন না তিনি।

এ দিন অনুশীলনেও স্মিথ এসেছিলেন দলের ট্র্যাকস্যুট পরে। কিন্তু সতীর্থদের সঙ্গে গা ঘামাতে দেখা যায়নি। ডাক্তারের সঙ্গে কথা বললেন। তার পর কোচ ল্যাঙ্গারের সঙ্গে কথোপকথন। দীর্ঘ আলোচনায় ব্যস্ত রইলেন প্রাক্তন অধিনায়ক মার্ক টেলরের সঙ্গে। তখনই দেখে বোঝা যাচ্ছিল, আর আশা নেই। মস্তিষ্কে আঘাতজনিত নিয়ম অনুযায়ী স্মিথকে হেডিংলে টেস্টে খেলতে হলে এ দিন নেটে শুধু ব্যাট করলেই হত না, কোনও রকম অস্বস্তি ছাড়া বাউন্সারের মোকাবিলাও করতে হত। সেই চ্যালেঞ্জ নেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় অনুমতি তিনি ডাক্তারের থেকে পাননি। লর্ডসে চতুর্থ দিনে আর্চারের বাউন্সারে গলার কাছে আঘাত পেয়েছিলেন স্মিথ। প্রায় একই জায়গায় আঘাত পেয়ে মৃত্যু হয়েছিল ফিল হিউজের। স্মিথের আঘাত হিউজ-আতঙ্ক ফিরিয়ে এনেছিল। এখন তাই ডাক্তারের সবুজ সংকেত ছাড়া কোনও ভাবেই আঘাতপ্রাপ্ত ক্রিকেটার মাঠে নামতে পারবেন না। অনেকে বরং বিস্মিত হয়ে যাচ্ছেন, কী ভাবে গলায় আঘাত পাওয়ার পরেও স্মিথ ব্যাট করতে নামার অনুমতি পেয়েছিলেন!
হিউজের মৃত্যুর পরে ক্রিকেটে মস্তিষ্কে আঘাতজনিত নতুন নিয়ম এসেছে। পরিবর্ত খেলোয়াড় এখন ব্যাটও করতে পারবেন। স্মিথের জায়গায় মার্নাস লাবুশানে লর্ডসে ব্যাট করার অনুমতি পান এবং আর্চারের মারণ বাউন্সার তাঁরও হেলমেটে আছড়ে পড়ে। তবু লড়াই করে টেস্ট ড্র করার সাহস দেখান তিনি। সম্ভবত লাবুশানেই হবেন হেডিংলেতে স্মিথের পরিবর্ত।
চলতি অ্যাশেজে তিন ইনিংসে স্মিথের রান ১৪২, ১৪৪ এবং ৯২। জেফ বয়কটের মতো কেউ কেউ মনে করছেন, স্মিথকে ধরাশায়ী করা ওই একটি ডেলিভারিতে অ্যাশেজ-ভাগ্য নির্ধারণ করে দিয়েছেন আর্চার। ২০১৩-তে মিচেল জনসনের আগুনে বোলিংয়ের সামনে এ ভাবেই অসহায় দেখিয়েছিল ইংল্যান্ড ব্যাটসম্যানদের। বেন স্টোকস বলছেন, ‘‘জনসন কী অবস্থা করেছিল, সকলে জানেন। আমি ভাগ্যবান জোফ্রা আমাদের দলে রয়েছে এবং ওর ভয়ঙ্কর বোলিং আমাকে খেলতে হয় না।’’

বোঝা যাচ্ছে, বডিলাইন পার্ট টু চলবে। অস্ট্রেলিয়া পাবে না তাদের আধুনিক ডন ব্র্যাডম্যানকে।

Steve Smith Ashes Test Series Justin Langer Cricket
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy