Advertisement
E-Paper

কোহালিরা ধাক্কা সামলে নেবে

ভারতকে যে ভাবে হারাল, তার পর শ্রীলঙ্কার প্রশংসা করা ছাড়া কোনও উপায়ই নেই। আসলে চ্যালেঞ্জের সামনে দাঁড়ালেই প্রতিভার প্রকাশ হয়। শ্রীলঙ্কার গুণতিলক, কুশল মেন্ডিস, কুশল পেরেরা ও গুণরত্ন-রা যেমন নিজেদের প্রমাণ করল চ্যালেঞ্জের জবাব দিতে গিয়েই।

সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১১ জুন ২০১৭ ০৪:৪৮
মেজাজে: দক্ষিণ আফ্রিকা বধের মহড়ায় কোহালি। ছবি: রয়টার্স

মেজাজে: দক্ষিণ আফ্রিকা বধের মহড়ায় কোহালি। ছবি: রয়টার্স

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ভারতের হারটা পুরো গ্রুপটাকেই আরও আকর্ষণীয় করে তুলল।

ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তান ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে শ্রীলঙ্কা কিন্তু একেবারেই মনে ছাপ ফেলার মতো ক্রিকেট খেলেনি। অথচ দ্বিতীয় ম্যাচেই ওরা ঘুরে দাঁড়িয়ে পড়ল। এর থেকেই প্রমাণ হয়, ম্যাচের দিন কী হচ্ছে, সেটাই সবচেয়ে বড় কথা। কে কেমন ফর্মে রয়েছে, কার কোন অস্ত্র ধারালো, সেটা বড় ব্যাপার নয়।

ভারতকে যে ভাবে হারাল, তার পর শ্রীলঙ্কার প্রশংসা করা ছাড়া কোনও উপায়ই নেই। আসলে চ্যালেঞ্জের সামনে দাঁড়ালেই প্রতিভার প্রকাশ হয়। শ্রীলঙ্কার গুণতিলক, কুশল মেন্ডিস, কুশল পেরেরা ও গুণরত্ন-রা যেমন নিজেদের প্রমাণ করল চ্যালেঞ্জের জবাব দিতে গিয়েই। এই ছেলেগুলোকে শ্রীলঙ্কা যদি তৈরি করতে পারে, তা হলে ছোট ফর্ম্যাটের ক্রিকেটের জন্য ভবিষ্যতে ওরা হয়তো একটা ভাল দল তৈরি করে ফেলতে পারবে।

অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউজের ক্ষমতাও অসাধারণ। কী ঠান্ডা মাথা ছেলেটার! ব্যাটিংয়ের পক্ষে ভাল উইকেটে ওরা শুধু যে চার-ছয় মেরে ভারতের বোলারদের সামলাল, তা নয় ঘনঘন স্ট্রাইক রোটেট করেও এগিয়ে নিয়ে গেল ইনিংস। বহুদিন পর ক্রিকেটে ফিরে আসা অ্যাঞ্জেলোকে দেখে একবারও মনে হয়নি অনেক দিন ও মাঠের বাইরে ছিল। কখনও চাপ বাড়তে দেয়নি। তরুণ মেন্ডিসও ওর জাত চিনিয়ে দিল।

টুর্নামেন্টের আগে থেকেই আমি বলে আসছি, ভারতের দু’জন স্পিনার খেলানো উচিত। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ওরকম দাপুটে জয়ের পরও একই কথা বলেছিলাম। এ বার ইংল্যান্ডের উইকেটের চরিত্র বেশ অন্যরকম দেখা যাচ্ছে। বেশির ভাগ পিচই বেশ পাটা। আর যেহেতু আবহাওয়ার প্রায়ই স্যাঁতসেঁতে থাকছে, তাই পিচের চরিত্র খুব একটা বদলাচ্ছেও না। আমার অভিজ্ঞতা বলছে, পাটা উইকেটে দুই স্পিনারেই খেলা উচিত। পাকিস্তান তো স্পিনারদের দিয়েই দক্ষিণ আফ্রিকাকে বোতলবন্দি করে ফেলল। আর বিরাট কোহালির হাতে হাফিজ, ইমাদদের চেয়ে ভাল স্পিনার আছে বোধহয়।

আগামী দু’দিনে একাধিক মরণবাঁচন লড়াই রয়েছে যেমন ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা, তেমন পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কা। শনিবারের অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ডও তাই ছিল। এগুলো কার্যত কোয়ার্টার ফাইনাল হয়ে উঠেছিল। ভারতের সঙ্গে পেরে উঠতে গেলে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ওদের ব্যাটিংয়ে আরও উন্নতি করতে হবে। রাবাডা, মর্কেল, মরিস ও পার্নেলদের নিয়ে ওদের পেস আক্রমণ অসাধারণ। ওদের দিনে ওরা যে কোনও ব্যাটিং লাইন-আপে ধস নামিয়ে দিতে পারে। তবে আমার মনে হয়, ইমরান তাহির এই ম্যাচে খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। ভারতের মিডল অর্ডারকে বিপদে ফেলে দিতে পারে ও।

ভারতের ব্যাটিং লাইন-আপও গত ম্যাচে দুর্দান্ত ফর্মে ছিল। শিখর ধবন, রোহিত শর্মারা ফর্মে চলে এসেছে বলেই মনে হচ্ছে। যদিও শোনা যাচ্ছে রোহিতের নাকি ফের চোট। ইনিংসের ভিত ওদেরই গড়তে হবে। ভারতের দুশ্চিন্তার কিছু নেই। কোনও টুর্নামেন্টে কোনও দলেরই সবকিছু ভাল হয় না। একটা খারাপ ম্যাচে হতাশ হয়ে পড়ার কিছু নেই। ওদের ঘুরে দাঁড়াতে হবে। আর ভারতীয় দলের ড্রেসিংরুমে যা অভিজ্ঞতা আছে, তাতে ওদের এই কাজটা করতে খুব একটা কঠিন হবে না। ওরা জানে কী ভাবে ঘুরে দাঁড়াতে হয়। এরকম কঠিন পরিস্থিতিতে ভারত বরাবরই সফল হয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধেও মনে হয় তার ব্যতিক্রম হবে না।

লেখাটা শেষ করি বাংলাদেশকে অভিনন্দন জানিয়ে। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ওরা যা খেলল, তার জন্য। ওরা শুধু নিজেদের নয়, অন্য দলেরও আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দিল। বুঝিয়ে দিল। কোনও কিছুই অসম্ভব নয়।

Virat Kohli Sourav Ganguly সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় ICC Champions Trophy 2017 Champions Trophy চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি Cricket
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy