ফ্রান্সের খুদে সমর্থক। কে বলুন তো? ইডেন হ্যাজার্ড!
অবাক হতেই পারেন। মঙ্গলবার রাতেই রাশিয়া বিশ্বকাপে মুখোমুখি ফ্রান্স আর বেলজিয়াম। প্রথম সেমিফাইনাল নিয়ে উত্তেজনা ক্রমশ বাড়ছে। ফ্রান্সের জয়ের পথে প্রধান কাঁটা বেলজিয়ামের অধিনায়ক। দশ নম্বর জার্সির হ্যাজার্ডই দলের প্রধান ভরসা। উঠে-নেমে অনেক জায়গা জুড়ে খেলেন তিনি। আর ‘রেড ডেভিলস’ হিসেবে চিহ্নিত দলের অধিনায়কই ফ্রান্সের সমর্থক!
গল্পের মতো লাগলেও সত্যি একদম তাই। ১৯৯৮ সালের বিশ্বকাপে ফ্রান্সের সমর্থক ছিলেন হ্যাজার্ড। সেবার জিনেদিন জিদানরা চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন। আর ফ্রান্সের সেবারের নীল রঙের জার্সি পরে দুই ভাই, কিলিয়ান ও থোরগানের সঙ্গে ছবি তুলেছিলেন হ্যাজার্ড। তখন তাঁর বয়স খুব কম। বেলজিয়ামের যে অংশে হ্যাজার্ডের পরিবার থাকত, সেখানে সবাই ফরাসিতে কথা বলতেন। ১৪ বছর বয়সে তাঁরা উঠে যান ফ্রান্সের লিলে শহরে। ফলে, ‘ফ্রেঞ্চ কানেকশন’ রয়েই গিয়েছে।
দুই ভাই কিলিয়ান ও থোরগানের সঙ্গে ফ্রান্সের জার্সিতে একদম ডানদিকে হ্যাজার্ড। ১৯৯৮ সালে। ছবি টুইটারের সৌজন্যে।
হ্যাজার্ড তা স্বীকারও করেছেন। বলেছেন, “ভাইদের সঙ্গে আমিও তখন বেলজিয়ামের থেকে ফ্রান্সেরই বেশি সমর্থক ছিলাম। কারণ, আমরা ১৯৯৮ সালের বিশ্বকাপ জয় মনের মধ্যে নিয়ে বড় হয়েছি। সেই সময় বেলজিয়ামের জার্সি পেতাম না। তার জন্যই ফ্রান্সের জার্সি পরেছিলাম। সেই সময়ের বেলজিয়াম ফুটবলারদের আমি অসম্মানিত করতে চাই না। ওঁরা দুর্দান্ত ফুটবলার ছিলাম। কিন্তু সেই সময়ে আমার পছন্দ ছিল ফ্রান্স।” তাত্পর্যের হল, ফ্রান্সের সেবারের বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক দিদিয়ের দেশঁ এখন কোচ। এবং ফ্রান্সের কোচ হিসেবে দেশঁর প্রথম কাজই হবে হ্যাজার্ডকে আটকানো।
আরও পডুন: জিতে অঁরিকে জবাব দিতে চান জিহুরা
তবে হ্যাজার্ড ভয় পাচ্ছেন ফ্রান্সের মিডফিল্ডার এন’গোলো কান্তেকে। চেলসিতে একই দলে খেলেন দু’জনে। হ্যাজার্ড সেজন্যই সতর্ক করে দিয়েছেন কান্তেকে নিয়ে। বলেছেন, “আমার মনে হয় নিজের কাজে ওই এখন বিশ্বের সেরা। কান্তে যদি নিজের খেলা খেলতে পারে, তবে ফ্রান্সের জেতার সম্ভাবনা ৯৫ শতাংশ। আমাদের তাই ওঁকে বল ধরতে দিলে চলবে না।” ১৯ বছর বয়সি স্ট্রাইকার কিলিয়ান এমবাপেও মনে ধরেছে হ্যাজার্ডের। বেলজিয়ামের দশ নম্বর জার্সি প্রশংসায় ভরিয়েছেন বিপক্ষের দশ নম্বরকে। হ্যাজার্ড বলেছেন, “এমবাপের প্রতি আমার রীতিমতো শ্রদ্ধা রয়েছে। ছোটবেলায় ও হয়তো আমার ভিডিয়ো দেখেছে। এখন আমি কিন্তু ওঁর খেলার ভিডিয়ো দেখছি। এই বয়সে ও যা করছে, তা অবিশ্বাস্য। আধুনিক ফুটবলে এমন কখনও দেখিনি।"
দশ বনাম দশ, এমবাপে বনাম হ্যাজার্ড, মঙ্গলবার লড়াইয়ের কেন্দ্রীয় চরিত্র হয়ে উঠতেই পারেন দু'জন। তখন অবশ্য পারস্পরিক শ্রদ্ধার আবহ থাকবে না, নিশ্চিত থাকুন!
আরও পডুন: অ্যাডভেঞ্চারে ভয় পায় না বেলজিয়াম