Advertisement
E-Paper

হামেসদের সমর্থনে আজ কলম্বিয়ার ‘বাঙালি’ বধূ

এই রাজ্যের একমাত্র কলম্বিয়ান নাগরিক আলবা রুইস ভেবে চলেছেন, মঙ্গলবার তাঁর দেশ বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে জাপানকে হারালে কী ভাবে উৎসব করবেন।

দেবাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৯ জুন ২০১৮ ০৪:২৬
প্রতীক্ষা: বাড়িতে স্ত্রী আলবা ও দুই ছেলেকে নিয়ে নির্বাণ। নিজস্ব চিত্র

প্রতীক্ষা: বাড়িতে স্ত্রী আলবা ও দুই ছেলেকে নিয়ে নির্বাণ। নিজস্ব চিত্র

হামেস রদ্রিগেসের শহরের মেয়ে। ইডেনে গিয়ে আইপিএলে শাহরুখ খানের দল কেকেআরকে সমর্থন করেন। বাংলায় অনর্গল। নিজের হাতে ভাঁপা ইলিশ ও চিংড়ি মালাইকারি রাঁধতেও সিদ্ধহস্ত।

এই রাজ্যের একমাত্র কলম্বিয়ান নাগরিক আলবা রুইস ভেবে চলেছেন, মঙ্গলবার তাঁর দেশ বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে জাপানকে হারালে কী ভাবে উৎসব করবেন। কলম্বিয়ান ‘বাঙালি’ গৃহবধু শ্রীরামপুরের লাহিড়ীপাড়ার বাড়িতে বসে বলে দেন, ‘‘গ্রুপে পোলান্ড, ও সেনেগাল থাকলেও জাপান বেশ শক্তিশালী দল। ওদের হারাতে পারলে দ্বিতীয় রাউন্ডে যাওয়ার রাস্তা অনেকটা সহজ হয়ে যাবে। বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচ তাই কিছুটা উদ্বেগেই আছি।’’ যোগ করলেন, ‘‘মঙ্গলবার জিতলেই বুধবার সকালে কলম্বিয়ান খাবার ও পানীয় সহযোগে উৎসব করব ফ্ল্যাটের বন্ধুদের নিয়ে। ডিসেম্বর মাসে কলম্বিয়া গিয়েছিলাম। বোগোটা বিমানবন্দরে হামেসের সঙ্গে দেখা হয়েছিল। ওকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলে এসেছি, বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে যেতেই হবে এ বার।’’

তবে আলবা একা নন। মায়ের সঙ্গে কলম্বিয়ার জাতীয় দলের জার্সি গায়ে তাঁর দুই শিশুপুত্রও মেতে উঠেছে ফ্ল্যাটের ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা সমর্থকদের সঙ্গে পাল্লা দিতে। রাদামেল ফালকাওদের সমর্থনে গলা ফাটিয়ে যাচ্ছে তারা। সোমবার সকালে শ্রীরামপুরের বাড়ি গিয়ে দেখা গেল, দশ বছরের আকাশ এস্তেবান রায় রুইস এবং তিন বছরের আরিয়ান ফেলিপে রায় রুইসও মায়ের সঙ্গে কলম্বিয়ার পতাকা দিয়ে ঘর সাজাতে ব্যস্ত। আলবার দুই পুত্র মায়ের মতোই বাংলা বলতে পারে। দু’জনেই কলম্বিয়ার নাগরিক।

আকাশ ও আরিয়ানকে কোলে বসিয়ে আলবা হাসতে হাসতে বলেন, ‘‘আসল ঝামেলা তো বাড়িতেই। আমার স্বামী নির্বাণ রায় আবার ব্রাজিল সমর্থক। সারাক্ষণ নেমার, নেমার করে যাচ্ছেন।’’ বলেই মেরিন ইঞ্জিনিয়ার স্বামীর দিকে তাকান। এ বার স্প্যানিশে বলতে শুরু করেন ভালদেরামা, হিগুইতাদের দেশের মেয়ে, ‘‘নেমার ভায়ো লা আর্দিয়া! নো দন্দে? লা কে লা রম্পিয়ো লা কস্তিয়া...।’’ তার পর বঙ্গানুবাদ করে দেন নিজেই ‘‘নেমার কাঠবিড়ালিটাকে দেখলে! কোথায়? আরে যে তোমার পিঠটা ভেঙে দিয়ে গেল...।’’ শুরু হয়ে যায় অট্টহাস্য। এ ভাবে চলে বিশ্বকাপকে ঘিরে কলম্বিয়া বনাম ব্রাজিলের গৃহযুদ্ধ। আলবা বলেন, ‘‘গত বছর নেমারের পিঠ ভেঙে দিয়েছিলেন আমাদের জুনিগা। এ বারও ওঁকে বাকি ডিফেন্ডাররা মারবেন। আর গোলের পর গোল করবেন আমাদের হামেস। নির্বাণ মুখ গোমড়া করে বসে থাকবে।’’

স্ত্রীর কথা শুনে হাসতে থাকেন আলবার স্বামী নির্বাণ। জানালেন, কলম্বিয়ার সানতানদার প্রদেশের কফি ব্যবসায়ীর কন্যা আলবার সঙ্গে তাঁর প্রথম আলাপ এগারো বছর আগে। আলবা তখন হোটেলের রিসেপশনে কাজ করতেন। প্রথম আলাপেই প্রেম। তার পরে বিয়ে। গত দশ বছর ধরে শ্রীরামপুরেই রয়েছেন তাঁরা। মাঝে মাঝে কলম্বিয়া যান। আগামী বছরের শুরুতে ফের যাবেন কলম্বিয়া। কারণ? আলবা বলেন, ‘‘ভারতে থাকলে ছেলে যে ফুটবলার হতে পারবে না। আমার খুব ইচ্ছে, একদিন আমার ছেলে কলম্বিয়ার জার্সি গায়ে বিশ্বকাপ খেলুক।’’

আর এ বারের বিশ্বকাপে? গায়িকা শাকিরার দেশের নাগরিক আলবা বলছেন, ‘‘জোসে পেকারম্যান আর্জেন্তিনাকে অনেক সাফল্য দিয়েছেন। এখন উনি আমাদের কোচ। বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জন পর্বে ব্রাজিল, উরুগুয়েকে রুখে দিয়েছিলাম আমরা। এই বিশ্বকাপে ভাল কিছু করতেই পারে আমার কলম্বিয়া।’’

FIFA World Cup 2018 Bengali Housewife Colombia Colombian Citizen Football বিশ্বকাপ ফুটবল ২০১৮
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy