প্রতীকী ছবি।
অসমে বন্যা, উত্তরবঙ্গ বৃষ্টিতে ভেসে যাচ্ছে। কিন্তু দক্ষিণবঙ্গে শ্রাবণ শুধু ক্যালেন্ডারেই আটকে রয়েছে। শনিবার শ্রাবণ মাসের তিন তারিখে আকাশ দেখে কে বলবে, বর্ষাকাল চলছে! ফিরোজা নীল আকাশ, সাদা তুলোর মতো মেঘ। ঝলমলে রোদের সঙ্গে অস্বস্তিকর গরম। লোকমুখে তাই একটাই প্রশ্ন, বর্ষা কি এ বার উধাও হয়ে গেল?
গাঙ্গেয় বঙ্গে বর্ষা যে কার্যত উধাও তা অবশ্য মৌসম ভবনের তথ্যে চোখ রাখলেই বোঝা যাচ্ছে। ১ জুন থেকে ১৯ জুলাই পর্যন্ত হিসেবে, দেশের বিভিন্ন আবহাওয়াভিত্তিক অঞ্চলের মধ্যে গাঙ্গেয় বঙ্গ বর্ষার ঘাটতিতে (৫২ শতাংশ) দ্বিতীয়। তার আগে রয়েছে একমাত্র শুখা এলাকা সৌরাষ্ট্র ও কচ্ছ (বর্ষার ঘাটতি ৬৪ শতাংশ)। এমনকি, মরু এলাকা পশ্চিম রাজস্থানের ঘাটতিও (৪৭ শতাংশ) গাঙ্গেয় বঙ্গের থেকে কম। তবে উত্তরবঙ্গে কয়েক দিন অতিবৃষ্টি হওয়া সামগ্রিক ভাবে পশ্চিমবঙ্গের বর্ষার ঘাটতি কমে ৩৬ শতাংশে এসেছে।
মৌসম ভবনের সূত্র বলছে, বর্ষার ঘাটতিতে পশ্চিমবঙ্গের আগে রয়েছে ঝাড়খণ্ড (৪০ শতাংশ) কেরল (৪২ শতাংশ), তেলঙ্গানা (৩৮ শতাংশ) এবং গুজরাত (৪৮ শতাংশ)। বিহারে অবশ্য স্বাভাবিকের থেকে ৬ শতাংশ বেশি বৃষ্টি হয়েছে।
এই বর্ষার ঘাটতিতে স্বাভাবিক ভাবেই চাষের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে। কৃষকেরা বলছেন, এই সময় থেকেই ধান চাষ শুরু হয়।
বীজতলার কাজ শুরু হয়। ফলে বৃষ্টি না-হলে সেই কাজ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এই পরিস্থিতি ভূগর্ভের জল চাষের কাজে ব্যবহৃত হতে পারে।
তাই সেই ভাঁড়ারেও টান পড়ার আশঙ্কা থাকছে।
এ বছর এমন পরিস্থিতি কেন? পরিবেশবিদ এবং আবহবিজ্ঞানীদের একাংশ দীর্ঘদিন ধরেই বলে আসছেন, জলবায়ু বদলের প্রভাবে বর্ষার চরিত্র বদলাচ্ছে। শুধু তাই নয়, তাঁদের গবেষণায় মে ও জুন মাসে বৃষ্টিপাতের ধারাবাহিক হ্রাস দেখা যাচ্ছে। তবে আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গণেশকুমার দাস বলছেন, বঙ্গোপসাগরে কোনও নিম্নচাপ বা শক্তিশালী ঘূর্ণাবর্ত দানা বাঁধলে বর্ষা জোর পায়। মৌসুমি অক্ষরেখাও গাঙ্গেয় বঙ্গে থিতু হয়। কিন্তু এ বার সেই পরিস্থিতি দেখা যাচ্ছে না। কেন দেখা যাচ্ছে না, তার সদুত্তর আবহবিজ্ঞানীদের কাছে এখনও নেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy