Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Coochbihar

‘এই দল আর আমার নয়’, জল্পনা বাড়ালেন তৃণমূল বিধায়ক মিহির

মঙ্গলবার তিনি ফেসবুকে লেখেন, ‘আমার দল আর আমার নেত্রীর হাতে নেই, অর্থাৎ এই দল আর আমার নয়, হতে পারে না'।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০২০ ১৮:৫০
Share: Save:

দল আর তাঁর হতে পারে না বলে মন্তব্য করে নিজেকে ঘিরে জল্পনা উস্কে দিলেন কোচবিহার দক্ষিণের তৃণমূল বিধায়ক মিহির গোস্বামী। মিহির যে তৃণমূলের সঙ্গে আর সম্পর্ক রাখতে চাইছেন না তা বেশ কিছু দিন ধরেই নানা ভাবে বুঝিয়েছেন। এ বার সোশ্যাল মিডিয়াতেও তা লিখলেন। মঙ্গলবার তিনি ফেসবুকে লেখেন, ‘আমার দল আর আমার নেত্রীর হাতে নেই, অর্থাৎ এই দল আর আমার নয়, হতে পারে না। শ্যামা মায়ের আরাধনালগ্নে আমার এই অনুমান আরও দৃঢ় হয়েছে। তাই এই দলের সঙ্গে সমস্ত রকমের সম্পর্ক ছিন্ন করাটাই কি স্বাভাবিক নয়’?

দুর্গাপুজোর আগে থেকেই দল ও মিহিরের সম্পর্কের টানাপড়েন শুরু হয়। আর উৎসবের মরসুম শেষ হতেই নিজের বক্তব্য সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করলেন তিনি। এ দিন মিহির আরও লিখেছেন, ‘দলের ভেতর অজস্র অপমান অবমাননা ক্রমাগত সহ্য করে গিয়েছি অকারণে, চুপ করে থাকার জন্য শুভানুধ্যায়ীরাও বিরক্ত হয়েছেন বার বার। কিন্তু আমার উত্তর একটাই ছিল, দিদি! যার উপর বিশ্বাস-আস্থাতেই এতদিন টিকে ছিলাম। কিন্তু ১৯৮৯ সাল থেকে তাঁর নেতৃত্ব মেনে দীর্ঘ তিরিশ বছর অতিক্রম করার পর হঠাৎ বোধগম্য হয়েছে, এ দল এখন আর আমার দিদি-র দল নয়, দিদি এখানে নিস্পৃহ। তাই ‘দিদির লোক’ এখানে অপ্রয়োজনীয় ও গুরুত্বহীন। অন্যায় সব কিছু মেনে নিয়ে ‘জো হুজুর’ করে টিকে থাকতে পারলে থাকো, নয়ত তফাৎ যাও’।

ফেসবুক পোস্টে কোথাও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম বা ‘তৃণমূল’ শব্দটি লেখেননি মিহির। তবে ‘আমার নেত্রী’, ‘দিদি’ বা ‘আমার দল’ বলে যে মমতা বা তৃণমূলের কথাই বলতে চেয়েছেন তা স্পষ্ট। ইতিমধ্যেই দলের বিভিন্ন সাংগঠনিক পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন মিহির। এর পরে বিভিন্ন দলের থেকে তাঁর সঙ্গে যে যোগাযোগ করা হচ্ছে সে কথাও জানিয়েছেন তিনি। লিখেছেন, ‘সংগঠন থেকে আমার অব্যাহতি নেওয়ার ঘোষণা করার পর ৬ সপ্তাহ কেটে গেছে। এই ৪২ দিনে আমি সব দলের কাছ থেকে এক বা একাধিক ফোন কল পেয়েছি, কথা বলেছি। বহু পুরনো রাজনৈতিক বন্ধুর ফোন পেয়েছি রাজ্যের বাইরে থেকেও। কেউ অফার দিয়েছেন, কেউ পরামর্শ দিয়েছেন, কেউ শুধু ভালবাসা দিয়েছেন’।

এ দিন মিহিরের ফেসবুক পোস্ট নিয়ে জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল জলিল আহমেদ বলেন, ‘‘দল রয়েছে নেত্রীর হাতেই। দলের সমস্ত কিছু নিজে হাতে নিয়ন্ত্রণ করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে নেত্রী কেন ওঁকে ফোন করে খোঁজ নিচ্ছেন না, সে বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।’’

প্রসঙ্গত, কিছু দিন আগে প্রকাশ্যেই দলের ব্লক ও জেলা কমিটি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মিহির। দলের সমস্ত সাংগঠনিক পদ থেকেও ইস্তফা দিয়ে জানান, দলনেত্রী মমতা চাইলে তিনি বিধায়ক পদ থেকেও ইস্তফা দেবেন। এর পর থেকেই শুরু হয় নানা জল্পনা। এ সবের মধ্যেই তাঁর বাড়িতে দেখা করতে যান কোচবিহারের বিজেপি সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক। যা জল্পনায় ঘৃতাহুতি হয়ে ওঠে।

আরও পড়ুন: নীলবাড়ি দখলে কোনও নিরীক্ষা নয়, পরীক্ষিত সৈনিকেই ভরসা মোদী-শাহর

আরও পড়ুন: গত বছর এই দিনেই উহানে মেলে প্রথম করোনা আক্রান্ত, এখন বিশ্বে সাড়ে পাঁচ কোটি

অন্য দিকে, দলের নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন মিহির। নিশীথের সঙ্গে সাক্ষাতের পরে মিহিরের কোচবিহারের বাড়িতে যান রাজ্যের দুই মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ এবং বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ। কিন্তু দেখা হয়নি। জানা যায়, বিধায়ক আলিপুরদুয়ারে বোনের বাড়িতে গিয়েছেন বলে মন্ত্রীদের জানান মিহিরের স্ত্রী। দুই মন্ত্রী আলিপুরদুয়ারে গিয়ে জানতে পারেন সকালে মিহির সেখানে এলেও পরে অসমের কোকরাঝাড়ে আরেক বোনের বাড়িতে গিয়েছেন। এর পর মন্ত্রীরা আর অসমে যাননি। গোটা দিন মিহিরের ফোনও সুইচড অফ পাওয়া যায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coochbihar TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE