Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus

করোনা-আতঙ্কে রঙের উৎসব ফ্যাকাসে, আবিরেই মেতে রইল কলকাতা

পুলিশের একটি সূত্র জানাচ্ছে, অলিগলিতে যে ভাবে রং নিয়ে দাপাদাপি দেখা যায়, তা এ বছর খুব একটা চোখে পড়েনি।

সরশুনা এলাকায় রংয়ের খেলায় মেতেছে কচিকাঁচারা। —নিজস্ব চিত্র

সরশুনা এলাকায় রংয়ের খেলায় মেতেছে কচিকাঁচারা। —নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ মার্চ ২০২০ ১৮:১৩
Share: Save:

বসন্তের মিঠে রোদ, ঝলমলে আকাশ। বৃষ্টির চোখরাঙানিও নেই। এমন অনুকূল পরিবেশ থাকলেও রঙের উৎসব যেন ফ্যাকাসে হয়ে গেল করোনাভাইরাসের আতঙ্কে! গত কয়েক বছর ধরে হইহুল্লোড়ের চেনা ছবি ধরা পড়ত পাড়ায় পাড়ায়। মাথায় উঠত বাহারি রঙের সিন্থেটিক চুল। সাজসজ্জায় আরও যেন রঙিন হয় উঠত কলকাতা।

কিন্তু এ বছর যেন সব কিছুই ব্রাত্য! সৌজন্যে ‘করোনা আতঙ্ক’। প্রভাতফেরির সঙ্গে রবীন্দ্রসঙ্গীতের সুরে দোলের সকালের চেনা ছবি ধরা পড়লেও, রং নিয়ে মাতামাতি দেখা যায়নি। চিনা রঙের-মুখোশ-পিচকারি সরিয়ে আবির নিয়েই উৎসবে মেতে রইল আট থেকে আশি।

দোল বা হোলিতে রং, মুখোশ, পিচকারি এবং যে সব সাজসরঞ্জাম বাজারে পাওয়া যায়, তার একটা বড় অংশই চিন থেকে আমদানি হয়। করোনাভাইরাসের আতঙ্কে তাই চিনা পণ্য থেকে মুখ ফিরিয়েছেন অনেকেই। টালিগঞ্জ থেকে টালা। বেহালা থেকে বেলঘরিয়া— রং ফেলে আবির নিয়েই উৎসবে মেতে উঠেন বহু মানুষ।

আরও পডু়ন: রিপোর্ট নেগেটিভ, মুর্শিদাবাদে সৌদি ফেরতের মৃত্যু করোনায় নয়

বিশ্বভারতীতে দোল উৎসব বাতিল হয়েছে এ বছর। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও রঙের উৎসবে সামিল হবেন না বলে জানিয়েছেন। অভিনেতা-অভিনেত্রী, নেতানেত্রীরাও কিছুটা বুঝেশুনে দোল খেলেছেন এ বছর।

রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজার বক্তব্য, “আমার বাড়ি উত্তর কলকাতায়। এখানে প্রতি বছর দোলের দিন অনেক মানুষ আসেন শুভেচ্ছা জানাতে। এ বছর সংখ্যাটা অনেক কম। মনে হচ্ছে এ বছর অনেকেই রং খেলছেন না।” পুলিশ সূত্রেও তেমনই তথ্য উঠে আসছে। কলকাতায় দোলে পর্যাপ্ত পুলিশি নিরাপত্তা রাখা হয়েছিল। অলিগলিতে টলহদারি চলেছে। পুলিশের একটি সূত্র জানাচ্ছে, গত বছরের তুলনায় এ বছর উন্মাদনা কিছুটা কমই ছিল। অলিগলিতে যে ভাবে রং নিয়ে দাপাদাপি দেখা যায়, তা এ বছর খুব একটা চোখে পড়েনি।

আরও পডু়ন: দোল উৎসবে মাতোয়ারা রাজ-শুভশ্রী থেকে শ্রাবন্তী, তবে রং থেকে দূরেও থাকলেন অনেকেই

প্রতি বছর নানা ধরনের পিচকারিতে ছেয়ে যায় বাজার। এ বছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি। কিন্তু ক্রেতার দেখা মেলেনি। বড়বাজারের ক্যানিং স্ট্রিট থেকে জানবাজার, বেহালা থেকে গড়িয়াহাট— সর্বত্রই দেদার বিকিয়েছে রংবেরঙের আবির। রঙের চাহিদা ছিল একবারে তলানিতে। মুখোশ, বাহারি রঙের সিন্থেটিক চুলেরও এ বছরে বিক্রি কম। চিনা পণ্য কার্যত বিকোয়নি। বেহালায় সখেরবাজারে রঙের দোকান দিয়েছিলেন শঙ্কর দাস। তাঁর কথায়: “রঙের উৎসবে যে সব সাজসরঞ্জাম পাওয়া যায়, তার সবটাই চিনা পণ্য নয়। কিন্ত করোনা-আতঙ্ক মানুষের মধ্যে এতটাই ঢুকে গিয়েছে যে সবাই ভাবছেন, সব কিছুই হয়তো চিনা পণ্য।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Holi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE