Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
COVID-19

উৎসবে বেপরোয়া মনোভাব ও ভিড়ে বিপদ হতে দেরি হবে না

চিকিৎসক ও বিজ্ঞানীদের এই সতর্কবার্তা জনতা বা উৎসবের উদ্যোক্তারা কতটা মাথায় রেখেছেন তা নিয়ে প্রশ্ন থেকে যায়।

বিধি-উড়িয়ে: সংক্রমণের আশঙ্কাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে লাগামছাড়া ভিড় নিউ মার্কেট চত্বরে। রবিবার। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

বিধি-উড়িয়ে: সংক্রমণের আশঙ্কাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে লাগামছাড়া ভিড় নিউ মার্কেট চত্বরে। রবিবার। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

নিজস্ব সংবাদদাতা 
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ অক্টোবর ২০২০ ০৩:২৫
Share: Save:

দুর্গাপুজোয় ভিড় হলে কোভিড সংক্রমণ কী হবে, তা নিয়ে আশঙ্কা করেছিলেন চিকিৎসকেরা। রবিবার কেন্দ্রের ‘ন্যাশনাল সুপারমডেল কমিটি ফর কোভিড-১৯’ জানাল, উৎসবে বেপরোয়া মনোভাব ও ভিড় করলে বিপদ হতে দেরি হবে না। বস্তুত, এ দিনই কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন জানিয়েছেন, এ রাজ্যের কিছু এলাকায় গোষ্ঠী সংক্রমণ হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে পুজোর ভিড় কী বিপদ ডাকবে, তা নিয়ে প্রমাদ গুণছেন অনেকেই। ভিড় ঠেকাতে সরব হয়েছে পরিবেশকর্মী, সমাজকর্মী ও চিকিৎসকদের সংগঠনও। কিন্তু তার প্রতিফলন জনমানসে দেখা যাচ্ছে না।

দেশে সংক্রমণ চূড়োয় পৌঁছে কমতে শুরু করেছে বলে কমিটি জানিয়েছে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে দৈনিক সংক্রমণের হার ঊর্ধ্বগামী। ফলে বাঙালির সেরা উৎসবের প্রাক্কালে তা নিঃসন্দেহে অশনি সঙ্কেত। তা নিয়েই এ দিন কমিটির সাংবাদিক বৈঠকে প্রশ্ন উঠেছিল। কমিটির চেয়ারম্যান তথা আইআইটি হায়দরাবাদের অধ্যাপক মাথুকুমাল্লি বিদ্যাসাগর জানান, উৎসবের ভিড় কী বিপদ ডাকতে পারে, তা কেরলের ওনামে দেখা গিয়েছে। ওনাম পেরনোর এক সপ্তাহের মধ্যে সে রাজ্যে সংক্রমণ ৩২ শতাংশ বেড়েছিল। সেই সূত্র ধরেই পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রেও আশঙ্কা

প্রকাশ করেছেন বিজ্ঞানীরা। কমিটির আরও এক সদস্য বরাহনগরের ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিসটিক্যাল ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক শঙ্করকুমার পাল জানান, পশ্চিমবঙ্গে সংক্রমণ বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে অন্যান্য উৎসবের উদাহরণগুলিকে মাথায় রাখা প্রয়োজন।

আরও পড়ুন: অসচেতন জনতা, ১৫ জেলায় ‘বিপদসঙ্কেত’ দেখছে স্বাস্থ্য দফতর​

আরও পড়ুন: বঙ্গে রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবি সঙ্গত: অমিত

নীতি আয়োগের সদস্য চিকিৎসক বিনোদ পল জানিয়েছেন, শীতে সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। ফলে আগামী উৎসব এবং শীতে বেপরোয়া মনোভাব বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে। তাঁর কথায়, “দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কা সামলানো যাবে কি না, তা আমাদের সবার উপরে নির্ভর করছে। ফলে আগামী দিনে আমাদের সাবধানতা মেনে চলতেই হবে।” কেন্দ্রীয় কমিটির গাণিতিক হিসেবে বেপরোয়া মনোভাব এক মাসে ২৬ লক্ষ সংক্রমণ ঘটাতে পারে।

চিকিৎসক ও বিজ্ঞানীদের এই সতর্কবার্তা জনতা বা উৎসবের উদ্যোক্তারা কতটা মাথায় রেখেছেন তা নিয়ে প্রশ্ন থেকে যায়। সম্প্রতি আহিরিটোলার একটি মণ্ডপের উদ্বোধনের পরে ভিড় নজরে এসেছিল। লেকটাউনের একটি পুজো কমিটি ইতিমধ্যেই পুজোর আলোকসজ্জা শুরু করেছে। সেখানেও মণ্ডপে ভিড় জমতে দেখা গিয়েছে। প্রতিমা নিয়ে যাওয়ার সময়েও মাস্কের দেখা মিলছে না। তবে সন্তোষ মিত্র স্কোয়ার-সহ কয়েকটি পুজো দর্শনার্থীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে। পুজো উদ্যোক্তাদের যৌথ সংগঠন ‘ফোরাম ফর দুর্গোৎসব’-এর সাধারণ সম্পাদক শাশ্বত বসুও বারবার বলছেন, তাঁদের সদস্য পুজো কমিটিগুলি ভিড় নিয়ন্ত্রণ ও সুরক্ষাবিধি মেনেই মণ্ডপ খুলবেন। কিন্তু বাস্তবে পুজোর দিনগুলিতে কী পরিস্থিতি হবে তা নিয়ে, কেউই তেমন নিশ্চিত হতে পারছেন না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE