—ফাইল চিত্র।
বাংলার পরিস্থিতি নিয়ে আবার উদ্বেগ প্রকাশ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মঙ্গলবার এএনআই-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্য— পশ্চিমবঙ্গে যা হচ্ছে, তা গণতন্ত্রে শোভা পায় না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বা তৃণমূলের নাম উচ্চারণ করেননি মোদী। কিন্তু তাঁর স্পষ্ট বার্তা— যাঁরা আজ গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নিচ্ছেন, ফল তাঁদের ভুগতেই হবে।
প্রধানমন্ত্রীর এই মন্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া দিয়েছে তৃণমূল। দলের মহাসচিব তথা রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘এ দিনের সাক্ষাৎকারে রাজনৈতিক হিংসার প্রসঙ্গ উঠতেই মোদী বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের দিকে তাকিয়ে দেখুন। ভারতীয় জনতা পার্টিকে তার গণতান্ত্রিক অধিকারও প্রয়োগ করতে দেওয়া হচ্ছে না। আদালতের দরজায় কড়া নাড়তে হচ্ছে। নির্বাচনে আমাদের দলের কার্যকর্তাদের যে ভাবে মারা হয়েছে, গণতন্ত্রে তা শোভা পায় না।’’ পশ্চিমবঙ্গের মতো কেরল, তামিলনাড়ু, অসম বা ত্রিপুরাতেও বিজেপিকে এই পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হচ্ছে বা হয়েছে বলে মোদী দাবি করেন। তবে, রাজনৈতিক হিংসা প্রসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের নামটাই এ দিন সবচেয়ে উদ্বেগের সঙ্গে উচ্চারণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। রাজনৈতিক হিংসা নিয়ন্ত্রণের জন্য বিভিন্ন রাজ্য সরকারকেও তিনি বার্তা দিয়েছেন, জানান প্রধানমন্ত্রী। এর পরেই কারও নাম না করে মোদীর বার্তা, ‘‘যা হচ্ছে, তা সামনে আসবেই। আজ হয়তো কেউ এ সব করে পার পেয়ে যাচ্ছেন, কিন্তু এক দিন না এক দিন এর ফল পেতেই হবে। আমি এই রাজনৈতিক হিংসার ঘোর নিন্দা করছি।’’
পশ্চিমবঙ্গে রাজনৈতিক হিংসা প্রসঙ্গে এই প্রথম মোদী সরব হলেন, এমনটা নয়। এর আগে দিল্লিতে বিজেপির সদর দফতর থেকে দেওয়া এক ভাষণে রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনে হিংসার অভিযোগ নিয়ে সরব হয়েছিলেন তিনি। দলের সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহও বিভিন্ন অবকাশেবাংলার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। সম্প্রতি বিহারের বিজেপি নেতা তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গিরিরাজ সিংহও বলেছেন, ভারতের রাজ্যগুলোর মধ্যে একমাত্র পশ্চিমবঙ্গেই গণতন্ত্র নেই।
আরও পড়ুন: মন্দির, গোরক্ষক তাণ্ডব, সার্জিক্যাল স্ট্রাইক, রাফাল: খোলামেলা সাক্ষাৎকারে এক অন্য মোদী
আরও পড়ুন: অমিত শাহকে ফাঁসাতে সিবিআইয়ের অপব্যবহার করেছে কংগ্রেস: স্মৃতি
রাজনৈতিক ভাবে পশ্চিমবঙ্গ এই মুহূর্তে বিজেপির কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সে কথা রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের আলোচনায় উঠে আসছে বার বার। আগামী লোকসভা নির্বাচনে হিন্দি বলয়ে বিজেপির ফল খারাপ হওয়ার আশঙ্কা যে রয়েছে, তা বিজেপি নেতারাও আড়ালে আবডালে মানছেন। বিজেপি সেই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে চাইছে মূলত ওডিশা এবং পশ্চিমবঙ্গের মতো পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলি থেকে।এই সব রাজ্যে বিজেপির জনভিত্তি সম্প্রতি উল্লেখযোগ্য ভাবে বেড়েছে। সেই কারণেই বাংলা বা ওডিশাকে এতটা গুরুত্ব দেওয়া। এই দুই রাজ্যের মধ্যে আবার বাংলার গুরুত্ব বেশি বিজেপি নেতৃত্বের কাছে। বাংলায় বিজেপির প্রস্তাবিত গণতন্ত্র বাঁচাও যাত্রা নিয়ে যে জটিলতা তৈরি হয়েছে, তার সমাধান সূত্র খুঁজে বার করার বিষয়টি এখন সরাসরি অমিত শাহ দেখছেন।
নরেন্দ্র মোদীর এ দিনের সাক্ষাৎকারে আরও স্পষ্ট হয়ে গেল, পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি নিয়ে কতটা ভাবিত বিজেপির সর্বভারতীয় নেতৃত্ব।
(পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্ত থেকেবাংলায় খবরজানতে পড়ুন আমাদেররাজ্যবিভাগ।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy