Advertisement
১১ মে ২০২৪

প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে ইন্টার্ন শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে সংশয়ে শিক্ষামন্ত্রী

কংগ্রেস বিধায়ক অসিত মিত্রের প্রশ্ন ছিল, সরকার চলতি শিক্ষাবর্ষে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষক হিসেবে ইন্টার্নদের নিয়োগ করছে কি না? উত্তরে পার্থবাবু জানান, বিষয়টি সরকারের আলোচনার স্তরে রয়েছে।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ জুন ২০১৯ ০১:৩৮
Share: Save:

খোদ মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষিত প্রকল্পও প্রশ্নের মুখে পড়ল বিধানসভায়!

প্রশ্নটা ছিল বিরোধীদের। তার উত্তরে প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত ইন্টার্ন শিক্ষক নিয়োগ প্রকল্পের ভবিষ্যৎ নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সোমবার বিধানসভায় এই সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘‘প্রকল্পটি হবে বলে মনে হচ্ছে না।’’ সেই সঙ্গে সব স্তরের স্কুলে পূর্ণ সময়ের শিক্ষক নিয়োগের পদ্ধতি সরলীকরণের কথাও বলেন তিনি।

কংগ্রেস বিধায়ক অসিত মিত্রের প্রশ্ন ছিল, সরকার চলতি শিক্ষাবর্ষে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষক হিসেবে ইন্টার্নদের নিয়োগ করছে কি না? উত্তরে পার্থবাবু জানান, বিষয়টি সরকারের আলোচনার স্তরে রয়েছে। শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে মামলা হওয়ায় বিভিন্ন স্কুলের পদ পূরণে দেরি হচ্ছিল। তাই যাঁরা সদ্য কলেজের পরীক্ষা পাশ করছেন, তাঁদের ইন্টার্ন শিক্ষক হিসেবে নিয়োগের কথা ভাবা হয়েছিল।

শিক্ষক নিয়োগে টানাপড়েন তো আছেই। সেই সঙ্গে রাজ্য জুড়ে আছে শিক্ষক-পড়ুয়া ভারসাম্যের অভাব। এই পরিস্থিতিতে জানুয়ারির মাঝামাঝি নবান্ন সভাঘরে এক শিক্ষা বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রীকে পাশে বসিয়েই মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, রাজ্যের যে-সব স্কুলে শিক্ষক কম, সেখানে নতুন পাশ করা স্নাতকদের ইন্টার্ন শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ করে পঠনপাঠনের সমস্যা সামাল দেওয়ার কথা ভাবছে রাজ্য সরকার। কেননা কোনও কোনও জায়গায় শিক্ষক আছেন তো ছাত্র নেই। আবার কোথাও ছাত্রছাত্রী আছে, যথেষ্ট শিক্ষক নেই। ভারসাম্যের অভাব আছে। সুন্দরবন, ঝাড়গ্রাম, মেদিনীপুরের পশ্চিমাঞ্চলের কিছু অংশে এবং ডুয়ার্সে এই সমস্যা বেশি। সেই জন্যই ইন্টার্ন শিক্ষক নিয়োগের প্রস্তাব ভেবে দেখা হচ্ছে।

মুখ্যমন্ত্রী এটাও জানিয়েছিলেন যে, প্রাথমিক স্কুলে যাঁরা ইন্টার্নশিপ করবেন, ন্যূনতম যোগ্যতা হিসেবে তাঁদের স্নাতক হতে হবে। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলে পড়াতে চাইলে থাকতে হবে অনার্স বা স্নাতকোত্তর ডিগ্রি। প্রাথমিকে ইন্টার্নদের মাসে ২০০০ টাকা দেওয়া হবে। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের ক্ষেত্রে মিলবে ২৫০০ টাকা। ভাল কাজ করলে ভাতা দ্বিগুণ করা এবং শংসাপত্র দেওয়ার কথাও জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।

সেই ইন্টার্ন শিক্ষক নিয়োগ প্রকল্প নিয়ে এ দিন সংশয় প্রকাশ করলেও শিক্ষামন্ত্রী জানান, সরকার স্থায়ী শিক্ষক নিয়োগের পথেই হাঁটছে। এখন যেখানে (উচ্চ প্রাথমিকে) পরীক্ষা চলছে, সেই প্রক্রিয়া জুলাইয়ে শেষ করার আশ্বাসও দেন পার্থবাবু।

শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে হুটহাট আদালতে যাওয়ার প্রবণতা প্রবল। সেই জন্যই নিয়োগ প্রক্রিয়া পড়েছে দীর্ঘসূত্রতার কবলে। শিক্ষামন্ত্রী জানান, এই নিয়ে অ্যাডভোকেট জেনারেলের সঙ্গে কথা বলে তিনি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবেন। প্রয়োজনে এই ধরনের মামলার ক্ষেত্রে তিনিও আইনজ্ঞদের সঙ্গে আদালতে গিয়ে দাঁড়াবেন। শিক্ষক নিয়োগে অনিয়মের যে-সব অভিযোগ উঠছে, সেগুলো খারিজ করে দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী।

এবিটিএ-র সাধারণ সম্পাদক সুকুমার পাইন বলেন, ‘‘আমরা বারে বারেই বলে আসছি, ইন্টার্ন শিক্ষক নিয়োগের বিষয়টি বাস্তবোচিত নয়। সরকার এখন বুঝতে পারল।’’ তাঁর দাবি, অবিলম্বে শূন্য শিক্ষকপদ পূরণ করুক সরকার। বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির নেতা স্বপন মণ্ডল বলেন, ‘‘আমরা প্রথম থেকেই ইন্টার্ন শিক্ষক নিয়োগের বিরোধিতা করেছি। নিয়োগবিধিতে কিছু বদল দরকার।’’

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Education Partha Chatterjee
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE