দোলের ছুটিতে বেড়াতে গিয়ে মর্মান্তিক পরিণতি এই পরিবারের।
দোলের ছুটিতে দিল্লিতে মেয়ে-জামাইয়ের কাছে বেড়াতে গিয়েছিলেন তমলুকের এক দম্পতি। সেখান থেকে গিয়েছিলেন লখনউ বেড়াতে। পথে এটাওয়ার কাছে দিল্লি-লখনউ জাতীয় সড়কের উপর দুর্ঘটনার কবলে পড়ে তাঁদের গাড়ি। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় চার জনের। মারা গিয়েছেন ওই গাড়ির চালকও।
উত্তরপ্রদেশ পুলিশ জানিয়েছে, একই পরিবারের চার মৃতের নাম শ্রীকান্ত মাইতি (৫১), কবিতা মাইতি (৪৬), অরিজিৎ বিশ্বাস (৩২) এবং অনন্যা বিশ্বাস (২৮)। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, আদতে মহিষাদলের বাসিন্দা শ্রীকান্ত পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসকের দফতরে কর্মরত ছিলেন। স্ত্রী কবিতাকে নিয়ে তিনি তমলুকেই থাকতেন। গত সপ্তাহে আগে স্ত্রীকে নিয়ে শ্রীকান্ত দিল্লিতে গিয়েছিলেন তাঁর একমাত্র মেয়ের বাড়িতে। মেয়ে-জামাই কর্মসূত্রে সেখানেই থাকেন।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন উত্তরপ্রদেশ পুলিশের কাছ থেকে জানতে পেরেছেন, মেয়ে-জামাইকে সঙ্গে নিয়ে একটি গাড়িতে শ্রীকান্তেরা লখনউ ঘুরতে গিয়েছিলেন। বুধবার রাত ১০টা নাগাদ দিল্লি-লখনউ জাতীয় সড়কে দুর্ঘটনায় পড়ে তাঁদের গাড়ি। শ্রীকান্ত এবং তাঁর পরিবারের বাকি তিন জনের সঙ্গে ওই দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় গাড়ির চালকেরও। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর প্রদেশের এটাওয়াতে। সেখানকার পুলিশ দুর্ঘটনার পর মৃতদের সঙ্গে থাকা নথিপত্র এবং মোবাইলের সূত্র ধরে শ্রীকান্তের কয়েক জন বন্ধু এবং সহকর্মীকে ফোন করে। সেই সূত্র ধরেই দুর্ঘটনার খবর জানা যায়।
আরও পড়ুন: ‘কোনও আইনেই বৈধ নয়’, হোর্ডিং কাণ্ডে যোগী সরকারকে ভর্ৎসনা আদালতের
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এটাওয়ার কাছে ওই দিন রাতে শ্রীকান্তদের গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকা একটি ট্রেলারের পিছনে ধাক্কা মারে। চালক কী ভাবে নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছিলেন, তা এখনও স্পষ্ট নয়। কোনও ভাবে তিনি ঘুমিয়ে পড়েছিলেন কি না, সেই সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিতে পারছেন না তদন্তকারীরা। ওই গাড়ির পিছনের আসনে শ্রীকান্ত-কবিতা ছাড়াও ছিলেন জামাই অরিজিৎ। পুলিশ শ্রীকান্তের বন্ধুদের জানিয়েছে, ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ওই তিন জনের। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে মেয়ে অনন্যা এবং গাড়িচালককে। পরে হাসপাতালে ওই দু’জনের মৃত্যু হয়।
শ্রীকান্ত রাজ্য কো-অর্ডিনেশন কমিটির পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য ছিলেন। তাঁর সহকর্মীরা জানিয়েছেন, গত ৭ মার্চ শ্রীকান্ত তাঁ স্ত্রীকে নিয়ে মেয়ের কাছে গিয়েছিলেন। পেশায় ইঞ্জিনিয়ার অরিজিৎ টালিগঞ্জের বাসিন্দা। কিন্তু, কর্মসূত্রে দিল্লিতে থাকতেন। বছরকানেক আগে অরিজিৎ-অনন্যার বিয়ে হয় বলে জানিয়েছেন তাঁর সহকর্মীরা।
আরও পড়ুন: করোনা: এক মাসের জন্য ভিসা বাতিল করল কেন্দ্র, আক্রান্ত বেড়ে ৭৩
শ্রীকান্তদের দেহ কলকাতায় নিয়ে আসার ব্যাপারে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য পুলিশ। নবান্ন সূত্রে খবর, পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে খবর পেয়ে রাজ্য পুলিশের পক্ষ থেকে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। দ্রুত ময়নাতদন্ত এবং আইনি পদ্ধতি মিটিয়ে দেহগুলি পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy