প্রেস ক্লাবে জগদীপ ধনখড়।—নিজস্ব চিত্র।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর যাওয়া নিয়ে শাসক দলের সঙ্গে সংঘাত বেধেছিল রাজ্যপালের। কেন তিনি যাদবপুর গিয়েছিলেন, গত কয়েক দিনে দফায় দফায় সেই ব্যাখ্যা দিয়েছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। এ বার সরাসরিই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হলেন তিনি।
একটি বণিক সভার অনুষ্ঠানে সোমবার রাজ্যপাল বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় খুবই দয়ালু ও নরম মনের মানুষ। আমরা দু’জনেই শপথ নিয়েছি সংবিধান রক্ষা করে সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করার ও রাজ্যকে আরও বেশি সমৃদ্ধ করার।’’ মুখ্যমন্ত্রী তথা রাজ্য প্রশাসনের সঙ্গে রাজভবনের যে কোনও সংঘাত নেই, সেই বার্তাই এ দিন দিতে চেয়েছেন রাজ্যপাল।
ধনখড় যে দিন মুখ্যমন্ত্রী মমতার অনুরোধ না রেখে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভে আটকে পড়া কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়কে ‘উদ্ধার’ করতে গিয়েছিলেন, সে দিনই দিল্লিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠকে রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। শাহ বলেছিলেন, বিষয়টি তিনি দেখবেন। গত কয়েক দিনে রাজ্যপালের সুর নরম করা এবং এ বার মুখ্যমন্ত্রীর প্রশংসার নেপথ্যে দিল্লির কোনও ভূমিকা আছে কি না, রাজনৈতিক শিবিরের অনেকেই সেই জল্পনায় যোগ দিয়েছেন।
বণিকসভার ওই অনুষ্ঠানের আগে কলকাতা প্রেস ক্লাবে এ দিন লোকগানের উপরে কংগ্রেস বিধায়ক সুখবিলাস বর্মার বই এবং সিডি প্রকাশের অনুষ্ঠানে রাজ্যপাল বলেছেন, ‘‘আমাকে কোনও বিষয় বোঝানোর জন্য উচ্চকণ্ঠে চিৎকারের দরকার নেই। যুক্তি থাকলে আমি নিজেই তা বুঝে নেব। আমি আইনজীবী ছিলাম, জোর গলায় সওয়াল অনেক করেছি। কিন্তু বর্তমান ভূমিকায় এসে আর উচ্চকণ্ঠ হই না।’’ তাঁর এই বক্তব্যের মধ্যে আবার শাসক দল-সহ রাজনৈতিক নেতাদের প্রতি প্রচ্ছন্ন বার্তা আছে বলে মনে করছেন অনেকে।
বণিকসভার মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রী মমতার সৌজন্যেরও প্রশংসা করেছেন রাজ্যপাল। তিনি বলেন, ‘‘আমি দায়িত্ব নেওয়ার পরে আমার স্ত্রীকে তাঁর রুচি অনুযায়ী শাড়ি উপহার দিয়েছেন। ওঁর সঙ্গে আমার চেনাশোনা অনেক দিনের।’’ রাজ্যপাল জানান, এর মধ্যে একটি সাক্ষাতকারে তিনি মমতাকে মনে করিয়ে দেন ৩০ বছর আগের কথা। ধনখড় বলেন, ‘‘আমি তখন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। মমতা মাথায় চোট পেয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। কলকাতায় ছিলাম, হাসপাতালে ওঁকে দেখতে গিয়েছিলাম।’’
বাংলার মানুষ, সংস্কৃতির প্রশংসা রাজ্যপালের মুখে শোনা গিয়েছে দুই অনুষ্ঠানেই। তাঁর কথায়, ‘‘রাজ্যপাল হয়ে আসার পরে এই রাজ্যকে, এখানকার মানুষকে জানছি। বাংলায় এসে আমার জীবনে একটা বড় পরিবর্তন হয়েছে। সাংস্কৃতিক ভাবে এত সমৃদ্ধ রাজ্য কোথাও দেখিনি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy