সাগরদিঘীতে তৃণমূল জেলা সভাপতি সুব্রত সাহা, জেলা পুলিশ কর্তাদের সঙ্গে এক মঞ্চে ধৃত বসন্ত সিংহ। —নিজস্ব চিত্র
বুধবার রাতে এক কেজি ইউরেনিয়াম নিয়ে গ্রেফতার হওয়া পাঁচ জনের মধ্যে ছিলেন মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা বসন্ত সিংহ।
সেই বসন্ত সিংহ কে? পুলিশি জেরায় তিনি বলেছিলেন তাঁর বাড়ি বহরমপুরের কাশিমবাজারে।
জেরার মুখেই দাবি করেছিলেন শাসক দলের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের কথা।
সেই তদন্ত করতে গিয়েই বসন্তর ফেসবুক অ্যাকাউন্টে থাকা ছবি দেখে তাজ্জব গোয়েন্দারা।
জেলা তৃণমূলের হেন কোনও নেতা নেই, যাঁর সঙ্গে বসন্তের ঘনিষ্ঠ ছবি নেই। তবে জেলা সভাপতি সুব্রত সাহা, জেলার প্রাক্তন যুব সভাপতি অশেষ ঘোষ— যিনি এখন সূতি থেকে জেলা পরিষদ সদস্য — এই দু’জনের সঙ্গে বসন্তর ঘনিষ্ঠতা অনেক বেশি। প্রাক্তন বিধায়ক ইমানি বিশ্বাসের সঙ্গেও তাঁর একাধিক ছবি পাওয়া গিয়েছে।
মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের অধিকাংশ কর্মী বা ছোট-বড় নেতা বসন্তকে একডাকে চেনেন। তাঁদেরই এক জন বললেন, “সুব্রত সাহা আর অশেষ ঘোষের খুব ঘনিষ্ঠ সঙ্গী হিসাবেই আমরা বসন্তকে চিনি। জেলা পার্টি অফিস থেকে শুরু করে দলের যে কোনও অনুষ্ঠানে এই দুই নেতা থাকলেই বসন্ত সেখানে থাকবেই। এঁদের সঙ্গে এক মঞ্চে সবসময় দেখা যায় বসন্তকে।” তৃণমূল জেলা সভাপতি সুব্রত সাহা যদিও দাবি করেছেন, তিনি কোনওভাবেই চেনেন না বসন্তকে।
আরও পড়ুন: ইউরেনিয়াম নিয়ে কলকাতায় গ্রেফতার ৫
জেলার অন্য এক তৃণমূল কর্মী বলেন, “বসন্তের মূল বাড়ি বহরমপুরের মধুপুরে। গত কয়েক বছর ধরে কাশিমবাজারের বারোয়ারিতলায় ভাড়া থাকে।”
আগে বাম ছাত্র সংগঠন করতেন এই বসন্ত। স্থানীয়দের অভিযোগ, ‘চিটিংবাজি’ নাকি বসন্তের পেশা। আর সেই কারণেই বাড়িছাড়া হয়ে ভাড়ায় থাকেন। তবে জেলার তৃণমূল কর্মীরা একবাক্যে বসন্তের সঙ্গে জেলার তাবড় নেতার, বিশেষ করে জেলা সভাপতি এবং জেলার প্রাক্তন যুব সভাপতির সুসম্পর্কের কথা স্বীকার করেন। আর সেটা ভাঙিয়ে বসন্তের বাড়বাড়ন্তের কথা তাঁরা জানতেন না, এটা কর্মীরা মানতে নারাজ। দলের জেলা সভাপতি সুব্রত সাহা বসন্তের সঙ্গে তাঁর ছবি প্রসঙ্গ শুনেই মেজাজ হারান। তিনি এ ধরণের প্রশ্নের উত্তর দেবেন না বলে জানান।
ইউরেনিয়াম কাণ্ডে ধৃতদের সঙ্গে বসন্ত সিংহ (মাঝে)।
আরও পড়ুন: দেহ ফেলে পুলিশ ব্যস্ত মাপজোকে
অশেষ ঘোষকে বসন্ত নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, “আমি চিনি ওকে। আমি যখন যুব সভাপতি ছিলাম তখন আমার কাছে আসত। বসন্ত তৃণমূল কর্মী। তবে গত বছর দেড়েক ধরে কোনও যোগাযোগ নেই।” তবে অশেষবাবু সেই সঙ্গে এটাও জুড়ে দেন যে, তাঁর সঙ্গে এই ছবিগুলো নাকি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবেই ছড়ানো হচ্ছে। তাঁর দাবি, “খুঁজে দেখুন, আরও অনেক নেতার সঙ্গে বসন্তর অনেক ছবি আছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy