ওয়েইসির সঙ্গে ফুরফুরা শরিফের পিরজাদা আব্বাস সিদ্দিকির বৈঠক। রবিবার হুগলির ফুরফুরা শরিফে। নিজস্ব চিত্র
সংখ্যালঘু ভোটে ভাগ বসিয়ে আসাউদ্দিন ওয়েইসির দল অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (এমআইএম) যে তাদেরই সুবিধা করে দিতে পারে, তা প্রকারান্তরে বুঝিয়ে দিল বিজেপি।
বিহার ভোটের সময়ই মিম-এর প্রধান ওয়েইসি ঘোষণা করেছিলেন, এ বার পশ্চিমবঙ্গের ভোটেও লড়বেন তাঁরা। রবিবার হুগলির ফুরফুরা শরিফে গিয়ে পিরজাদা আব্বাস সিদ্দিকির সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। তাঁদের আলোচনা যে ভোট নিয়েই হয়েছে তা জানিয়ে ওয়েইসি বলেন, ‘‘এ রাজ্যে আসন্ন বিধানসভা ভোটে আব্বাস সিদ্দিকির পিছনে দাঁড়িয়ে আমরা লড়ব। কী ভাবে জোট বাঁধা হবে, ভবিষ্যতের সেই ব্যাপার আব্বাস ঠিক করবেন। উনি যে সিদ্ধান্ত নেবেন, তাতে আমরা তার সঙ্গে থাকব, সমর্থন করব। বাংলায় যেখানে যেখানে এমআইএম সমর্থকেরা আছেন, আব্বাসের সঙ্গে তাঁরা কাজ করবেন।’’ এখনও তাঁর নিজের দল গঠন না হলেও বৈঠকের পরে আব্বাসও জানিয়ে দিয়েছেন, রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনী লড়াই নিয়েই তাঁরা কথা বলেছেন। এ নিয়ে আরও ১০টি দলের সঙ্গে তাঁরা কথা বলছেন।
তার পরেই হুগলির বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভেবেছিলেন ৩০% মুসলিম ভোট নিয়ে ফের রাজ্যে সরকার গঠন করবেন। কিন্তু ওয়েইসিদের আগমন তৃণমূলের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। লকেটের কথায়, ‘‘ওয়েইসি ফুরফুরা শরিফে আসায় তৃণমূলের বুক ধড়ফড়ানি বেড়ে গিয়েছে। নিজেদের পকেটে থাকা লোক বেরিয়ে যাচ্ছে বলে খুব কষ্ট হচ্ছে।’’ সেই সঙ্গেই লকেটের আরও দাবি, ‘‘কোনও খান, কুরেশি, ওয়েইসি, ফুরফুরা শরিফ সরকার গঠন করবে না। বিজেপি একক ভাবে সরকার গড়বে।’’ রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, এমআইএম সংখ্যালঘু ভোটে ভাগ বসালে বিজেপির যে সুবিধা হতে পারে, লকেটের এই মন্তব্যে সেই ‘প্রত্যাশা’ই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে।
আরও পড়ুন: শোভন-বৈশাখীর সোমবারের বাইক র্যালিতে অনুমতি নয়, জানাল লালবাজার
বিজেপির এই ‘প্রত্যাশা’কে আসলে তাদের নির্বাচনী কৌশল হিসেবে চিহ্নিত করেছে তৃণমূল। তবে সেই সম্ভাবনা খারিজ করে তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেন, ‘‘এ রাজ্যে এমআইএম-এর মতো দলের কোনও প্রভাব নেই। তবে বিজেপির মদতে তারা সংখ্যালঘু ভোট ভাগ করে বিজেপিরই সুবিধা করে দিতে চাইছে।’’ এই প্রসঙ্গে সৌগতবাবু বিহারের সাম্প্রতিক নির্বাচনে এমআইএম-এর ভূমিকা ব্যাখ্যা করেছেন।
আরও পড়ুন: বাংলায় কত ভোট পাবে তৃণমূল? অভ্যন্তরীণ হিসেবে স্বস্তিতে ঘাসফুল
ওয়েইসি অবশ্য বিজেপির সঙ্গে তাঁদের রাজনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগ নাকচ করে বলেন, ‘‘যখন গুজরাত জ্বলছিল, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কোথায় ছিলেন? আমরা পশ্চিমবঙ্গে এ বার লোকসভা ভোটে লড়াই করিনি। বিজেপির ১৮ জন জিতে গেলেন কী করে? আপনি সমঝোতা করেছিলেন?’’ তাঁর কটাক্ষ, ‘‘এ রাজ্যে বিজেপিকে আটকাতে পারছে না তৃণমূল। তৃণমূল থেকে অনেকে বেরিয়ে যাচ্ছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy