নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে মমতার তোপকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেন অমিত শাহ। —নিজস্ব চিত্র।
তোপ দাগলেন অমিত শাহ। নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ প্রসঙ্গে প্রবল উষ্মা উগরে দিলেন। দিল্লি থেকে দু’জনকে পাঠিয়ে বাংলায় সমান্তরাল সরকার চালানোর চেষ্টা হচ্ছে বলে যে মন্তব্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রবিবার করেছেন, সোমবার তার তীব্র নিন্দা করে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতির প্রশ্ন— নিজে যখন জিতেছিলেন, তখন কতজন অফিসারকে সরানো হয়েছিল? তখন মনে হয়নি সমান্তরাল সরকার চলছে? সোমবার এ রাজ্যে পর পর চারটি নির্বাচনী সভা করতে যাওয়ার আগে, নিউ টাউনের এক বেসরকারি হোটেলে সাংবাদিক বৈঠক ডেকেছিলেন অমিত। সেখানেই নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে মমতার তোপকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেন তিনি।
ভোট মরসুম যত গড়াচ্ছে, নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে তত বেশি অসন্তোষ প্রকাশ করছে তৃণমূল। এত দিন কমিশনকে চিঠি দিয়ে এবং দলের কোনও গুরুত্বপূর্ণ নেতাকে দিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করিয়ে কমিশনের নানা সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করছিল তৃণমূল। এ বার দলের চেয়ারপার্সন তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী নিজে সুর চড়াতে শুরু করেছেন। রবিবার নদিয়ার গয়েশপুরের জনসভায় মমতা বলেন, ‘‘দিল্লি থেকে দু’টো লোক পাঠিয়ে সরকার চালাচ্ছেন। তাঁরা রাজ্যের সব অফিসার বদলে দিচ্ছেন। চেষ্টা করছেন বিজেপিকে কী ভাবে সাহায্য করা যায়।’’
এই প্রসঙ্গেই সোমবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তীব্র আক্রমণ করেছেন অমিত শাহ। আনন্দবাজারের প্রশ্নের উত্তরে এ দিন তিনি প্রথমে কটাক্ষের সুরে বলেন, ‘‘উনি (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) ভুলে যাচ্ছেন যে, উনি যে ভোটে জিতে ক্ষমতায় এসেছিলেন, সে ভোটে নির্বাচন কমিশন কতজন অফিসারকে সরিয়ে দিয়েছিল।’’ ২০১১-র সেই নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে অমিত শাহ প্রশ্ন করেন, ‘‘তখন কী হয়েছিল? তখনও কি সমান্তরাল সরকারই মনে হয়েছিল?’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রবিবার বলেছিলেন, ‘‘রাজ্যে একটা নির্বাচিত সরকার আছে। আপনারা ভোট দিয়ে আমাদের নির্বাচন করেছেন। রাজ্য সরকারকে বাদ দিয়ে দিল্লি থেকে লোক পাঠিয়ে সমান্তরাল একটা সরকার চালানোর চেষ্টা হচ্ছে। এটা অসাংবিধানিক। অগণতান্ত্রিক।’’
আরও পড়ুন: ‘বাংলায় সমান্তরাল সরকার চালাচ্ছে, বদলা নেব’, নির্বাচন কমিশনকে তীব্র আক্রমণ মমতার
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই মন্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করেছেন অমিত শাহ। ২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের সময়ে কমিশন পশ্চিমবঙ্গে আরও অনেক বেশি আধিকারিককে সরিয়ে দিয়েছিল— স্মৃতি উস্কে দিতে চেয়েছেন অমিত শাহ। সে বার কমিশন কতজনকে সরিয়েছিল, আর এ বার কী হয়েছে, তার তথ্য-পরিসংখ্যান হাতে নিয়ে কথা বলা উচিত— পরামর্শ বিজেপি সভাপতির। বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে তীব্র কটাক্ষ করে তাঁর মন্তব্য, ‘‘যখনই আপনার গুন্ডামি রোখার চেষ্টা হচ্ছে, যখন আপনার রিগিং রোখার চেষ্টা হচ্ছে, তখনই আপনি সমান্তরাল সরকার দেখতে পাচ্ছেন!’’
আরও পড়ুন: ছক বদলালেন বিবেক, বাহিনী ৯২% বুথেই
বিজেপির অঙ্গুলিহেলনেই বাংলায় এই সব বদলি চলছে বলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। এ দিন সে তত্ত্ব সম্পূর্ণ নস্যাৎ করেছেন শাহ। নির্বাচন কমিশন যদি পক্ষপাতিত্ব নিয়েই কাজ করবে, তা হলে অন্যান্য রাজ্য থেকেও তো একই অভিযোগ উঠবে— মন্তব্য বিজেপি সভাপতির। অন্য কোনও রাজ্য থেকে কেন এই রকম অভিযোগ আসছে না? প্রশ্ন তাঁর।
(পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলার খবর এবং বাংলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকেবাংলায় খবরপেতে চোখ রাখুন আমাদেররাজ্যবিভাগে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy