Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
State News

নিজের বাড়িতেই আক্রান্ত লকেট, মারধর দমদমেও

আক্রান্ত হুগলির বিজেপি প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায়। শুক্রবার সকালে লকেটের ঘরে ঢুকে ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়েছে একদল দুষ্কৃতী।

আক্রান্ত বিরোধী নেতা-নেত্রীরা। বিজেপি প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায়ের ঘরে চলল তাণ্ডব। মেরে মাখা ফাটানো হল দলের জেলা সম্পাদক চণ্ডীচরণ রায়ের। —নিজস্ব চিত্র।

আক্রান্ত বিরোধী নেতা-নেত্রীরা। বিজেপি প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায়ের ঘরে চলল তাণ্ডব। মেরে মাখা ফাটানো হল দলের জেলা সম্পাদক চণ্ডীচরণ রায়ের। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০১৯ ১৯:২৬
Share: Save:

বিরোধী দলের প্রার্থীদের উপরে হামলার তালিকা আরও লম্বা হল। এ বার আক্রান্ত হুগলির বিজেপি প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায়। শুক্রবার সকালে লকেটের ঘরে ঢুকে ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়েছে একদল দুষ্কৃতী। তছনছ করা হয়েছে গোটা ঘর। তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করে রাজ্যের শাসক দলকে তীব্র আক্রমণ করেছেন লকেট। অন্য দিকে, দমদম লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী শমীক ভট্টাচার্যের কেন্দ্রীয় নির্বাচনী কার্যালয়ে হামলা চালানো হয়। মেরে জেলা সম্পাদক চণ্ডীচরণ রায়ের মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ। তবে দু’টি ঘটনাতেই স্থানীয় তৃণমূলের দাবি, বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই এমনটা ঘটেছে।

হুগলিতে টিকিট পাওয়ার পর থেকে নির্বাচনী প্রচারের সুবিধার জন্য ওই লোকসভা কেন্দ্রেই থাকছেন বিজেপি মহিলা মোর্চার রাজ্য সভানেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়। ব্যান্ডেলে একটি বাড়ি ভাড়া নিয়েছেন তিনি। এ দিন সেই বাড়িটিই আক্রান্ত হয়েছে। প্রথমে ইট-পাটকেল ছুড়ে হামলা শুরু হয়েছিল বলে অভিযোগ। গৃহকর্তার পরিবার এবং লকেটের সঙ্গীরা তার প্রতিবাদ করতেই বাড়িতে ঢুকে ভাঙচুর শুরু হয় বলে বিজেপির তরফে জানানো হয়েছে। বাড়িটির দোতলার একটি ঘরে থাকেন লকেট। সেই ঘরে ঢুকে টিভি, কম্পিউটার-সহ বিভিন্ন আসবাব ভেঙে দেওয়া হয়েছে। জামাকাপড়, ওষুধ-সহ নানা প্রয়োজনীয় জিনিস নষ্ট করে ঘর তছনছ করা হয়েছে বলে অভিযোগ।

হামলার পরে লকেট চট্টোপাধ্যায় এ দিন আনন্দবাজারকে বলেছেন, ‘‘রোজ গভীর রাত পর্যন্ত বেশ কয়েক জন বাইক নিয়ে এই বাড়িটার সামনে দাঁড়িয়ে থাকত। কয়েক দিন লক্ষ্য করার পরে এক দিন আমরা জিজ্ঞাসা করি তাদের, কেন তারা দাঁড়িয়ে থাকে। উত্তর না দিয়ে পালিয়ে যায়। তার পরে কালকে ওই এলাকায় আমাদের সমস্ত পতাকা-পোস্টার ছিঁড়ে দেয়। আমি আজ কর্মীদের বলি, আবার নতুন করে, পতাকা-পোস্টার লাগাও। দেখি কত বার নষ্ট করে। নতুন করে পতাকা লাগানোর পরেই উত্তেজনা বাড়তে থাকে। তৃণমূলের লোকজন বাড়ির সামনে জড়ো হয়ে একনাগাড়ে কটূক্তি করতে থাকে। প্রতিবাদ করতেই হামলা শুরু হয়।’’

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

লকেট জানান, হামলাকারীদের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য তাঁর সঙ্গীরা এবং ওই বাড়ির লোকজন একটি ঘরের মধ্যে তাঁকে ঢুকিয়ে দরজা বন্ধ করে দিয়েছিলেন। কিন্তু যে ঘরে তিনি থাকেন, দোতলায় উঠে দুষ্কৃতীরা সেই ঘরে তাণ্ডব চালিয়েছে বলে লকেটের দাবি। তিনি বলেন, ‘‘সকালে খেয়ে প্রচারে বেরোব বলে ভাত রান্না হয়েছিল। সেই ভাতও ফেলে দিয়ে গিয়েছে। হুগলিতে আমাদের জনসমর্থন বাড়তে দেখে ভয় পেয়ে গিয়েছে। তাই এ বার হামলা শুরু করেছে।’’

আরও পড়ুন: নিখোঁজের পিছনে ব্যক্তিগত কারণ? নদিয়ার নির্বাচনী নোডাল অফিসার রহস্যে নয়া সূত্র পেল পুলিশ

লকেটের ঘরে ঢুকে ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়েছে একদল দুষ্কৃতী। তছনছ করা হয়েছে গোটা ঘর। —নিজস্ব চিত্র।

বিষয়টি নিয়ে তৃণমূলের তরফে কোনও আনুষ্ঠানিক বিবৃতি এখনও পাওয়া যায়নি। তবে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, বিজেপির অভ্যন্তরীণ লড়াইয়ের জেরেই এই ঘটনা ঘটেছে।

অন্য দিকে দমদমের বিজেপি প্রার্থী শমীক ভট্টাচার্যের অভিযোগ, এ দিন দুপুর আড়াইটে নাগাদ গোরাবাজারে তাঁর কেন্দ্রীয় নির্বাচনী কার্যালয়ে হামলা চালায় তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। ওই হামলায় গুরুতর জখম হন দলের জেলা সম্পাদক চণ্ডীচরণ রায়। দমদম থানায় করা লিখিত অভিযোগে চণ্ডীচরণবাবু জানিয়েছেন, এ দিন দুপুরে ওই দলীয় কার্যালয়ে তাঁরা তিন জন ছিলেন। তাঁর বাকি দুই সহকর্মী বাড়ি গিয়েছিলেন খেতে। সেই সময় মুখ ঢাকা অবস্থায় চার থেকে পাঁচ জন দুষ্কৃতী দলীয় কার্যালয়ে ঢোকে। কার্যালয়ের শাটার নামিয়ে রড এবং কাঠের টুকরো দিয়ে তাঁকে বেধড়ক মারধর করা হয়। মাথায় গুরুতর আঘাত পান ওই বিজেপি নেতা। তিনি একটি বেসরকারি হাসপাতালে এই মুহূর্তে চিকিৎসাধীন।

আরও পড়ুন: হেমন্ত করকরে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য, সাধ্বী প্রজ্ঞার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু কমিশনের

আহত চণ্ডীচরণ রায়। —নিজস্ব চিত্র।

এ বিষয়ে স্থানীয় তৃণমূল নেতা বরুণ নট্টকে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘আমরা সৌগত রায়কে নিয়ে প্রচারে ব্যস্ত ছিলাম। তৃণমূলের সঙ্গে এই ঘটনার কোনও যোগ নেই। এটা বিজেপির গোষ্ঠী কোন্দলের জের।’’

এর আগে কোচবিহারের ফরওয়ার্ড ব্লক প্রার্থী গোবিন্দ রায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। আক্রান্ত হয়েছিলেন আসানসোলের সিপিএম প্রার্থী গৌরাঙ্গ চট্টোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার ভোটগ্রহণ চলাকালীন রায়গঞ্জে আক্রান্ত হন সেখানকার বিদায়ী সাংসদ তথা সিপিএম প্রার্থী মহম্মদ সেলিম। সব ক্ষেত্রেই অভিযোগের আঙুল উঠেছিল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। এ দিনের দু’টি ঘটনাতেও বিরোধীদের অভিযোগ তৃণমূলের দিকেই।

(পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্ত থেকেবাংলায় খবরজানতে পড়ুন আমাদেররাজ্যবিভাগ।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE