হুঙ্কার: তৃণমূলের জনসভায় দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার বেলডাঙায়। ছবি: সঞ্জীব প্রামাণিক
অভিযোগটা তুলেছিলেন উত্তরবঙ্গ সফরেই। সোমবার, বছরের প্রথম দুপুরে, একদা কংগ্রেসের খাসতালুক মুর্শিদাবাদে এসে কংগ্রেসের আরএসএস যোগের সেই অভিযোগের তির ফের তূণ থেকে বার করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
অভিযোগ করলেন, এ জেলার দুই কংগ্রেস প্রার্থী আদতে আরএসএসের ‘ছায়া’য় লড়াই করছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। সেই ব্যাপারে ‘স্পষ্ট তথ্য’ও যে রয়েছে তাঁর কাছে, দুপুর রোদে মাঠ বোঝাই জনতার সামনে সেই দাবিও জানিয়ে গেলেন তিনি।
এ দিন মুর্শিদাবাদের বেলডাঙার সিআরজিএস মাঠে এবং ভগবানগোলার লিয়াকতনগরে— দু’টি জনসভা থেকেই তৃণমূল নেত্রী বলেন, ‘‘আরএসএস সদলে বাংলায় এসে কংগ্রেসের হয়ে দু’টি আসনে খাটছে।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
বেলডাঙায় মমতা বলেন, ‘‘বিজেপি-কংগ্রেস আঁতাঁতের স্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে আমার কাছে। এ জেলায় জঙ্গিপুর আসনে কংগ্রেসের প্রার্থী হয়েছেন প্রণববাবুর ছেলে অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়। বাবা গিয়েছিলেন নাগপুরে আরএসএস দফতরে, তারই পুরস্কার পাচ্ছেন কংগ্রেস প্রার্থী। বহরমপুরে অধীরের হয়েও নেমে পড়েছে আরএসএস।’’
বৈশাখের রোদে পুড়েও ভগবানগোলার মাঠ উপচে পড়েছিল মমতার তির কোন দিকে ছোটে, তা দেখার জন্য। তাঁদের কাছেও তৃণমূল নেত্রী জানিয়ে গেলেন, ‘‘কংগ্রেসের ওই দুই প্রার্থীকে বলি, মুখ খোলাবেন না। আপনারাও ভেবে দেখুন, এঁদের ভোট দিলে পরোক্ষে আরএসএসকেই প্রশ্রয় দেওয়া হবে কি না!’’
অধীর অবশ্য মমতার মন্তব্য শুনে বলছেন, ‘‘মমতা নিজেই তো দু’বার বিজেপির সঙ্গে ঘর করেছে। সেই কালি মুছতেই এখন আমাদের বিরুদ্ধে এই অপপ্রচার।’’ অভিজিতের কথায়, ‘‘মমতা কি আমাদের ফোন ট্যাপ করছেন? না-হলে এ তথ্য জানলেন কী করে!’’
প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীরের বিরুদ্ধে মমতার রোষের ঝাঁঝ এ দিনও স্পষ্ট হয়েছে বারবার। মমতা বলেন, ‘‘মনে রাখবেন, বেশ কয়েকটি খুনের মামলা এখনও ঝুলে রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।’’ মমতার কটাক্ষ, ‘‘কই, এক বারও তো তাঁকে ইডি-সিবিআই লেলিয়ে দেওয়ার বিরোধিতা করতে দেখলাম না!’’
বহরমপুরের টানা চার বারের সাংসদ অধীর-বধ যে তাঁর পাখির চোখ, এ দিনও তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন মমতা। অধীরকে পরাজিত করলে বহরমপুরের মানুষের কাছে তিনি যে কল্পতরু হয়ে উঠতেও কসুর করবেন না, খোলাখুলিই বলছেন তিনি— ‘‘মনে রাখবেন, অধীর চৌধুরীকে হারিয়ে আসনটি অপূর্ব সরকারের হাতে তুলে দিলে বহরমপুর যা চাইবে, তা-ই দেবো।’’
অধীর-অভিজিৎ-আএসএসের পাশাপাশি মমতার আক্রমণের তালিকায় ছিল মোদীর ‘মিথ্যাচার’, সিপিএমের ‘ভীরুতা’ কিংবা কংগ্রেসের ‘গটআপ ম্যাচ’ খেলা। নাম না-করে এ দিন দু’টি সভাতেই মমতার প্রশ্ন, ‘‘আগাম খবর থাকা সত্ত্বেও পুলওয়ামা কাণ্ড হতে দিয়েছেন কেন?’’ সংখ্যালঘু প্রভাবিত মুর্শিদাবাদের মানুষকে আশ্বস্ত করেছেন, ‘‘এখানে কোনও নাগরিক পঞ্জির ভয় নেই।’’ মাঠ ভরা উল্লাস থিতিয়ে যাওয়ার আগেই ফের মনে করিয়ে দেন মমতা, ‘‘খেয়াল রাখবেন, আপনার আঙুল যেন জোড়াফুলেই চাপ দেয়!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy