Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

আসন সমঝোতার জট কাটাতে রাহুলের সঙ্গে কথা অধীরের, চিঠি সোমেনের

সোমেনবাবু থেকে অধীরবাবু, সকলেই দলীয় হাইকম্যান্ডকে জানিয়েছেন, সমঝোতা না হলে প্রয়োজনে একা লড়াই হোক। কিন্তু তৃণমূলের সঙ্গে কোনও আঁতাঁতের রাস্তায় তাঁরা যেতে চান না।

জট কাটাতে সরাসরি রাহুল গাঁধীর হস্তক্ষেপ চাইছেন প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব। ছবি: এপি।

জট কাটাতে সরাসরি রাহুল গাঁধীর হস্তক্ষেপ চাইছেন প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব। ছবি: এপি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০১৯ ০৪:২৯
Share: Save:

বাংলায় লোকসভা নির্বাচনে সিপিএমের সঙ্গে আসন সমঝোতার জট কাটাতে সরাসরি রাহুল গাঁধীর হস্তক্ষেপ চাইছেন প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব। সমঝোতার গোটা প্রক্রিয়া কোথায় আটকে আছে, তা বিস্তারিত জানিয়ে রাহুলকে চিঠি পাঠিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র। আবার কংগ্রেস সভাপতি রাহুলও প্রদেশ কংগ্রেসের প্রচার কমিটির চেয়ারম্যান অধীর চৌধুরীকে ডেকে পাঠিয়ে বাংলার পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা সেরেছেন। সোমেনবাবু থেকে অধীরবাবু, সকলেই দলীয় হাইকম্যান্ডকে জানিয়েছেন, সমঝোতা না হলে প্রয়োজনে একা লড়াই হোক। কিন্তু তৃণমূলের সঙ্গে কোনও আঁতাঁতের রাস্তায় তাঁরা যেতে চান না।

দিল্লিতে দু’দিনের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে আলোচনা করে সিপিএম শেষ পর্যন্ত জানিয়ে দিয়েছে, বাংলায় দু’দলের জেতা যে ৬টি আসন রয়েছে, তার কোনওটায় কেউ কারও বিরুদ্ধে প্রার্থী দেবে না— এই বোঝাপড়ার ভিত্তিতেই তারা কংগ্রেসের সঙ্গে আসন ভাগাভাগি করতে চায়। একই দিনে অধীরবাবুর কাছে বাংলায় দলের সাংগঠনিক অবস্থা এবং সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে খোঁজ নিয়েছেন রাহুল। মুর্শিদাবাদ আসন নিয়ে জটিলতা কেন, তা-ও জানতে চেয়‌েছেন কংগ্রেস সভাপতি। অধীরবাবু তাঁকে জানিয়েছেন, গত বার জিতেছিল বলে মুর্শিদাবাদ আসনের উপরে সিপিএমের দাবি স্বাভাবিক। কিন্তু মাঝের পাঁচ বছরে মুর্শিদাবাদ জেলার রাজনীতিতে অনেক পরিবর্তন এসেছে। প্রথমে কংগ্রেস ভেঙেছে তৃণমূল। এখন আবার তৃণমূল এবং সিপিএম ছেড়ে কর্মীরা কংগ্রেসে যোগ দিচ্ছেন। মুর্শিদাবাদ কেন্দ্রে কংগ্রেস কর্মীদের সিপিএমের প্রতীকে ভোট দিতে রাজি করানো মুশকিল, এই কথাই রাহুলকে জানিয়েছেন প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। তবে হাইকম্যান্ডের সিদ্ধান্তই যে চূড়ান্ত, সে কথাও বলেছেন তিনি।

পরে অধীরবাবু বলেন, ‘‘রাহুলজি যা যা জানতে চেয়েছিলেন, ওঁকে বলেছি। তার পরে যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার, তিনি নেবেন।’’ শেষ পর্যন্ত কংগ্রেস বাংলায় তৃণমূলের হাত ধরতে পারে বলে নানা মহলে যে গুঞ্জন চলছে, সেই প্রসঙ্গে রাহুলের সঙ্গে তাঁর কোনও আলোচনা হয়নি বলে অধীরবাবুর বক্তব্য। রাহুলের সঙ্গে বৈঠক সেরে বেরোনোর পথে এ দিন বহরমপুরের কংগ্রেস সাংসদের আলাপ হয়েছে প্রিয়ঙ্কা বঢরার সঙ্গেও। কংগ্রেসের একাংশের ধারণা, এর পরে রাহুলের কাছে ডাক পড়তে পারে দীপা দাশমুন্সিরও।

অধীরবাবুর সুরেই সোমেনবাবু তাঁর চিঠিতে জানিয়েছেন, রায়গঞ্জ, উত্তর ও দক্ষিণ মালদহ, জঙ্গিপুর, বহরমপুর, মুর্শিদাবাদ ও পুরুলিয়া— এই সাতটি লোকসভা আসনের বাইরে রাজ্যে কংগ্রেসের ভোট-শতাংশ খুবই কম। তাই বামেদের সঙ্গে সমঝোতা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। কিন্তু জট পেকে রয়েছে রায়গঞ্জ ও মুর্শিদাবাদ নিয়ে।সিপিএম ওই দুই আসন ছাড়বে না জেনে এ দিন রাতে প্রদেশ কংগ্রেসের তরফে বলা হয়েছে, কিছু এলাকায় ঐতিহাসিক ভাবে কংগ্রেসের প্রভাব রয়েছে এবং সেখানে দলের কর্মীদের মনোভাব অবজ্ঞা করা কঠিন। তবে সিপিএমের সঙ্গে ফের আলোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

সোমেনবাবুএ দিন টুইটও করেছেন, ‘‘বোঝাপড়া এমন হওয়া উচিত নয়, যাকে সুবিধাবাদী সমঝোতা মনে হয়। পাকাপাকি ভোট হওয়া উচিত এবং সেটা অন্তত ২০২১ সালের রাজ্য বিধানসভা ভোট পর্যন্ত থাকা উচিত। এই মনোভাব না থাকলে কংগ্রেসের একা লড়াই ভাল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE