Advertisement
১০ মে ২০২৪

ইদ-মঞ্চ থেকেও ইভিএম কারচুপি নিয়ে সরব মুখ্যমন্ত্রী

বুধবার সকালে রেড রোডে ইদের নমাজ উপলক্ষ্যে সমাবেশে প্রতিবারের মতো এ বারও যোগ দেন মুখ্যমন্ত্রী। সঙ্গে ছিলেন সাংসদ-ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, জাভেদ খান প্রমুখ। সেখানে বক্তৃতায় সংখ্যালঘুদের সমর্থন পেয়েছেন বলে তাঁদের অভিনন্দন জানান মুখ্যমন্ত্রী।

ইদের নমাজে মুখ্যমন্ত্রী। বুধবার রেড রোডে। ছবি: রণজিৎ নন্দী

ইদের নমাজে মুখ্যমন্ত্রী। বুধবার রেড রোডে। ছবি: রণজিৎ নন্দী

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ জুন ২০১৯ ০৩:১৫
Share: Save:

ইদ উদ্‌যাপনের মঞ্চ থেকেও লোকসভা ভোটের ইভিএম কারচুপির অভিযোগ নিয়ে সরব হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপির নাম না করে তাঁর দাবি, ‘‘ইভিএম দখল করে যত দ্রুত ক্ষমতায় এসেছে, ঠিক তত দ্রুত ক্ষমতা থেকে চলে যাবে।’’ সমবেত জনতার প্রতি তাঁর আশ্বাস, ‘‘আপনারা সঙ্গে থাকলে, দেখবেন সব লড়াই লড়ব। ভয়ের কিছু নেই। ইনসাফ (সুবিচার) আপকো মিলেগা।’’

বুধবার সকালে রেড রোডে ইদের নমাজ উপলক্ষ্যে সমাবেশে প্রতিবারের মতো এ বারও যোগ দেন মুখ্যমন্ত্রী। সঙ্গে ছিলেন সাংসদ-ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, জাভেদ খান প্রমুখ। সেখানে বক্তৃতায় সংখ্যালঘুদের সমর্থন পেয়েছেন বলে তাঁদের অভিনন্দন জানান মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘আপনারা রাজ্যকে সাহায্য (মদত) করেছেন, আশীর্বাদ করেছেন। শুভেচ্ছা রেখেছেন। রাজ্য ও দেশের উন্নয়নের জন্য সহযোগিতা করেছেন। তার জন্য আমি একা নই, গোটা বাংলার তরফে আমি ধন্যবাদ জানাচ্ছি। কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।’’

এ বারের ভোটে কলকাতা-সহ নানা এলাকায় যে ধর্মীয় মেরুকরণের কিছুটা লক্ষণ দেখা গিয়েছে তা ইতিমধ্যে পরিষ্কার। খাস কলকাতা শহরেই সংখ্যালঘু অধ্যুষিত
এলাকাগুলিতে তৃণমূলের ফল অনেকটাই ভাল। শহরের দুই কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থীদের জয়ের পিছনে তা এই ভোট ভাগাভাগির তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রয়েছে বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা মনে করেন। জেলাগুলির ক্ষেত্রে বিজেপির অগ্রগতির পিছনে অন্যান্য বিষয়, তৃণমূল সম্পর্কে ক্ষোভ, শাসকদলে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব
ইত্যাদি কাজ করলেও ধর্মীয় মেরুকরণ একেবারে হয়নি তা বলা যায় না। সব মিলিয়ে তাই মমতার এ দিনের বক্তব্যে সংখ্যালঘুদের ঢালাও প্রশংসা রাজনৈতিক মহলের দৃষ্টি এড়ায়নি।

এ দিন বক্তৃতায় বিজেপির নাম না নিলেও তাদের নির্বাচনী সাফল্যকে ‘সাময়িক’ হিসাবে উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘‘কখনও সূর্যের তেজ তীব্র হয়। আবার চলেও যায়।’’ এর পরেই মমতার হুঁশিয়ারি, ‘‘যারা আমার সঙ্গে টক্কর নেবে, তারা চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যাবে— হম সে যো টকরায়েগা, চুরচুর হো যায়েগা।’’ তিনি বলেন, ‘‘এত ভয়ের কিছু নেই। যে ভয় পায় তার মৃত্যু হয়। যে লড়াই করে, সেই সফল হয়।’’ বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘তৃণমূল দলটাই চুরচুর হয়ে ভেঙে যাবে। মুখ্যমন্ত্রী আগে তা সামাল দিন।’’

ইদের শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘‘বাংলার মাটি সকলের। এই মাটি গাঁধী, নেতাজি, মৌলানা আজাদের। এই মাটি রবীন্দ্রনাথ , নজরুল, বিদ্যাসাগরের।’’ বক্তৃতার শেষে তিনি ‘জয় বাংলা’, ‘জয় হিন্দ’ ও ‘জয় ভারত’ স্লোগান দেন। মমতা তাঁর ফেসবুক-টুইটার প্রোফাইলেও বাংলার মনীষীদের ছবি ব্যবহার করে ‘জয় হিন্দ’ ‘জয় বাংলা’ লিখেছেন।

মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তৃতার পিছনে ‘সাম্প্রদায়িক রাজনীতি’ দেখছে বিজেপি। দিলীপবাবু বলেন, ‘‘ইদের মঞ্চে এ সব কথা বলে মুখ্যমন্ত্রী সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করছেন।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী আমাদের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক রাজনীতির অভিযোগ করেন। অথচ তিনিই ধর্মের মঞ্চে গিয়ে রাজনীতির কথা বলেন ও রাজনীতির মঞ্চে ধর্মের কথা বলেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Eid Mamata Banerjee
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE