Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

উদ্বাস্তু কলোনিতে জমির মালিকানা দেবেন মুখ্যমন্ত্রী

স্বাধীনতার পর থেকে পূর্ব পাকিস্তান থেকে লক্ষ লক্ষ উদ্বাস্তু এ রাজ্যে আশ্রয় নিয়েছিলেন। দক্ষিণে বারুইপুর থেকে উত্তরে কাঁচরাপাড়া পর্যন্ত রেললাইনের দু’পাড়ে গড়ে উঠেছিল উদ্বাস্তু কলোনি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ জানুয়ারি ২০১৯ ০৩:১২
Share: Save:

পূর্ব পাকিস্তান থেকে আসা উদ্বাস্তু ও পরে বাংলাদেশ থেকে আসা শরণার্থীদের হাতে এ বার কলোনির জমির অধিকার তুলে দেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। সোমবার নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘প্রথম দফায় ৯৪টি কলোনির বাসিন্দাদের হাতে সেখানকার জমির অধিকার তুলে দেওয়া হবে। পরের ধাপে আরও ২৩৭টি কলোনির জমির মালিকানা পাবেন বাসিন্দারা।’’ বেশ কিছু উদ্বাস্তু কলোনি আদতে কেন্দ্রীয় সরকারের জমিতে গড়ে উঠেছিল। সেই জমির অধিকারও যাতে বাসিন্দাদের হাতে দেওয়া যায়, মুখ্যমন্ত্রী সে জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে চিঠি দেবেন বলে জানিয়েছেন। এতে লক্ষাধিক মানুষ উপকৃত হবেন বলে নবান্নের দাবি।

স্বাধীনতার পর থেকে পূর্ব পাকিস্তান থেকে লক্ষ লক্ষ উদ্বাস্তু এ রাজ্যে আশ্রয় নিয়েছিলেন। দক্ষিণে বারুইপুর থেকে উত্তরে কাঁচরাপাড়া পর্যন্ত রেললাইনের দু’পাড়ে গড়ে উঠেছিল উদ্বাস্তু কলোনি। উদ্বাস্তুদের নাগরিক স্বাচ্ছন্দ্য দিতে আলাদা উদ্বাস্তু পুনর্গঠন দফতরও তৈরি করেছিল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। সেই দফতরের কাজ ছিল, সরকারি জমিতে উদ্বাস্তুদের জমির ব্যবস্থা করে রাস্তা, জল, আলোর মতো পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া।

কিন্তু সরকার সেই সময় উদ্বাস্তুদের হাতে জমির মালিকানা দেয়নি। মূলত ঠিকা প্রজা হিসেবে তাঁরা বসবাস শুরু করেন। পরবর্তী কালে কোথাও কোথাও দীর্ঘমেয়াদি লিজের ব্যবস্থাও করা হয়। নবান্নের কর্তারা জানাচ্ছেন, স্বাধীনতা-উত্তর সময়ে গড়ে ওঠা কলোনিগুলির সেই আগের চেহারা আর নেই। কয়েক দশক পরে দরমার বেড়া, টিন-টালির ছাউনির কলোনি এখন পুরোদস্তুর শহরে পরিণত হয়েছে। কিন্তু কয়েকটি প্রজন্ম এ রাজ্যে কাটানোর পরেও বহু এলাকাতেই জমির মালিকানা পাননি উদ্বাস্তু পরিবারগুলি বা তাঁদের উত্তরসুরিরা। মমতা সরকার এ বার সেই ব্যবস্থাই করছে।

মুখ্যমন্ত্রী জানান, ৯৪টি কলোনিতে শুধু যে উদ্বাস্তুরা রয়েছেন তাই নয়, অনেক ‘এদেশিও’ বসবাস করছেন। সরকার তাঁদেরও ‘নিজ ভূমি নিজ গৃহ’ প্রকল্পে বসবাসের ব্যবস্থা করে দেবে। বেসরকারি মালিকানাধীন অনেক জমির উপরেও উদ্বাস্তু কলোনি রয়েছে। সেই জমিগুলি কিনে নিয়ে উদ্বাস্তুদের হাতে মালিকানা দেওয়ার ব্যাপারে সরকার ভাবনাচিন্তা করছে। একই ভাবে রেল বা প্রতিরক্ষার মন্ত্রকের জমিতেও বহু কলোনি গড়ে উঠেছে। বেশ কিছু কলোনি প্রথম থেকেই কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে পরিচালিত হয়েছে। রাজ্য এখন কেন্দ্রের কাছে চিঠি লিখে সেই সব জমির মালিকানাও বাসিন্দাদের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য বলবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

২ ফেব্রুয়ারি উত্তর ২৪ পরগনার ঠাকুরনগরে আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। নিম্নবর্গের উদ্বাস্তুদের নিয়ে মতুয়া সম্মেলনে ভাষণ দেবেন তিনি। রাজ্যের আশঙ্কা, উদ্বাস্তুদের সমস্যা নিয়ে সরব হয়ে নতুন কিছু প্রতিশ্রুতি দিতে পারেন প্রধানমন্ত্রী। তার আগেই উদ্বাস্তুদের মন জয়ে দরাজ হলেন মুখ্যমন্ত্রী। মোদীর জনসভার জবাবে বনগাঁয় জোড়া কর্মসূচি নিল তৃণমূল। ১ তারিখ মিছিল ও পরে ৫ তারিখ জনসভা করতে চায় তারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mamata Banerjee Refugee TMC Bangladesh
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE