Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Organ Donation

পীযূষের অঙ্গদানে জীবন পাবে কেউ, সান্ত্বনা পরিবারের

শনিবার ‘ব্রেন ডেথ’ হয়ে মৃত্যু হয়েছে শহরের লরেন্স স্ট্রিটের বাসিন্দা পীযূষকান্তি ঘোষালের (৪৪)

পীষূষকান্তি ঘোষাল।  নিজস্ব চিত্র

পীষূষকান্তি ঘোষাল।  নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
উত্তরপাড়া শেষ আপডেট: ২৫ অগস্ট ২০২০ ০৪:২৩
Share: Save:

স্বজন হারানোর বেদনা আছে। তবে উত্তরপাড়ার ঘোষাল পরিবারের কাছে সান্ত্বনা এটাই যে, স্বজনের অঙ্গদানে জীবন পাবে কেউ।

শনিবার ‘ব্রেন ডেথ’ হয়ে মৃত্যু হয়েছে শহরের লরেন্স স্ট্রিটের বাসিন্দা পীযূষকান্তি ঘোষালের (৪৪)। ব্রেন টিউমার নিয়ে মল্লিকবাজারের ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্সে ভর্তি ছিলেন তিনি। তাঁর মৃত্যুর পরে পরিবারের লোকজন কালক্ষেপ করেননি। দ্রুত সিদ্ধান্ত নেন তাঁর অঙ্গদানের। সেইমতো রবিবার মৃতের কিডনি ও ত্বক যায় এসএসকেএম হাসপাতালে, চোখ যায় শঙ্কর নেত্রালয়ে, হায়দরাবাদের কেআইএমএস হাসপাতালে যায় তাঁর ফুসফুস ও যকৃৎ। মল্লিকবাজার থেকে ‘গ্রিন করিডর’ করে এসএসকেএম এবং কলকাতা বিমানবন্দরে তাঁর বিভিন্ন প্রত্যঙ্গ নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা হয়।

সোমবার সকালে পীযূষের দেহ লরেন্স স্ট্রিটে তাঁদের আবাসনে আনামাত্র ভিড় জমে যায়। বর্ধমানের বৈঁচীগ্রাম থেকে এসেছিলেন পীযূষের বৌদি মানসী ঘোষাল। ওখানেই পীযূষের পৈতৃক বাড়ি। মানসী বলেন, ‘‘ওঁর (পীযূষের) দান করা অঙ্গে কেউ প্রাণ ফিরে পাক, আমরা সেটা আন্তরিক ভাবে চেয়েছি। তাই সবাই মিলে অঙ্গদানের সিদ্ধান্ত নিই।’’

মৃতের স্ত্রী মিষ্টি উত্তরপাড়া গার্লস হাইস্কুলের শিক্ষিকা। তিনি রবিবার জানিয়েছিলেন, মস্তিষ্কে টিউমার ধরা পড়ার কিছু দিনের মধ্যে তাঁর স্বামীকে যে এ ভাবে চলে যেতে হবে, ভাবেননি। তাঁর স্বামী পরোপকারী ছিলেন। রক্তদান-সহ নানা জনহিতকর কাজে থাকতেন। মৃত্যুর পরেও উনি মানুষের মধ্যে বেঁচে থাকুন, এটাই পরিবারের ইচ্ছা। পরিবার সূত্রের খবর, কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার পীযূষের ব্যবসা ছিল। কয়েক মাস ধরে তাঁর মাথা-পিঠে যন্ত্রণা হচ্ছিল। চিকিৎসকদের কথামতো স্ক্যানিংয়ে তাঁর ব্রেন টিউমার ধরা পড়ে। তাঁকে ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্সে ভর্তি করানো হয়। ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়া এক ছেলে রয়েছে পীযূষের। এ দিন পরিবারের কেউই বিশেষ কথা বলার অবস্থায় ছিলেন না। পাড়া-পড়শি এবং প্রিয়জনেরা পীযূষকে শেষ শ্রদ্ধা জানিয়ে যান। এসেছিলেন পুর প্রশাসক দিলীপ যাদবও। তিনি বলেন, ‘‘অঙ্গদান করে অন্যকে বাঁচিয়ে পীযূষবাবু অমর হয়ে রইলেন।’’ উত্তরপাড়ার বাসিন্দা অনিন্দ্য বন্দোপাধ্যায় এই অঙ্গদানের প্রক্রিয়ায় আগোগোড়া ছিলেন। তিনি মনে করেন, ‘‘অঙ্গদানের পুরো প্রক্রিয়া সরকারি ভাবে আরও সরল হলে বেশি করে মানুষ এগিয়ে আসবেন। বর্তমানের এই প্রক্রিয়া জটিল এবং সময় সাপেক্ষ।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Organ Donation Uttarpara
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE