Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
Eid al-Adha

কোরবানির টাকায় দুর্গতের সেবা, আর্জি ধর্মগুরুদের

এক মাস পরে, আগামী ১ অগস্ট ইদুজ্জোহা। মুসলিম সমাজের এই উৎসবকে কোরবানি বা বকরিদ-ও বলে থাকেন অনেকে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

মেহবুব কাদের চৌধুরী
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ জুলাই ২০২০ ০৩:৪৭
Share: Save:

পশু উৎসর্গ নয়। কোভিড অতিমারির আবহে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আবেদন জানাচ্ছেন রাজ্যের মুসলিম ধর্মগুরুরা।

এক মাস পরে, আগামী ১ অগস্ট ইদুজ্জোহা। মুসলিম সমাজের এই উৎসবকে কোরবানি বা বকরিদ-ও বলে থাকেন অনেকে। রাজ্যের মুসলিম ধর্মগুরুদের আবেদন, করোনা থেকে রক্ষা পেতে সবাই যেমন ভাবে বাড়িতে বসে ইদ পালন করেছিলেন, একই ভাবে ইদুজ্জোহা-ও পালন করুন। করোনা রোগীর সংখ্যা রোজ বাড়তে থাকায় রাজ্য সরকার কিছু ছাড় দিয়েও ৩১ জুলাই পর্যন্ত লকডাউন রেখেছে। তার পরের দিনই ইদুজ্জোহা। অল ইন্ডিয়া মিল্লি কাউন্সিলের রাজ্য শাখার সম্পাদক ফজলুর রহমান বলেন, “যে ভাবে করোনা ছড়াচ্ছে, তাতে অন্যান্য বছরের মতো একদমই ঘটা করে বকরিদ পালন করা যাবে না। ঘরে বসে যে ভাবে ইদ পালন করেছিলেন, ঠিক সেই ভাবেই বকরিদ উদ্‌যাপন করুন। হাতজোড় করে এই নিবেদনই রাখতে চাই।” ধর্মতলা এবং টালিগঞ্জের টিপু সুলতান মসজিদের কর্ণধার তথা টিপু সুলতানের প্রপৌত্র আনোয়ার আলি শাহ বলেন, “সাধারণ মুসলিমদের কাছে আমাদের বিনীত আবেদন, দয়া করে এ বছর কোনও পশুকে কোরবানি দেবেন না। যে টাকায় পশু কোরবানি দিতেন, সেই অর্থ পাশের দুঃস্থ মানুষকে দান করুন। করোনা ও লকডাউনে বহু মানুষ কাজ হারিয়ে বিপন্ন। কোরবানির টাকা ওঁদের জন্য ব্যয় করুন। দয়া করে এই দানে কোনও জাত দেখবেন না।”

একই আবেদন রেখেছেন নাখোদা মসজিদ কর্তৃপক্ষ। নাখোদার ট্রাস্টি নাসের ইব্রাহিমেরও আবেদন, “দিনে দিনে করোনা ভয়াল আকার নিচ্ছে। ইদুজ্জোহার দিনে নমাজ ঘরে পড়বেন তো বটেই, পশু কোরবানি থেকেও বিরত থাকুন। ওই টাকা নিজের নিজের এলাকায় জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে দান করুন। মনে রাখবেন, এটাও আপনার বড় কোরবানি।” ফুরফুরা দরবার শরিফের তরফে ত্বহা সিদ্দিকীও বলেন, ‘‘বিশেষজ্ঞেরা ইতিমধ্যেই বলেছেন, অগস্ট-সেপ্টেম্বর মাসে করোনার সংক্রমণ ব্যাপক ভাবে বাড়তে পারে। তাই মুসলিম ভাইদের কাছে হাতজোড় করে বলছি, বকরিদের দিনে বাড়ি থেকে একেবারেই বেরোবেন না।’’

আরও পড়ুন: ক্ষতিপূরণের আর্জি দিতে এসে পদপিষ্ট, হাসপাতালে দুই

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের অধ্যাপক ইসারত আলি মোল্লা বলেন, ‘‘ইদুজ্জোহা মানে ত্যাগের আনন্দ। এখানে ভোগের কোনও জায়গা নেই। এ বছর পশু উৎসর্গ না-করে দয়া করে দুঃস্থের পাশে দাঁড়ান।’’ রাজ্যের সংখ্যালঘু বুদ্ধিজীবী সমিতির সম্পাদক তথা শিক্ষক এস এম শামসুদ্দিন রাজ্যের মুসলিমদের কাছে আবেদন রেখেছেন, “করোনার কথা মাথায় রেখে এ বার দয়া করে পশু কোরবানি দেবেন না। ওই টাকা পাড়ার দুঃস্থদের দান করুন।” এই প্রসঙ্গে চিকিৎসক অমিতাভ নন্দী বলেন, “সামনের দু’মাস ভয়াবহ সময়। এই সময়ে কোনও ভাবেই ভিড় করা চলবে না। বকরিদের দিনে অন্যান্য বছরের মতো ভিড় হলে করোনা-সংক্রমণ ব্যাপক ভাবে বেড়ে যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে মুসলিম ধর্মগুরুরা যে আবেদন রেখেছেন, তাকে স্বাগত জানাচ্ছি।”

আরও পড়ুন: মিলিজুলি পঞ্চায়েতে ক্ষতিপূরণের টাকা বহু সদস্যের নামেই

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Eid al-Adha Coronavirus in West Bengal COVID-19
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE