এনআরসি নিয়ে দিলীপ ঘোষকে প্রশ্ন। মঙ্গলবার রাজাভাতখাওয়ায়। ছবি: নারায়ণ দে
জনসংযোগ বাড়াতে রাজাভাতখাওয়ার বনবস্তিতে গিয়ে এনআরসি নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়লেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। দলের এক কর্মীর বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজ সেড়ে দিলীপ বের হতেই তাঁর পথ আটকান এক মহিলা। সরাসরি তাঁকে প্রশ্ন করেন ওই মহিলা, “পাঁচ মাস আগে মারা গিয়েছেন আমার স্বামী। তাঁর কোনও নথিপত্র আমার কাছে নেই। তা হলে কি আমায় সন্তান-সহ দেশ থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হবে?”
রাজাভাতখাওয়ার পাম্পু বনবস্তিতে স্থানীয় বিজেপি নেতা বিজয় শর্মার বাড়িতে এ দিন দুপুরের খাওয়া সারেন দিলীপ। সঙ্গীদের নিয়ে এর পরে ছবিও তোলেন তিনি। তার পরে খোশমেজাজেই বাড়ি থেকে বার হন। তখনই স্থানীয় বাসিন্দা অনিভা করের মুখোমুখি পড়ে যান তিনি। দৃশ্যতই তখন অস্বস্তিতে তাঁর সঙ্গীরা।
অনিভা বলেন, ‘‘আমার বাবার বাড়ি অসমে। ২৬ বছর আগে রাজাভাতখাওয়ায় আমার বিয়ে হয়। মাস ছয়েক আগে আমার স্বামী মারা যান। কিন্তু তাঁর যাবতীয় নথি ’৯৩-এর বন্যায় ভেসে গিয়েছিল। সবাই বলছে, সেগুলি না মিললে দুই মেয়েকে নিয়ে আমায় দেশ থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হবে। বিজেপির রাজ্য সভাপতির কাছে বিষয়টা স্পষ্ট করে জানতে চাই।’’
প্রশ্ন শুনে কিছুটা থমকে যান দিলীপ ও তাঁর সঙ্গীরা। শেষে দিলীপ ওই গৃহবধূকে তিনি বলেন, “আপনার কোনও নথির প্রয়োজন নেই। শুধু আপনি নিজে থাকলেই হবে। প্রয়োজনে আমাদের বলবেন।”
দিলীপ ঘোষের এই মন্তব্যকে হাতিয়ার করে এনআরসি নিয়ে তাঁর এবং বিজেপির বিরুদ্ধে আক্রমণ আরও তীব্র করেছে তৃণমূল। দলের আলিপুরদুয়ার জেলা সভাপতি মৃদুল গোস্বামী বলেন, ‘‘ঠিকঠাক নথি থাকা সত্ত্বেও অসমে যেখানে প্রায় সাড়ে বারো লক্ষ হিন্দু বাঙালির নাম বাদ পড়ে গেল, সেখানে রাজাভাতখাওয়াতে এসে বিজেপির রাজ্য সভাপতি বলছেন নথির প্রয়োজন নেই। আসলে এনআরসি নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়া বিজেপির রাজ্য সভাপতি বিক্ষোভ এড়াতেই মিথ্যা কথা বলেছেন।”
এনআরসি আতঙ্কে মৃত্যুর খবর মিলেছে রাজ্যের নানা প্রান্ত থেকেই। এ প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেছেন, ‘‘কেউ দুর্ঘটনায় বা ঋণে মারা গেলেও এনআরসি বলে চালিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এর পরেও এমনটা হলে তার দায় মুখ্যমন্ত্রীর।’’ রাতে রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস পাল্টা বলেন, ‘‘দিলীপ ঘোষেরাই আতঙ্ক ছড়াচ্ছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy