মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। —ফাইল ছবি
পঞ্চায়েতে স্থানীয় স্বার্থ থাকে, ব্যক্তিগত শত্রুতা কাজ করে— বোর্ড গঠন নিয়ে বিভিন্ন জেলায় খুনোখুনি ও অশান্তিকে এ ভাবেই ব্যাখ্যা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
গত তিন দিন ধরে বিভিন্ন জেলায় বোর্ড গঠনকে ঘিরে সংঘর্ষ চলছে। এ পর্যন্ত নিহত মোট পাঁচ। যাঁদের তিন জন তৃণমূল এবং দু’জন বিজেপির বলে সংশ্লিষ্ট দলগুলির দাবি।
সোমবার রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী সব মন্ত্রীকে এলাকায় শান্তি বজায় রাখতে সতর্ক করেন। কয়েক জনকে কড়া ধমকও দেন। সেইসঙ্গে জানিয়ে দেন, তৃণমূলকে শান্তিপূর্ণ ভাবে পঞ্চায়েত বোর্ড গড়ার কাজ করতে হবে।
রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসুর বক্তব্য, ‘‘পুলিশের পোশাক পরে তৃণমূলের হার্মাদেরা এ সব ঘটাচ্ছে কিনা, তদন্ত হোক।’’ দলের কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিংহর মতে, ‘‘তৃণমূল নিজেদের মধ্যেই মারপিট করে মরছে।’’
নবান্নে সাংবাদিকদের কাছে মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য এই পরিস্থিতিকে শুধু দলীয় রাজনীতির তকমা দিতে চাননি। তাঁর বক্তব্য, ‘‘বিধানসভা বা লোকসভা ভোটে এ ধরনের গোলমাল হয় না। পঞ্চায়েতে ব্যক্তিগত শত্রুতা কাজ করে। আমার তরফে যতটা সম্ভব করার চেষ্টা করছি। তা সত্ত্বেও এত বড় রাজ্যে দু’একটা ঘটনা ঘটে গেলে তা সমর্থন করি না। শুনতেও খারাপ লাগে। আমার দলের এক জন মারা গেলে যেমন আমার বুকে লাগে, অন্য দলের কেউ মারা গেলেও খারাপ লাগে। যা ঘটেছে, দুর্ভাগ্যজনক।’’
তিনি নিজেই প্রশ্ন তোলেন, ‘‘স্থানীয় ভাবে একটি বোর্ড গড়তে এত প্রতিযোগিতা কেন? একটা গ্রামসভা নিয়ে কেন এত সংঘাত?’’ সরাসরি বিজেপির নাম না করে তিনি বলেন, ‘‘বাইরে থেকে গুন্ডা ভাড়া করা হচ্ছে। পঞ্চায়েতে আমাদের তিন জন খুন হয়েছেন। এটা সব সময়ে নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। বিভিন্ন রাজ্য থেকে লোক আনছে। বিহার সীমানা থেকে লোক আনা হয়েছে। আলিপুরদুয়ার, মালদহেও তাই।’’ তাঁর আরও অভিযোগ, ‘‘কোথাও কোথাও আরএসএসের সঙ্গে কোনও কোনও কেন্দ্রীয় সংস্থা রুদ্রাক্ষ বিলি করছে। এতে ওই ধরনের প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা নষ্ট হয়। তবু সীমাবদ্ধতার মধ্যেই কেন্দ্রীয় পুলিশ বা রাজ্য পুলিশ যে যার কাজ করছে।’’
তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া অবশ্য পুরোপুরি রাজনৈতিক। বিজেপি, সিপিএম ও কংগ্রেসের দিকে হাত তুলে তাঁর বক্তব্য, ‘‘পঞ্চায়েতের শুরু থেকে তিন দল এক হয়ে তৃণমূলকে আটকাতে যা করেছে, তাতে তো দলগুলিকে মানসিক হাসপাতালে পাঠাতে হবে।’’
সিপিএমের সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বারুদের স্তূপের উপর বসে রয়েছে রাজ্য। যা ঘটছে তা ভোটের সন্ত্রাসেরই পুনরাবৃত্তি।’’ কংগ্রেস নেতা আব্দুল মান্নানও মনে করেন, ‘‘কংগ্রেস, বামকে ভেঙে বিজেপির সুবিধা করে দিয়েছে তৃণমূল। এখন শাসক দলেই অরাজকতা চলছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy