Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

আগে থেকেই প্রস্তুত ছিল সেনা জওয়ান, ঘুমের ওষুধে নিস্তেজ করে খুন স্ত্রীকে

একান্তে গল্প করার কথা বলে স্ত্রী মর্জিনা খাতুনকে ডেকে পাঠায় আজহার। সামসিতে গিয়ে লোকালয় থেকে দূরে ধানখেতের পাশে গিয়ে স্ত্রীকে নিয়ে গল্প করতে বসে সে। সেখানেই শরীর ভাল হবে বলে স্ত্রীকে ঘুমের ওই সিরাপ খেতে দেয় সে।

প্র্তীকী ছবি

প্র্তীকী ছবি

বাপি মজুমদার 
রতুয়া শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০১৯ ০৪:৩৫
Share: Save:

দিনের আলোয় খুন করা যে খুব সহজ নয়, তা জানত সে। তাই শিশিতে ঘুমের ওষুধ নিয়ে আগে থেকেই প্রস্তুত ছিল শেখ আজহার। স্ত্রীর যে শরীর খারাপ তা আগেই জেনেছিল সে। তাই ওষুধের নামে সেই ঘুমের সিরাপ খাইয়ে তাকে নিস্তেজ করে খুনের ছক কষেই এগিয়েছিল সেনা জওয়ান আজহার। তাতে সফলও হয় সে।

একান্তে গল্প করার কথা বলে স্ত্রী মর্জিনা খাতুনকে ডেকে পাঠায় আজহার। সামসিতে গিয়ে লোকালয় থেকে দূরে ধানখেতের পাশে গিয়ে স্ত্রীকে নিয়ে গল্প করতে বসে সে। সেখানেই শরীর ভাল হবে বলে স্ত্রীকে ঘুমের ওই সিরাপ খেতে দেয় সে। মর্জিনা সরল বিশ্বাসে খেয়েও নেন। কিছু ক্ষণ পরেই মর্জিনা ঘুমে ঢলে পড়েন। এর পরে ওড়না পেঁচিয়ে তাঁকে শ্বাসরোধ করে খুন করে সে। ধানখেতের ভিতরে স্ত্রীর দেহ ফেলে রুকুন্দিপুরের বাড়িতে ফিরে যায় আজাহার। অত্যন্ত সুপরিকল্পিত এই খুনের কথা পুলিশের কাছে বলেছে আজহার। রবিবার তাকে নিয়ে সামসি কলেজ লাগোয়া ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণও করা হয়। সেখান থেকে ঘুমের ওষুধের শিশিটিও পুলিশ উদ্ধার করেছে। জেলা পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া জানিয়েছেন, ধৃতকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

পুলিশ সূত্রের খবর, বিয়ের আগে থেকেই এলাকার এক তরুণীর সঙ্গে সম্পর্ক ছিল আজহারের। বাড়ির জোরাজুরিতেই বছরখানেক আগে মাসতুতো বোন মর্জিনাকে বিয়ে করে সে। তবে পাকাপাকি ভাবে শ্বশুরবাড়িতে থাকতেন না মর্জিনা। স্বামী বাড়ি ফিরলে যেতেন। তবে পরে স্বামীর বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের কথা জানতে পেরে হতাশ হয়ে পড়েন মর্জিনা। তাই কিছুদিন ধরে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ি এড়িয়ে চলতেন মর্জিনা। আজহার পুলিশকে জানিয়েছে, মর্জিনার সঙ্গে বিয়েটা সে মেনে নিতে পারেনি। তাই বিয়ের পরেও ওই তরুণীর সঙ্গে সে সম্পর্ক রেখেছিল। ওই তরুণীও জানিয়ে দিয়েছিলেন, মর্জিনাকে বিবাহবিচ্ছেদ দিলে তবেই তিনি আজহারকে বিয়ে করতে রাজি হবেন। এর পরেই তরুণীকে বিয়ে করার সবরকম সম্ভাব্য উপায় খুঁজতে শুরু করে আজহার।

কিন্তু মর্জিনার সঙ্গে আত্মীয়তার সম্পর্ক থাকায় বিবাহবিচ্ছেদ যে সম্ভব নয়, তা আঁচ করে তাঁকে একেবারেই সরিয়ে দেওয়ার ছক কষে আজহার। তারপরেই পরিকল্পনামতো দেখা করার কথা বলে মর্জিনাকে সামসিতে আসতে বলে আজহার। স্বামী তার পুরনো সম্পর্ক নিয়ে কোনও সমঝোতার কথা বলবে, সেই আশাতেই হয়তো মর্জিনা সাক্ষাতে রাজি হয়ে যান বলে ধারণা পুলিশের। তাই পুজোর ছুটি থাকলেও বাড়িতে কলেজে যাওয়ার কথা বলে এক বন্ধুর সঙ্গে বাহারাল থেকে বাসে ওঠেন মর্জিনা। তার পরে স্বামীর বলে দেওয়া গন্তব্যে নেমে তার সঙ্গে দেখা করেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Muder Army Man Strangulation Ratua Malda
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE