Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

স্কুল পরিদর্শনে শিক্ষাসচিবকেও নামাচ্ছেন পার্থ

উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরের দাড়িভিট হাইস্কুলের গোলমাল নিয়ে তোলপাড় চলছে সারা রাজ্যেই। এই বিষয়ে গত সোমবার বিকাশ ভবনের বৈঠকে স্কুল পরিদর্শনের প্রসঙ্গ বারবার সামনে আসে।

শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।

শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।

সুপ্রিয় তরফদার , মধুমিতা দত্ত
শেষ আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৫:১৪
Share: Save:

যাঁদের পদের নামেই ‘ইনস্পেকশন’ বা পরিদর্শনের বিষয়টি যুক্ত, সেই ডিস্ট্রিক্ট ইনস্পেক্টর (ডিআই) বা জেলা স্কুল পরিদর্শকেরা স্কুল পরিদর্শন তো করবেনই। তা ছাড়াও স্কুলশিক্ষা সচিব থেকে শুরু করে স্কুলশিক্ষা দফতরের সব আধিকারিককে নিয়মিত স্কুল পরিদর্শন করার নির্দেশ দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরের দাড়িভিট হাইস্কুলের গোলমাল নিয়ে তোলপাড় চলছে সারা রাজ্যেই। এই বিষয়ে গত সোমবার বিকাশ ভবনের বৈঠকে স্কুল পরিদর্শনের প্রসঙ্গ বারবার সামনে আসে। স্কুলশিক্ষা দফতরের কর্তা থেকে শুরু করে খোদ শিক্ষামন্ত্রীও সেই ব্যাপারে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন। মন্ত্রী সে-দিন নির্দেশ দেন, সংশ্লিষ্ট সকলকেই স্কুল পরিদর্শনে যেতে হবে। বৃহস্পতিবার পার্থবাবু বলেন, ‘‘শুধু ওই দিন নয়, আমি অনেক আগে থেকেই বলে আসছি, সচিব-সহ সব আধিকারিক যেন স্কুল পরিদর্শনে যান। কথাটা আবার বলছি। পরিদর্শনে যেতেই হবে। ডিআই-রা যাতে শুধু পুরনো তালিকা দেখে কাজ না-সারেন, সেটাও দেখব। সব জায়গায় গিয়ে পরিদর্শন করতে বলেছি ওঁদের।’’
গত মাসে সব জেলায় পরিদর্শনের জন্য স্কুলশিক্ষা কমিশনার, যুগ্মসচিব পদমর্যাদার বেশ কিছু অফিসার ও স্কুল কমিশনারেটের আধিকারিকদের মধ্যে দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়া হয়েছিল। সেই নির্দেশ দিয়েছিলেন সচিব নিজেই। এ বার তাঁকেও পরিদর্শনের নির্দেশ দিলেন মন্ত্রী। কারণ, সরকার মনে করে, পড়ুয়াদের স্বার্থে বহু প্রকল্প চালু করা হয়েছে। সেগুলোর ফল ছাত্রছাত্রীরা আদৌ পাচ্ছে কি না, এ বার তার উপরে সরাসরি নজরদারি চালানো দরকার। বিকাশ ভবনের ওই বৈঠকে ৫ অক্টোবরের মধ্যে শিক্ষকদের শূন্য পদ-সহ সব স্কুলের যাবতীয় তথ্য পেশের নির্দেশ দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী। এই ফাঁকে স্কুলগুলিতে কন্টিনিউয়াস কমপ্রিহেনসিভ ইভ্যালুয়েশন (সিসিই) বা নিরবচ্ছিন্ন সার্বিক মূল্যায়নের উপরে নজরদারি শুরু হয়েছে। এক ধাপ এগিয়ে মুর্শিদাবাদে সিসিই দেখভালের গুরুদায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে সহকারী প্রধান শিক্ষকদের।
এখন প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়াদের তিনটি ফর্মেটিভ (প্রস্তুতিকালীন মূল্যায়ন) এবং তিনটি সামেটিভ (পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়ন) পরীক্ষা হয়। তিন মাস অন্তর সামেটিভ পরীক্ষার আগে হয় ফর্মেটিভ পরীক্ষা। এই পরীক্ষা মূলত মৌখিক। অর্থাৎ কোনও পড়ুয়া প্রশ্ন করতে পারছে কি না বা কোনও বিষয়ে সে আদৌ নিজেকে যুক্ত করছে কি না, সেটা যাচাই করা হয়।
কলকাতা জেলা স্কুলশিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, ইতিমধ্যে সব স্কুল ইনস্পেক্টর (এসআই)-কে স্কুলের তথ্য সংগ্রহের পাশাপাশি সিসিই-র রিপোর্ট পেশের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মুর্শিদাবাদে এই সিসিই দেখভালের জন্য সহকারী প্রধান শিক্ষকদের দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে।
পশ্চিমবঙ্গ সরকারি স্কুলশিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক তথা সিসিই নিয়ে প্রথম গবেষণাকারী শিক্ষক সৌগত বসু বলেন, ‘‘এসআই-দের পক্ষে সিসিই-র উপরে নজরদারি চালানো সম্ভব নয়। মুর্শিদাবাদ জেলাই ঠিক পথ নিয়েছে। এ ভাবে সব জেলায় সহকারী প্রধান শিক্ষকদের সিসিই দেখার ভার দিলে আসল উদ্দেশ্য সফল হতে পারে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE