যেখানে গ্রাম পঞ্চায়েত বা পঞ্চায়েত সমিতি তৃণমূলের দখলে নেই, সেখানে জেলা পরিষদের মাধ্যমে উন্নয়ন হবে। সোমবার কেশিয়াড়ির সভামঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা, ‘‘যেখানে আমাদের গ্রাম পঞ্চায়েত বা পঞ্চায়েত সমিতি নেই, সেখানে জেলা পরিষদের মাধ্যমে রাজ্য সরকারের যত উন্নয়ন প্রকল্প রয়েছে, তার কাজ করে দেব।” জেলাশাসক, সভাধিপতি, সহ-সভাধিপতিদের জন্য তাঁর নির্দেশ, ‘‘যে সব গরিব লোক বঞ্চিত হয়েছেন, তাঁদের সব কাজ জেলা পরিষদের মাধ্যমে করে দেবে।’’
এই কেশিয়াড়িতেই পঞ্চায়েত ভোটে ধাক্কা খেয়েছে ঘাসফুল। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদ বিরোধীশূন্য করলেও কেশিয়াড়ি ব্লকের ৯টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ৫টিতেই বোর্ড গড়েছে বিজেপি। কেশিয়াড়ি পঞ্চায়েত সমিতিতেও সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে গেরুয়া শিবির। ফলে, রাজনৈতিক অঙ্কেই যে কেশিয়াড়িকে মুখ্যমন্ত্রীর সভাস্থল হিসেবে বাছা হয়েছে, সেই ইঙ্গিত ছিল। সোমবার মমতা নিজেও বলেন, ‘‘অনেকে জিজ্ঞাসা করেছিল কেশিয়াড়িতে তো আপনাদের হারিয়েছিল। আপনি কেশিয়াড়ি যাবেন কেন? আমি বলেছিলাম, হারিয়েছে বলেই তো আমায় বেশি করে যেতে হবে।” এ দিন তৃণমূলের অভিযোগ, বিজেপি তাদের পতাকা খুলে দিয়েছে। বিজেপির পাল্টা অভিযোগ, ‘মুখ্যমন্ত্রী গো ব্যাক’ লেখা পোস্টার ছিঁড়ে ফেলেছে তৃণমূল।
বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ এ দিন খড়্গপুরে অভিযোগ করেছেন, ‘‘লোক ভাঙাতে সর্বশক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়েছে তৃণমূল। যখন ভয় দেখিয়ে বা প্রলোভনে বোর্ড ভাঙাতে পারছে না, তখন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী আসরে নেমেছেন। বলছেন, আমাদের বোর্ড গড়তে না দিয়ে জেলা পরিষদ থেকে কাজ করবেন। এ তো অগণতান্ত্রিক!’’
মমতা স্পষ্ট করেছেন, কেশিয়াড়ি পুনরুদ্ধারই তাঁর লক্ষ্য। তেলিপুকুর ময়দানের প্রশাসনিক জনসভায় ছত্রিশ মিনিটের বক্তব্যে কখনও তিনি বলেছেন, ‘‘ভুল বুঝে দূরে সরে যাবেন না।’’ কখনও বললেন, ‘‘যাঁদের নিয়ে এলেন, তাঁরা ভিটেমাটি বেচে দেবে।’’ কেশিয়াড়িতে হারের জেরে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি বদল হয়েছে। সে কথা মনে করিয়ে মমতা বলেন, “কোনও কোনও নেতা এখানে নিশ্চয়ই দুষ্টুমি করেছে। তাদের আমরাও সরিয়ে দিয়েছি।” প্রকারান্তরে মেনে নিয়েছেন ক্ষোভের কথাও। মুখ্যমন্ত্রীর মতে, “আপনাদের রাগ হতেই পারে। আমি আপনাদের রাগকে সমর্থন করি।”
কেশিয়াড়ি পুনরুদ্ধারের দায়িত্ব মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীকে সঁপেছেন মমতা। খাস কেশিয়াড়িকে তাঁর বার্তা, ‘‘দয়া করে ভুল বুঝবেন না। আপনাদের আশীর্বাদ, ভরসা, সমর্থন তুলবেন না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy