Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
dinabandhu andrews college

মেধা তালিকায় নাম থেকেও কলেজে ভর্তিতে ব্যর্থ, আত্মঘাতী ছাত্র

ভাল নম্বর পেলেও কলেজে ভর্তি না হতে পারার হতাশাই গ্রাস করেছিল তাকে।

ছেলের মৃত্যুতে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন মা। ইনসেটে আত্মঘাতী ছাত্র অম্লান সরকার। ছবি: নিজস্ব।

ছেলের মৃত্যুতে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন মা। ইনসেটে আত্মঘাতী ছাত্র অম্লান সরকার। ছবি: নিজস্ব।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০১৮ ১৫:৩২
Share: Save:

উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় পেয়েছিলেন ৭৯ শতাংশ নম্বর। অথচ, কলেজে কলেজে ঘুরেও নানা কারণে ভর্তি হতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত বাড়ি থেকে ঝুলন্ত দেহ মিলল ১৮ বছরের অম্লান সরকারের। ঘটনাটি সোনারপুর থানার বোড়ালের।

প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, ভাল নম্বর পেলেও কলেজে ভর্তি না হতে পারার হতাশা থেকেই আত্মঘাতী হয়েছেন অম্লান। মেধা তালিকায় নাম থাকা সত্ত্বেও তাঁর এই পরিণতি মেনে নিতে পারছেন না তাঁর বাবা-মা, বোন ও পরিবার। মৃত ছাত্রের বাবা প্রদীপকুমার সরকার বলেন, “কলেজে ভর্তি হতে না পারার জন্যই ছেলেটা এ ভাবে চলে গেল।”

বোড়াল হাইস্কুল থেকে এ বার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় ৭৯ শতাংশ নম্বর পান অম্লান। এলাকায় ভাল ছাত্র হিসেবেই পরিচিতি ছিল। আশা ছিল, ভাল কলেজে পড়ার সুযোগ পাবেন। কিন্তু কলেজে কলেজে কয়েক দিন ধরে হাঙ্গামার জের এবং অর্থাভাবে কোথাও ভর্তি হতে পারেননি এই কৃতী ছাত্র।

আরও পড়ুন: ফেরাতেই হবে প্রবেশিকা, যাদবপুরে অনশন শুরু পড়ুয়াদের

ঠিক কী ঘটেছিল?

তাঁর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, দীনবন্ধু অ্যান্ড্রুজ কলেজে মেধা তালিকায় নামও ওঠে তাঁর। কয়েক দিন আগে অ্যান্ড্রুজ কলেজে ভর্তির জন্য নির্দিষ্ট সময়ে পৌঁছেও যান। কিন্তু সে দিন কলেজে তুমুল গোলমাল। ছাত্র সংঘর্ষের ঘটনার জেরে অন্যদের মতো তাঁকেও ফিরে আসতে হয়। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, এখানে আর ভর্তি নেওয়া হবে না।

এর পর তিনি চেষ্টা করে পাটুলির কে কে দাস কলেজে ভর্তির জন্য। আধ ঘণ্টা দেরি হওয়ায় মেধা তালিকায় নাম থাকা সত্ত্বেও তাঁকে কলেজে ঢুকতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ তাঁর পরিবারের। দু’টি কলেজে ভর্তিতে ব্যর্থ হওয়ায় একেবারে ভেঙে পড়েছিলেন অম্লান।

আরও পড়ুন: কলেজে ভর্তিতে দুর্নীতি রুখতে প্রচার পুলিশের

তার পর সোনারপুরের একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজেও ভর্তির চেষ্টা করছিলেন তিনি। সেখানে টাকার পরিমাণ বেশি হওয়ায়, সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়। আশুতোষ কলেজেও ভর্তি হতে পারেননি। কী ভাবে কলেজে ভর্তি হবেন, তা নিয়ে রীতিমতো চিন্তায় ছিলেন তিনি। শেষ পর্যন্ত ভাবছিলেন আর্ট কলেজে ভর্তি হওয়ার কথা। অম্লানের পারিবারিক সূত্রেই বলা হয়, ছোটবেলা থেকেই আঁকার হাত ভাল ছিল তাঁর।

শুক্রবার বাড়িতে কেউ ছিলেন না। রাত্রিবেলা বাড়ির লোকজন ফিরে এসে দেখেন, গলায় কাপড় জড়িয়ে সিলিং ফ্যান থেকে ঝুলছেন অম্লান। পাড়া-প্রতিবেশীরাও তাঁর এই মর্মান্তিক পরিণতিতে শোকাহত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE