খয়রাশোলের ব্লক সভাপতি দীপক ঘোষ। —ফাইল চিত্র।
অস্ত্রোপচার করেও বাঁচানো গেল না বীরভূমের খয়রাশোলের ব্লক সভাপতি দীপক ঘোষকে। দাদা খুন হওয়ার ৫ বছর পর অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীদের হাতে খুন হলেন ব্লক সভাপতি ভাইও। সোমবার বেলা ১টা নাগাদদুর্গাপুর মিশন হাসপাতালে চিকিৎসা চলাকালীনই মৃত্যু হয় তাঁর।
রবিবার মোটরবাইকে খয়রাশোল ফিরছিলেন দীপক ঘোষ। তখনই তাঁর মোটরবাইক আটকে দাঁড়ায় কয়েকজন দুষ্কৃতী। তাদের মাথায় হেলমেট ছিল। দীপকবাবু সামনে গেলেই তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় তারা। গুলি তাঁর চোয়াল ফুঁড়ে চলে যায়। তারপর তাঁর সারা শরীরে পরপর ভোজালির কোপ মারা হয়।
গুরুতর আহত অবস্থায় দীপকবাবুকে প্রথমে স্থানীয় নাকড়াকোন্দা ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং পরে দুর্গাপুর মিশন হাসপাতালে রেফার করা হয়।
চিকিৎসকেরা জানিয়েছিলেন, দীপকবাবুর অবস্থা খুবই আশঙ্কাজনক ছিল। জিভ পুরোটাই কেটে বাদ দিতে হয়েছিল। প্রচুর রক্তপাত হয়েছিল। ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছিল তাঁকে। তাঁর শরীরে একাধিক অস্ত্রোপচার করা হয়। কিন্তু তা সত্ত্বেও তাঁকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি বলে জানান চিকিৎসকেরা।
আরও পড়ুন: লাভপুরে বিজেপি কর্মীর ঝুলন্ত দেহ, ‘সুইসাইড কেস’, বললেন অনুব্রত, তৃণমূলের দিকে আঙুল বিজেপির
দীপক ঘোষের মৃত্যুর জন্য বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীদের দায়ী করেছেন অনুব্রত মণ্ডল। তিনি বলেন, ‘‘কালকে যে কথা বলেছিলাম, আজও তাই বলছি। বিজেপি বাইরে থেকে লোক ঢুকিয়ে এই সব করছে। এটা আমরা মেনে নেব না। পুলিশ উপযুক্ত পদক্ষেপ করবে। দলও বসে থাকবে না। এ ভাবে একটার পর একটা খুন হবে, তা তো মানুষ মেনে নেবে না। সুতরাং দল একেবারেই বসে থাকবে না। দল ব্যবস্থা নেবে।’’
তখন দুর্গাপুর হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে তাঁকে।
আর বিজেপি দায়ী করছে তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলকে। বীরভূম জেলা বিজেপির সভাপতি রামকৃষ্ণ রায় বলেন, ‘‘কেন একটার পর একটা হামলা হচ্ছে সে প্রশ্ন অনুব্রত মণ্ডলকেই করুন। দীপক ঘোষের উপর দু’বার হামলা হয়ে গেল, এর আগে অশোক ঘোষ, অশোক মুখোপাধ্যায় খুন হন। যাঁকেই ব্লক সভাপতি করা হচ্ছে, তাঁকেই খুন করা হচ্ছে। আসলে যাঁর উপর টাকা পয়সার ভাগাভাগির দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে, তাঁর উপরও হামলা হচ্ছে। এ বার আপনারাই বুঝে নিন।’’
এই নিয়ে পরপর তিনজন ব্লক সভাপতি প্রাণঘাতী হামলার শিকার হলেন। এর আগে ২০১৩ সালের ১২ অগস্ট এবং ২০১৪ সালের ১৬ অগস্ট খুন হন দুই প্রাক্তন ব্লক সভাপতি অশোক ঘোষ এবং অশোক মুখোপাধ্যায়। স্থানীয় রাজনীতিতে তাঁরা পরস্পরের প্রবল বিরোধী হিসেবেই পরিচিত ছিলেন। অশোক ঘোষ খুনের পরে এলাকায় গিয়ে নিহতের অনুগামীদের ক্ষোভের মুখে পড়তে হয় অনুব্রতকে।
দীপকবাবু সেই অশোক ঘোষেরই সহোদর ভাই ছিলেন। অশোকবাবুর মৃত্যুর পর তাঁকেই ব্লক সভাপতি করা হয়েছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy