Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
Sisir Adhikari

আজ নন্দীগ্রামে সভা মমতার, ডাক নেই দুই অধিকারীর, যাবেন না তাঁরাও

তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্ব নতুন জেলা কমিটিকে নির্দেশ দিয়েছে, কোনও ভাবেই যেন আর অধিকারীদের সঙ্গে যোগযোগ না করা হয়।

দিব্যেন্দু ও শিশির অধিকারী। —ফাইল চিত্র

দিব্যেন্দু ও শিশির অধিকারী। —ফাইল চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০২১ ১৮:১৪
Share: Save:

আজ মমতার সভা নন্দীগ্রামে। শুভেন্দু অধিকারীর দল ছাড়ার পর এই প্রথম পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় পা রাখছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এই সভাতেই থাকবেন না জেলার দুই সাংসদ। একজন কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারী ও অন্যজন পুত্র তমলুকের সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী।

প্রায় এক দশক পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলের সভাপতি থাকার পর গত ১৩ জানুয়ারি শিশিরবাবুকে সরিয়ে ওই পদে বসানো হয়েছে মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র। ডানা ছেঁটে তাঁকে দেওয়া হয়েছে জেলা সংগঠনের চেয়ারম্যানের পদ। বর্ষীয়ান শিশির ভালই বোঝেন সেই পদের গুরুত্ব। তাই নিজে থেকেই নন্দীগ্রামে মমতার সভায় না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। সভায় যাবেন না তাঁর সাংসদ-পুত্র দিব্যেন্দুও। অধিকার পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, দলের তরফে নন্দীগ্রামে মমতার সভা নিয়ে কেউ তাঁদের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ করেননি। তাই সভায় যাওয়ার প্রশ্ন-ই ওঠে না। সূত্রের খবর, তৃণমূল নেতৃত্বও ঠিক এমনটাই চাইছে। শিশিরবাবু তৃণমূলে থাকলেও সম্প্রতি দলের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন সংবাদমাধ্যমে। তাই তাঁকে সভায় আমন্ত্রণ জানালে, তিনি সভায় এসে কোনও বিরূপ মন্তব্য করলে হিতে বিপরীত হতে পারে। তাই সেই ঝুঁকির জায়গা থেকেই অধিকারীদের বয়কট করার সিদ্ধান্তে সিলমোহর দিয়েছেন তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব। তবে শিশির জানিয়েছেন, পরিবার ছেড়ে রাজনীতি করা তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়। আর এমন অবস্থান স্পষ্ট হওয়ার পরই তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্ব নতুন জেলা কমিটিকে নির্দেশ দিয়েছে, কোনও ভাবেই যেন আর অধিকারীদের সঙ্গে যোগযোগ না করা হয়। তাঁদের বাদ দিয়েই সাংগঠনিক কাজকর্ম করতে।

তবে মৌখিক ভাবে শিশির বা তাঁর সাংসদ পুত্রের সঙ্গে যে কোনও ধরনের বিবাদ এড়িয়ে যেতে বলা হয়েছে। যতদিন তাঁরা দলে আছেন, ততদিন তাঁদের এড়িয়ে চলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কালীঘাটের পক্ষ থেকে। তাই জেলা তৃণমূলের পক্ষ থেকে নন্দীগ্রামে মুখ্যমন্ত্রীর সভা প্রসঙ্গে কোনও কথাই জানানো হয়নি শিশিরবাবুকে। এমনকি কোনও আমন্ত্রণপত্রও পাঠানো হয়নি কাঁথির শান্তিকুঞ্জে।

আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রীর মুখ নিয়ে মন্তব্য নয়, নেতাদের কড়া বার্তা বিজেপির

সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ নেতাকে কেন আমন্ত্রণ জানানো হল না? এমন প্রশ্নের উত্তরে আনন্দবাজার পত্রিকা ডিজিটালকে জেলা সভাপতি সৌমেন বলেছেন, ‘‘শিশিরবাবু আমাদের চেয়ারম্যান, তাঁর নেতৃত্বেই তো সব হচ্ছে। দলের পদাধিকারীদের কখনও আমন্ত্রণপত্র পাঠাতে হয় নাকি? তিনি আমাদের নেতা, তিনি তাঁর মতো করে সভায় আসবেন বলেই আমি মনে করি।’’ শিশিরবাবু না এলে, তাঁর সাংসদ পুত্রও আসবেন না। সে বিষয়ে নিশ্চিত তৃণমূল নেতৃত্ব।

আরও পড়ুন: জোট হলে কংগ্রেসের জেতা আসনে প্রার্থী দেবেন না আব্বাস, দাবি সোমেন পুত্রের

প্রসঙ্গত, ১৯ ডিসেম্বর শুভেন্দুর বিজেপিতে যোগদানের পর থেকেই অধিকারী পরিবারের প্রতি কড়া পদক্ষেপ করছে তৃণমূল। প্রথমে কাঁথি পুরসভার প্রশাসকের পদ থেকে সরানো হয় শিশিরবাবুর ছোট ছেলে সৌমেন্দু অধিকারীকে। তারপর ১২ জানুয়ারি দিঘা শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে কাঁথির সাংসদকে। ১৩ জানুয়ারি জেলা সভাপতি পদ থেকে সরানো হয় তাঁকে। এরপরেই তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ পটাশপুর ও কাঁথিতে গিয়ে চাঁছাছোলা ভাষায় শুভেন্দুকে আক্রমণ করেন। সূত্রের খবর, এর পর থেকেই তৃণমূলের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক রাখতে চায় না অধিকারী পরিবার। তাই সভায় আসার আমন্ত্রণ না আসাকে শ্রেয় বলেই মনে করছেন কাঁথির শান্তিকুঞ্জের বাসিন্দারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mamata Banerjee TMC Nandigram Sisir Adhikari
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE