Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

তৃণমূল নেতা খুনে রণক্ষেত্র বাগনান, মার খেলেন সাংবাদিকরাও

রক্তাক্ত তৃণমূল নেতা মহসিন আলি খান (৪৯) মারা যান হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই।

মহসিন আলি খান। —নিজস্ব চিত্র।

মহসিন আলি খান। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বাগনান শেষ আপডেট: ০৬ জুন ২০১৮ ০৪:২০
Share: Save:

বাড়ি ফেরার পথে ঘিরে ধরে তিন দুষ্কৃতী। খুব কাছ থেকে কানের পাশে তিনটি গুলি করে বাইকে উঠে পালায়। রক্তাক্ত তৃণমূল নেতা মহসিন আলি খান (৪৯) মারা যান হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই।

সোমবার রাত ৯টা নাগাদ হাওড়া জেলার বাগনানের ন’পাড়ার এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। রাতে দেহ নিয়ে মুম্বই রোড অবরোধ করে তৃণমূল। মঙ্গলবার অবরোধ হয় বাগনান-আমতা রোডে। বিজেপি-ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত আশরাফ আলি মিদ্যা ও তার সাঙ্গোপাঙ্গদের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ তুলে ভাঙচুর চলে কয়েকটি বাড়িতে। কিছু বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। মঙ্গলবার এলাকায় ঢুকতে গেলে বাধা দেওয়া হয় তৃণমূলের সাংসদ-বিধায়ককেও। প্রহৃত হয়েছেন সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা।

আশরাফ-সহ ১২ জনের নামে খুনের অভিযোগ দায়ের হয়েছে থানায়। তিন জনকে আটক করে তদন্ত এগোচ্ছে বলে জানিয়েছেন হাওড়ার (গ্রামীণ) পুলিশ সুপার গৌরব শর্মা।

আরও পড়ুন: অলীকের পাহারায় গাফিলতি, সাসপেন্ড দুই পুলিশ

বাগনানের তৃণমূল বিধায়ক অরুণাভ সেন বলেন, ‘‘বিজেপির লোকজনই খুন করেছে আমাদের জনপ্রিয় নেতাকে। আমরা খুনিদের কঠোর শাস্তি চাই।’’

বিজেপির গ্রামীণ জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুপম মল্লিক অবশ্য বলেছেন, ‘‘আশরাফ বিজেপির
কেউ নয়। এটা তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফল।’’

নপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মহসিন আগে কংগ্রেস করতেন। বছর দু’য়েক আগে যোগ দেন তৃণমূলে। তাঁর স্ত্রী নুরউন্নেসা পঞ্চায়েত ভোটে দাঁড়িয়ে জিতেছেন। স্থানীয় সূত্রের খবর, আশরাফও আগে ছিল শাসক দলের ছত্রচ্ছায়ায়। পরে বিজেপির সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। তার বিরুদ্ধে পুলিশের খাতায় খুন, ধর্ষণ-সহ নানা রকম অভিযোগ রয়েছে।

তৃণমূল শিবিরে মহসিনের প্রভাব প্রতিপত্তি বে়়ড়ে যাওয়ায় একই গ্রামের বাসিন্দা আশরাফ কিছুটা কোণঠাসা হয়ে পড়েছিল। মহসিনকে সে আগে হুমকি দিয়েছিল বলে দাবি তৃণমূল শিবিরের। সে কথা থানায়ও জানানো হয়েছিল। কিন্তু আশরাফের বিরুদ্ধে পুলিশ কোনও রকম ব্যবস্থা নেয়নি বলে ক্ষোভ রয়েছে স্থানীয় মানুষের। এ দিন সাংসদ-বিধায়ককে গ্রামে ঢুকতে বাধা দেওয়ার কারণও সেটাই।

স্থানীয় এক তৃণমূল নেতার কথায়, ‘‘আশরাফ দাগি দুষ্কৃতী। পুলিশ সব জানে। তবু তাকে ধরেনি। সাংসদ-বিধায়কেরাও সব জেনে চুপ করে ছিলেন।’’ বাগনান থানার এক অফিসারের বিরুদ্ধে এ নিয়ে ক্ষুব্ধ তৃণমূল নেতা-কর্মীদের একাংশ। বিধায়ক অবশ্য দাবি করেন, ‘‘আশরাফের বিরুদ্ধে আমরাও বহু বার পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছিলাম।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE