Advertisement
১১ মে ২০২৪
Nirmala Sitharaman

ঋণের ‘সুবিধা’য় বিপদ বাড়বে, দাবি অর্থনীতিবিদদের

রবিবার রাজ্যগুলির জন্য বাজার থেকে ধার করার সীমা ৩ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে।

ছবি: পিটিআই।

ছবি: পিটিআই।

চন্দ্রপ্রভ ভট্টাচার্য
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ মে ২০২০ ০২:১৮
Share: Save:

কেন্দ্রের দেওয়া ঋণের ‘সুবিধা’ রাজ্যকে কার্যত আরও বিপদে ফেলবে। রবিবার নির্মলা সীতারামনের ঘোষণার পরে এ রাজ্যের আর্থিক ভবিষ্যৎ সম্পর্কে এমনই মনে করছেন প্রশাসনিক কর্তা ও অর্থনীতিবিদদের অনেকে। তাঁদের বক্তব্য, যেখানে আয়ই অনিশ্চিত, পশ্চিমবঙ্গের মতো ঋণগ্রস্ত রাজ্যগুলিকে সেখানে আরও ঋণের জালে জড়িয়ে ফেলা ইতিবাচক অর্থনীতির লক্ষণ নয়।

রবিবার রাজ্যগুলির জন্য বাজার থেকে ধার করার সীমা ৩ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে। ‘ওয়েজ় অ্যান্ড মিনস্‌ অ্যাডভান্স’-এর সীমা ৬০ শতাংশ করা হয়েছে। ওভারড্রাফটের মেয়াদও কিছুটা বাড়ছে। প্রসঙ্গত, চলতি এই পরিস্থিতিতে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক থেকে রেপো রেট অনুযায়ী ধার করা এবং বাজার থেকে ঋণ নেওয়ার সীমা বাড়ানোর দাবি করে পশ্চিমবঙ্গও। তবে একই সঙ্গে কেন্দ্রের থেকে পাওনা অর্থ ও আর্থিক প্যাকেজ মিলিয়ে ৫৩ হাজার কোটি টাকাও চেয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

অর্থনীতিবিদদের অনেকে জানাচ্ছেন, এখন ঋণ নেওয়া ছাড়া উপায় নেই, ঠিকই। কিন্তু রাজ্যগুলির আয়ের উৎস বা ঋণ শোধ করার ক্ষমতা কতটা, সেটাও মাথায় রাখা প্রয়োজন। এমনিতেই প্রতি মাসে কমবেশি সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব ক্ষতি হচ্ছে। আগের ধার শোধ করতে বছরে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা ব্যায় করতে হয়। তার উপরে জিএসটি কার্যকর হওয়ায় রাজ্যের আয়ের উৎস সীমিত। এই পরিস্থিতিতে আবগারি কর বা পেট্রোলের উপর অতিরিক্ত সেস বসানো ছাড়া বিকল্প খোলা নেই। আবগারি কর ৩০ শতাংশ বাড়িয়েছে রাজ্য। কিন্তু তাতেও আয় ঘাটতি কতটা পূরণ হবে, তা জোর দিয়ে বলতে পারছেন না কেউই। এর উপরে বাজার থেকে আরও ঋণ নিলে রাজ্যের আয়ের বেশির ভাগটাই ধার শোধ করতে চলে যাবে। অর্থনীতিবিদ অভিরূপ সরকার বলেন, “সমস্যা বাড়বে বই কমবে না। আরও ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়বে রাজ্য।”

আরও পড়ুন: নার্সদের ফিরতে বলা হয়নি, বার্তা মণিপুরের

কেন্দ্রের নির্দেশিকা

পরিস্থিতি কখন ক্রিটিকাল
• দুশোর বেশি মোট অ্যাক্টিভ কেস হলে
• প্রতি লক্ষে ১৫ জনের বেশি অ্যাক্টিভ ধরা পড়লে
• সাত দিন অন্তর আক্রান্তের হার দ্বিগুণ হওয়া
• করোনায় মৃত্যুর হার ছয় শতাংশের বেশি হলে
• প্রতি লক্ষে ৬৫ জনের কম করোনা-পরীক্ষা হলে
• নমুনা পজ়িটিভ হওয়ার হার ছয শতাংশের বেশি হলে

কাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি
• গত ২১দিনে একটিও অ্যাক্টিভ কেস রিপোর্ট না হলে অথবা কেসের সংখ্যা শূন্য
• ২৮ দিনের বেশি সময়ে করোনা আক্রান্তের হার দ্বিগুণ হলে
• করোনা-আক্রান্তের মৃত্যু হার ১ শতাংশের কম হলে
• প্রতি লক্ষ জনসংখ্যায় পরীক্ষা দু’শো জনের বেশি
• নমুনা পজ়িটিভ হওয়ার হার ২ শতাংশের কম হলে

‘ওয়েজ় অ্যান্ড মিনস অ্যাডভান্স’-এর সীমা বাড়ানোকেও প্রকৃত রাস্তা বলে মানতে নারাজ আর্থিক বিশেষজ্ঞরা। আপৎকালীন পরিস্থিতি সামলাতে চলতি রেপো রেট অনুযায়ী রিজার্ভ ব্যাঙ্কের থেকে ‘ওয়েজ় অ্যান্ড মিনস অ্যাডভান্স’ নেয় রাজ্য। পরের মাসে শোধ করে। কিন্তু এখন ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাও তৈরি করতে হচ্ছে রাজ্যকে। অভিরূপবাবুর কথায়, “কেন্দ্রের আয়ের রাস্তা অনেক। নিজের আয় বাড়িয়ে কেন্দ্র যদি রাজ্যগুলিকে অনুদান বা আর্থিক প্যাকেজ দিত, সেটা ভাল হত।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE